পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধানের পর এবার মৌসুমী ফল আম-লিচুর বাজারে ধস নেমেছে। গত বছরের তুলনায় এবার দিনাজপুরে লিচু অর্ধেক দামেও বিক্রি হচ্ছে না। লিচুর দামে ধস নামায় কৃষক, ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে।
ঈদের পর লিচুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পরিবর্তে আরো কমেছে। এছাড়া হঠাৎ করে আবহাওয়া উত্তপ্ত হয়ে উঠায় বাজারে লিচুর পাশাপাশি, আম, কাঠাল, তরমুজসহ অন্যান্য সকল মৌসুমী ফল একসাথে পাকতে শুরু করেছে। বাজারে ফলের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছে।
লিচুর দাম কমে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ফড়িয়ারা। কারণ, জমি ও গাছ তাদের নয়। মৌসুমের ৭ থেকে ৮ মাস আগেই তারা গাছের ফল কিনে থাকে তাই দাম না পাওয়ায় এখন তাদের আম-ছালা সব যাওয়ার অবস্থা হয়েছে।
বর্তমানে দিনাজপুরের বাজারে ভাল মানের চায়না থ্রি লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩’শ থেকে সাড়ে ৩’শ টাকা, বেদেনা ২’শ থেকে আড়াই’শ টাকা এবং মাদ্রাজি মাত্র ৮০ থেকে ১’শ টাকা শ হিসাবে। অথচ গত বছর এই লিচু বিক্রি হয়েছে ৭’শ থেকে ৮’শ টাকা শ হিসাবে। অবশ্য ঈদের আগে লিচু’র দাম একটু বেশি ছিল। কিন্তু তুলনামূলকভাবে গত বছরের তুলনায় এই দাম ছিল অর্ধেক।
গত সপ্তাহ থেকে দিনাজপুরের বাজারে আম উঠতে শুরু করেছে। ভাল মানের মিশ্রি ভোগ (ক্ষিরসা ভোগ) আম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। গত বছর এই আম বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে।
কৃষিভিক্তিক দিনাজপুর অঞ্চলে ধান এর পাশাপাশি মৌসুমী ফল কৃষকদের জন্য অর্থনীতির মূল শক্তি। গত দুই দশকে লিচুর মূল্য ভাল পাওয়ায় দিনাজপুর অঞ্চলে ধানের জমিতে হাজার হাজার লিচুর বাগান গড়ে উঠেছে। লিচু আবাদে অন্যতম সুবিধা হচ্ছে বাগান বিক্রির অর্থ একসাথে আগেই পাওয়া যায়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ফড়িয়ারা এসে বাগানগুলি কিনে নিয়ে থাকে।
শর্ত থাকে তারা গাছের পরিচর্যা করবে এবং কেবলমাত্র ফল নিবে। গাছের সংখ্যায় অনুযায়ী বাগানগুলি বিক্রি হয়ে থাকে নি¤েœ ৫০ হাজার থেকে ঊর্ধ্বে দশ লাখ পর্যন্ত। আর এই টাকা ৭ থেকে ৮ মাস আগেই কৃষকের তথা বাগান মালিকের হাতে বুঝিয়ে দিয়ে থাকে। ফলন কম হোক আর বেশী হোক গত ১০ বছরে লিচুর দাম ভাল থাকায় ফড়িয়ারা ছিল ফুরফুরে মেজাজে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিনাজপুরের লিচুর প্রধান বাজার নিউ মার্কেট ফল বাগান ঘুরে দেখা গেল পর্যাপ্ত লিচু উঠলেও ক্রেতা নাই। গতকাল এক’শ বেদেনা লিচু বিক্রি হয়েছে আড়াই’শ টাকা দরে। কম দামের কিন্তু মিষ্টি মাদ্রাজী জাতের ১’শ লিচু বিক্রি হয়েছে মাত্র ৯০ টাকায়। বাগান থেকে বিক্রির জন্য নিয়ে আসা লিচু কিনছে না স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী সাজু আহম্মেদের সাথে কথা বললে সে জানায়, সকালে লিচু কিনে দিনভর তা বিক্রি করি। কিন্তু লিচুর আমাদানির তুলনায় ক্রেতা না থাকায় লিচু বিক্রি হচ্ছে না। তাই আমরাও লিচু ক্রয় করছি না। এদিকে লিচু বিক্রি কম হওয়ার আরেকটি কারন হলো। কুরিয়ার, ট্রাক ও কোচগুলির দৌরাত্ম্য। এস এ পরিবহন এক’শ লিচু পরিবহনে দর বেঁধে দিয়েছে ১’শ টাকা। এছাড়া একটি ঝুড়ির দাম পড়ছে ৬০ থেকে ৯০ টাকা। এছাড়া স্থানীয়ভাবে ভ্যান ভাড়া ও লেবার খরচ রয়েছে। অনেকটা ঘোড়ার চেয়ে চাবুকের দাম বেশির হওয়ার মতো অবস্থা। ইচ্ছে থাকলেও ২’শ লিচু আত্মীয় বন্ধু বা পরিচিতদের কাছে পাঠানো যায় না।
উল্লেখ্য, এবার দিনাজপুর জেলায় ৫২ হেক্টরে লিচু আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। ধানের পর লিচুর বাজারে ধস নামায় ভবিষ্যতে দিনাজপুর অঞ্চলের কৃষি ক্ষেত্রে বিপর্যয় নেমে আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।