Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লোহার খনি আবিষ্কার হতে চলেছে দিনাজপুরের হিলিতে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০১৯, ১২:০৮ এএম

দিনাজপুরের হিলিতে লোহার খনি আবিষ্কারের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। খনির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ইতোমধ্যে সেখানে বাংলাদেশ ভূতাত্তি¡ক জরিপ অধিদফতরের (জিএসবি) একটি দল খননকাজ চালচ্ছে। ইতোমধ্যে সেখান থেকে লোহা ও চুম্বক জাতীয় পদার্থ পাওয়া গেছে। যা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এখন শুধু চূড়ান্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা। সব মিলিয়ে সেখানে ভালো কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছে ভূতাত্তি¡ক জরিপ অধিদফতর কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের ইশবপুর গ্রামে খনির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গত ১৯ এপ্রিল দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক ফিতা কেটে ড্রিলিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ ভূতাত্তি¡ক জরিপ অধিদফতরের (জিএসবি) ২২ সদস্যের একটি দল এই ড্রিলিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে ২০১৩ সালে হাকিমপুর উপজেলার মুর্শিদপুর গ্রামে খনিজসম্পদ অনুসন্ধানে জরিপ কার্যক্রম চালায় বাংলাদেশ ভূতাত্তি¡ক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি)। সেখানে লোহার আকরিকের সন্ধান পায় অনুসন্ধানকারী দল। যা বাংলাদেশে প্রথম ছিল। এর ওপর ভিত্তি করেই দ্বিতীয় পর্যায়ের জরিপ কার্যক্রম চালাচ্ছে অনুসন্ধানকারী দল।
ড্রিলিং কার্যক্রমে অংশ নেওয়া দলের সদস্য সূত্রে জানা গেছে, ভূপৃষ্ঠের এত কাছে লোহার খনি আবিষ্কার হলে, তা হবে দেশের মধ্যে প্রথম। এমনকি এটি বিশ্বের প্রথম ১০টি খনির মধ্যেও ভালো অবস্থানে থাকতে পারে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, লোহার খনির সম্ভাবনার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ইতিবাচক সাড়া তৈরি করেছে। এজন্য এলাকাবাসী খননকাজে সহযোগিতা করছেন। খনি পাওয়া গেলে স্থানীয় মানুষজনের সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং এলাকার উন্নয়ন হবে।
দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, আমাদের মাটির নিচে যে সম্পদটুকু রয়েছে সেটাকে যথাযথ ব্যবহারের জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে এ ধরনের অসংখ্য জরিপ করছেন। সেটা গ্যাসের জন্য করছেন, কয়লা ও পাথরের জন্য করছেন, বিভিন্ন সম্পদের জন্য ড্রিলিং করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ভূতাত্তি¡ক জরিপ অধিদফতর হিলির ইশবপুর গ্রামে ড্রিলিং কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা কিছুদিন আগে উদ্বোধন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ ও হাকিমপুর উপজেলার এক অংশ নিয়ে আমরা দীঘিপাড়া কয়লার খনি পেয়ে গেছি। আমরা আশা করছি হিলির ইশবপুরেও ভালো কিছু পেতে পারি। কয়লা বা এর চেয়ে উন্নত আরও কোনও কিছু পেতে পারি। আমরা আশা করছি, এখানে খনি হলে দেশের অগ্রগতির পাশাপাশি এলাকাবাসীর জীবনমানেরও উন্নয়ন হবে।
ভূতাত্তি¡ক জরিপ অধিদফতরের পরিচালক সাইদুল হোসেন এবং উপপরিচালক মাসুম ও মাসুদ রানা জানান, এর আগে ২০১৩ সালের দিকে হাকিমপুরের মুর্শিদপুর গ্রামে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানো হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ইশবপুরে দ্বিতীয় দফায় অনুসন্ধান কার্যক্রম চলছে। এখানে কী ধরনের ধাতব ও খনিজ পদার্থ রয়েছে সেটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তারা বলেন, আমরা সম্ভাব্য যেসব এলাকা চিহ্নিত করি, পরে সেখানে কূপ খনন করে ড্রিলিং কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি। তারই অংশ হিসেবে হিলির ইশবপুর গ্রামে ড্রিলিং কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তারা বলেন, এখানে খনি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই আমরা এবার ঠিক সেন্টারে ড্রিলিং কার্যক্রম চালাচ্ছি। যদি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক মনে না হয়, তাহলে এখানে উত্তোলন করে সুবিধা পাওয়া যাবে না। আমরা অর্থনৈতিক দিকটি বিবেচনা করছি। এখানে ধাতব খনিজ সম্পদের মজুত ও বিস্তৃতি এবং অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ড্রিলিং কার্যক্রম চলছে।
জানা গেছে, গত ১৯ এপ্রিল এই কাজ শুরু হয়েছে। তিন-চার মাস ধরে চলবে। কর্মকর্তারা জানান, ড্রিলিং কার্যক্রমে মাটির নিচ থেকে কাদা, বালি বা আদি শিলা সব নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরপর সেগুলো পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হচ্ছে। একজন কর্মকর্তা বলেন, সবকিছু মিলিয়ে এখানে এখন পর্যন্ত আমরা যা পেয়েছি তাতে করে এখানে ভালো কিছু পাওয়া যাবে বলে আমরা সংকেত পাচ্ছি।
বাংলাদেশ ভূতাত্তি¡ক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি) মহাপরিচালক জিল্লুর রহমান চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, এর আগে হাকিমপুরের মুর্শিদপুর গ্রামে ভূতাত্তি¡ক জরিপ অধিদফতর থেকে কিছু কাজ করা হয়েছিল। সেই কাজের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আবারও ড্রিলিং করার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ফলে আবারও ইশবপুর গ্রামে ড্রিলিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত আমরা ১৫০৩ ফুট নিচ পর্যন্ত ড্রিলিং কার্যক্রম চালিয়েছি ও সেই কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে। এখানে ভালো কিছু পাওয়ার আশায় এই ড্রিলিং কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ড্রিলং কার্যক্রম করে এখানে যা পেয়েছি সেগুলো আমরা ল্যাবরেটরিতে বিশ্লেষণ করছি। জয়পুরহাটে বিসিএসআইআর-এর একটি প্রতিষ্ঠান আছে, সেখানে আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে যে নমুনাগুলো পেয়েছিলাম সেগুলো টেস্ট করেছি। সেই ফলাফল আমাদের কাছে এখনও আসেনি। এর নিচে গিয়ে আমরা যা পেয়েছি, তা প্রথমদিকে যা পেয়েছিলাম তার চেয়ে আপাতদৃষ্টিতে অনেক ভালো। তারও কোনও পরীক্ষা এখনও করা হয়নি। তবে এখানে লৌহজাতীয় খনির সন্ধান মিলেছে, যার মজুত আশানুরূপ রয়েছে বলে আমরা আশাবাদী। সব মিলিয়ে আমরা ভালো কিছুর প্রত্যাশায় এখানে ড্রিলিং কার্যক্রম চালিয়েছি। সেই প্রত্যাশা আমাদের হয়তো পূরণ হতে যাচ্ছে।



 

Show all comments
  • Zahid Hassan ১৫ জুন, ২০১৯, ২:২৮ এএম says : 0
    Wow really?
    Total Reply(0) Reply
  • আদনান মুসলিম ১৫ জুন, ২০১৯, ২:২৯ এএম says : 0
    খুশি হবার কোন কারন নাই । এইগুলা বড়পুকুরিয়ার কয়লার মত বাতাসে উড়িয়ে ফেলা হবে । এই ম্যাজিক দেখানোর জন্যই দেশ স্বাধীন করা হয়েছে ।
    Total Reply(0) Reply
  • Dr-Sheikh Kawsar Uddin ১৫ জুন, ২০১৯, ২:৩০ এএম says : 0
    Alhamdulillah
    Total Reply(0) Reply
  • Shekh Sadman Mahmood ১৫ জুন, ২০১৯, ২:৩০ এএম says : 0
    গ্যাস, কয়লা,পাথর এর খনি ও বাংলাদেশ এর আছে। কিন্তুু জনগন এর লভ্যাংশ পেয়েছে কখনো
    Total Reply(0) Reply
  • Rezaur Rahman ১৫ জুন, ২০১৯, ২:৩১ এএম says : 0
    India ki amader tulte dibe?? India to kokhono amader valo chai na...
    Total Reply(0) Reply
  • Mizanur Rahaman ১৫ জুন, ২০১৯, ২:৩২ এএম says : 0
    পেলে আর লাভ কি,,,,,,,কয়লা আর পাথর যখন গায়েব হয়ে গেছে তখন লোহা ত আরো দামি....। সাধারণ জনগন সবসবয় চুরি ডাকাতির গল্পই শুনে যাবে,,,, তার চেয়ে না পাওয়াই ভালো... অন্তত চোট্টামির খবর ত আর শুনতে হবে না জনগনকে...।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ