Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টিকিট যেন সোনার হরিণ

ফিরতি পথে একই বিড়ম্বনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগ করতে বাড়ীতে আসা কর্মজীবী মানুষদের। ঈদের ছুটিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শত ঝামেলা সহ্য করে স্বজনের কাছে ফিরলেও ঈদের ছুটি শেষ হওয়ায় কর্মস্থলে ফিরতে গিয়েও একই দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে তাদেরকে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও মিলছে না বাস, ট্রেনের টিকিট। টিকিট যেন সোনার হরিণ। আমাদের দিনাজপুরের ফুলবাড়ী ও বগুড়ার আদমদীঘি সংবাদাতারা জানিয়েছেন সেখানকার দুর্ভোগের কথা।

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : গত সোমবার রাত ৯ টায় উপজেলার কাউন্টারগুলোতে গিয়ে দেখা যায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে দুরপাল্লার বাস কাউন্টার ও রেল স্টেশনে কর্মক্ষেত্রে ফেরা মানুষের ভিড়। গাড়িগুলোতেও তিল ধারণের ঠাঁই নেই ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন ও বাসের ছাদেই ঠাঁই নিয়ে ফিরতে হচ্ছে কর্মস্থলে।

বাস কাউন্টারের ম্যানেজারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা একদিনে যে পরিমাণ যাত্রী বহন করতে পারেন তার তিনগুন যাত্রী এসে ভিড় জমাচ্ছে। তবে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার কথা তারা অস্বীকার করেন। হানিফ এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার আজিজার রহমান বলেন, এই কাউন্টার থেকে প্রতিদিন ২০টি বাস ছেড়ে যায় ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিনের জন্য আরো ৫টি বাস অতিরিক্ত নামানো হয়েছে তবুও যাত্রী চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। একই অবস্থা, নাবীল, শ্যামলী, রাহবারসহ অন্যান্য বাস কাউন্টার গুলোতেও।

এদিকে ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, আগামী ১৩ তারিখ পর্যন্ত ট্রেনের টিকিট আগাম বিক্রি হয়ে গেছে। ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট মাস্টার সোহাগ বলেন, যে পরিমাণ টিকিট বরাদ্দ রয়েছে চাহিদা রয়েছে তার দ্বিগুণ। ঈদের কারণে এই চাহিদা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী টিকিট দেয়া যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য ফুলবাড়ী উপজেলাটি যোগাযোগের ক্ষেত্রে দিনাজপুর জেলার একটি অন্যতম উপজেলা। এই উপজেলা দিয়ে যাতায়াত করে ফুলবাড়ীসহ পার্শ্ববর্তী পার্বতীপুর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, চিরিরবন্দরসহ এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়া বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্র ও মধ্যপাড়া কঠিনশীলা প্রকল্পের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং উত্তারাঞ্চলের সর্ববৃহৎ বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরীর দর্শনার্থীরাও এই ফুলবাড়ী উপজেলা দিয়ে যাতায়াত করে। যার ফলে ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন ও বাস কাউন্টার গুলোতে সারা বছরেই যাত্রীদের ভিড় লেগে থাকে ঈদের ছুটিতে এই ভিড় আরো ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়।

আদমদীঘি (বগুড়া) : ঈদ করতে বাড়ীতে আসা কর্মস্থলে ফেরা ট্রেন যাত্রীদের টিকিট নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। টিকেট কালো বাজারীরা প্রকাশ্যে চড়া দামে টিকিট বিক্রি করলেও রেল বিভাগের লোকজন নীরব ভূমিকা পালন করছে।

ভুক্তভোগী যাত্রী ও রেল সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মিলন, সবুজ, বাবু, আমিনুলসহ স্থানীয় টিকিট কালোবাজারীরা দীর্ঘদিন ধরে সান্তাহার জংশন স্টেশনের টিকিট কাউন্টার নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। তারা কাউন্টারের বুকিং মাস্টারদের সাথে যোগসাজস করে ট্রেনের টিকিট ২ থেকে ৩শ’ টাকা বেশী নিয়ে প্রকাশ্যে বিক্রি করছে। সোমবার লাইনে দাড়িয়ে ও টিকিট পাননি অনেক যাত্রী। দুই এক জনকে টিকিট দেয়ার পর কাউন্টার থেকে বলা হয় টিকিট শেষ।

এ বিষয়ে দৈনিক ইনকিলাবসহ বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও বন্ধ হচ্ছে না টিকিট কালোবাজারীর চক্র। এ ব্যাপারে স্থানীয় স্টেশন মাস্টার রেজাউল ইসলাম ডালিমের সাথে কথা বলতে একধিকবার ফোন করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের লোকজন টিকিট কাউন্টারের আশেপাশে এরকম লোকজনকে খুঁজে পায় না। তবে কারোও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

অপরদিকে বাস কাউন্টারগুলোতে ও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ মূল্যে বাসের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন নজরদারী না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ