পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজ শনিবার পা রাখলো বর্ষার বৃষ্টিধূমল চৌকাঠে। গত ক’দিনে ঘনিয়ে আসা মেঘপুঞ্জ আর বৃষ্টির মধুর বিড়ম্বনা জানান দিয়েছে বর্ষার আগমন বার্তা। প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের পিঙ্গল জটা ভেদ করে জীমূত-মন্দ্রে বর্ষাকাল নিয়ে এল আষাঢ়।
বাঙালির অতি প্রিয় এই ঋতুর আগমনে পুরো প্রকৃতি তার রূপ ও বর্ণ বদলে ফেলে। গাছপালা, তরুলতা সবকিছুই যেন গ্রীষ্মের দহন থেকে পরিতৃপ্তি পেতে স্নান করে ওঠে। পেখম মেলে নৃত্য করে ময়ূর। আষাঢ় যেন প্রকৃতির এক আশীর্বাদ।
আর আষাঢ় নিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল লিখেছেন, ‘গগনে সঘনও চমকিছে দামীনি, মেঘ ঘন রসে রিমিঝিমি বরষে, একেলা ভূবনে বসি বাতায়নে, পথ চাহি বিরহীনি আমি।’ অপরদিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই আষাঢ়কে কবিতায় তুলে ধরেছেন। ‘নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে, তিল ঠাঁই আর নাহিরে, ওগো আজ তোরা, যাসনে ঘরের বাহিরে।’
বর্ষার এ সময়ে পুষ্প-বৃক্ষে, পত্র-পল্লবে, নতুন প্রাণের সঞ্চার করে সব কিছুর মধ্যে। কদম ফুলের স্নিগ্ধ ঘ্রাণ গ্রাম কিংবা নগরবাসী সবাইকে মুগ্ধ করে এ সময়ে। ষড়ঋতুর এই দেশে আষাঢ়কে বলা হয় ঋতুর রাণী। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণেই স্বতন্ত্র। বর্ষা কাব্যময় ও প্রেমময়। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। শত ঘটনার ভিড়েও কোথায় যেন মেলে এক চিলতে বিশুদ্ধ সুখ।
আষাঢ়েই শোনা যায় রিমঝিম বৃষ্টির ছন্দ। নবধারা জলে ভিজে শীতল হওয়ার আহ্বান এখন প্রকৃতিতে। সব রুক্ষতাকে বিদায় জানিয়ে নরম কোমল হয়ে উঠবে বাংলার মাটি। নতুন প্রাণের আনন্দে অঙ্কুরিত হবে গাছপালা ও ফসলের মাঠ। মাঠে মাঠে কৃষকের মুখে ফুটবে হাসি। গ্রীষ্মের দাবদাহে মানুষ যখন পুড়ছে তখন ব্যাপক আয়োজনে বর্ষার এই ঝুম ঝুম বৃষ্টির বরণডালা মাঝে মাঝেই মনে করিয়ে দিচ্ছে বর্ষা তো এসেই গেছে।
বর্ষার সতেজ বাতাসে জুঁই, কামিনী, বেলী, রজনীগন্ধা, দোলনচাঁপা আরো কত ফুলের সুবাস। লেবু পাতার বনেও যেন অন্য আয়োজন। উপচেপড়া পদ্মপুকুর রঙিন হয়ে ফোটে বর্ষাকে পাওয়ার জন্য। কেয়ার বনেও কেতকীর মাতামাতি।
প্রতি বছরের মতো এবারও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং গানের দল আয়োজন করছে বর্ষাবরণের। দেশের নৃতাত্তি¡ক জাতিগোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে বর্ষাকে নিয়ে নানা গল্পগাথা। কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায় বর্ষাকে বরণ করে ভিন্ন মাত্রায়। প্রতিবছর তারা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মাসব্যাপী বর্ষাবরণ উৎসবের আয়োজন করে। বিভিন্ন জেলা থেকে রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকেরা এ বর্ষাবরণ উৎসবে যোগ দেয়।
তবে বর্ষা যেমন আনন্দের, বর্ষার নির্মম নৃত্য তেমনি হঠাৎ বিষাদে ভরিয়ে তোলে জনপদ। তবুও বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুনের আবাহন। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে আনে জীবনেরই বারতা। সুজলা, সুফলা, শস্য শ্যামলা বাংলা মায়ের নবজন্ম এই বর্ষাতেই। সারা বছরের খাদ্যশস্য-বীজের উন্মেষ তো ঘটবে বর্ষার ফেলে যাওয়া অফুরন্ত সম্ভাবনার পলিমাটি থেকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।