পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১৬ গ্রাম বিলীন, অপেক্ষায় অর্ধশতাধিক বাড়ি
সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার মাইজবাড়ী ইউনিয়নের ঢেকুরিয়া গ্রামে নির্মাণাধীন শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ইকোপার্কে নদী তীর সংরক্ষণ কাজ শেষ না হতেই ধস নেমেছে। অপরদিকে এ উপজেলায় ব্যাপকহারে নদী ভাঙন দেখা দেয়ায় সলিডস্পার নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে ভাঙনকবলিত মানুষের মনে আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, জলবায়ুু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়ন এবং পরিবেশ বন ও জলবায়ুু মন্ত্রণালয়ের তত্ত¡াবধানে নির্মাণাধীন এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ১৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের নদী তীর সংরক্ষণের কাজ পায় মেসার্স সালেহ্ আহমেদ ট্রেডার্স। কাজের গুনগত মান ভালো না হওয়া সত্তে¡ও গত ঈদের আগেই তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় এই ধস নেমেছে বলে এলাকাবাসীর দাবি।
কাজিপুরে শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ইকোপার্ক স্থাপনের মাধ্যমে জনগণের বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু নিয়মের তোয়াক্কা না করে নিম্নমানের নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে ঢালাওভাবে। সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে এর সত্যতা মেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট ও বন কর্মকর্তা কাজিপুর উভয়ের উপস্থিতিতে চলমান কাজ দেখে। তাদের ভাষ্যানুযায়ী নদী তীর সংরক্ষণ অংশে মাটির উপর চার ইঞ্চি মোটা বালুর প্রলেপ দিয়ে জিওটেক্স বিছিয়ে তার ওপর চার ইঞ্চি ৩/৪ সাইজের ইটের খোয়ার প্রলেপের ওপর সিসি বøক সাজানোর নিয়ম।
তারা স্বীকার করেন, নিয়মানুযায়ী কাজ না করে ঠিকাদার তার ইচ্ছামত নিম্নমানের ইটের খোয়া, অপর্যাপ্ত ইট এবং বালুর প্রলেপের ওপর সিসি বøক সাজাচ্ছে। সাংবাদিক পরিচয় জানার পরে কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক কাজ বন্ধ করে দেয়। সামান্য বৃষ্টির পানিতেই ধসে পড়েছে ইকোপার্কের তীর রক্ষা বাঁধের একাংশ। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ সঠিকভাবে না হওয়ায় এলাকাটি যে কোন সময় যমুনা নদীর ভাঙনের কবলে পড়তে পারে, এমনটাই জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
অপরদিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে যমুনায় পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে শুরু হয়েছে ব্যাপক নদী ভাঙন। কাজিপুর সদর ইউনিয়নের সিংড়াবাড়ী, শুভগাছা ও পাটগ্রাম এলাকায় ভাঙনের ভয়াবহতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। পাটগ্রাম এলাকায় সলিডস্পারে ভাঙনে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকায় মানুষ তাই দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, ঈদের আগ থেকেই যমুনা নদীতে কাজিপুর পয়েন্টে হঠাৎ করেই সিংড়াবাড়ী ও পাটাগ্রাম এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা যায়। পাটাগ্রাম সলিডস্পারের ভাটিতে ও উজানে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে স্পারের দুই পাশের গোড়ার মাটি প্রায় ১০০ মিটার ধসে গেছে। সেই সাথে রয়েছে দুই পাড়ে ব্যাপক ভাঙন। ভাঙনের তীব্রতার কারণে স্পারটি যেকোন সময় নদীতে ধ্বসে যেতে পারে।
এদিকে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলী জমি, ঘর-বাড়ি ও বসতভিটা। ভাঙনের মুখে পড়া ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ভাঙন রোধে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙনরোধে তাদের অবহেলায় ইতোমধ্যে ভাঙনের মুখে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে চোরমারা, ঝুমকাইল, তারাকান্দি, বারাবারি, টেংলাহাটা, দোয়েল, বাঁশগাড়ী, পাটাগ্রাম, পূর্ব খুকশিয়া, খাস খুকশিয়া, প্রজারপাড়া, বেতগাতী, চরসিংড়াবাড়ী, ভুরুঙ্গী, কান্তনগর, শুভগাছা সহ বেশকয়েকটি গ্রাম। হুমকির মুখে আছে পাটাগ্রামের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি। স্থানীয় এলাকাবাসী হাবিবুর রহমান জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে স্পার এলাকায় ধ্বস নেমেছে। নদী ভাঙন রোধে তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। দ্রæত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে বর্ষা মৌসুমে ভাঙন আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম জানান, ভাঙন ঠেকাতে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। তবে জরুরিভাবে কিছু বালির বস্তা ফেলা হয়েছে। ভাঙনের মুখে থাকা ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।