পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে গতকাল সরকারি অফিস খুলেছে। প্রথম কর্মদিবসে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সচিবালয়সহ অধিকাংশ সরকারি অফিস ও ব্যাংক পাড়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। সচিবালয় ও ব্যাংক পাড়ায় এখনো চলছে ঈদের আমেজ। মন্ত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করলেও অধিকাংশ মন্ত্রী ঈদ করেছেন নিজ এলাকায়।
সচিবালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে গতকাল সকাল থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আসতে শুরু করলেও উপস্থিতি ছিল অনেক কম। সচিবালয় ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিবসহ অনেকই কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করেছেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, সচিবালয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বানিজ্য মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে উপস্থিতি কম দেখা গেছে। কোনো কোনো কক্ষে চেয়ার টেবিল ফাঁকা। যারাও এসেছেন কাজে-কর্মে ছিল অনেকটাই ঢিলেঢালা ভাব। কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মূলত পারস্পরিক খোঁজ-খবর ও শুভেচ্ছা বিনিময়েই ব্যস্ত ছিলেন।
অন্যদিকে ছুটির পর প্রথম কর্মদিবসে বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে তেমন কর্মচাঞ্চল্য চোখে পড়েনি। মতিঝিলের ব্যাংক পাড়াও ছিল অনেকা ফাঁকা। যারা কাজে ফিরেছেন, তারা পরস্পর ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করেছেন। সচিবালয়ে যেসব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করেছেন তারা হলেন, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ভুমিমন্ত্রী, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনসহ জনপ্রশাসন সচিব সচিবালয়ে এসে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম মন্ত্রণালয়ে সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে ঈদের মতবিনিময় করেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সচিবালয়ে ঈদ পরবর্তী প্রথম কর্মদিবসে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ বিচারক, আইনজীবী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বেলা ১১টায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঈদ পরবর্তী বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করলেও অনিবার্য কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে বলে দপ্তর থেকে জানানো হয়। তবে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে সাংবাদিকদের ঈদের শুভেচ্ছা জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মন্ত্রণালয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি জানান, ঈদে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেশ ভালো ছিল এ জন্য দেশবাসী ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান। এবার ঈদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।
বেলা সাড়ে ১১টায় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি বিদ্যুৎ ও গ্যাস নিয়ে কথা বলেন। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিরও ঈঙ্গিত দেন তিনি। এদিকে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের ভিড় ছিল কিছুটা বেশি। ঈদের কারণে অনেকে অতিরিক্ত ছুটি নেয়ায় উপস্থিতি কম বলে জানান অনেকে। দুএকদিনের মধ্যেই সবাই অফিসে আসবেন বলে অনেকে জানান।চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদের সরকারি ছুটি নির্ধারিত ছিল ৪, ৫ ও ৬ জুন (মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার)। মঙ্গলবার ৪ জুন দেশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় সরকারি নির্ধারিত ছুটির ব্যত্যয় ঘটেনি। শুক্র ও শনিবার ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। এ কারণে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা টানা পাঁচ দিনের ছুটি পান। আবার কেউ কেউ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ছুটি বাড়িয়ে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা জানান, ঈদের পরে প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় গতকাল অনেকে অফিসে আসেননি। এর মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই আছেন। তবে তারা হয়তো দুই একদিনের মধ্যে যথারীতি অফিস করবেন। অনেকে আবার গ্রামের বাড়ি যাওয়ায় টিকেট সংকটে ভুগছেন। আবার অনেকে পথে আছেন, আসছেন। এ সমস্যা এক দুই দিনের বেশি থাকবে না।
সচিবালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, মন্ত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ ঢাকাতে ঈদ করলেও অধিকাংশ মন্ত্রীই ঈদ করেছেন নিজ এলাকায়। ঈদের ছুটির সঙ্গে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী অতিরিক্ত ছুটি নিয়ে গ্রামে যাওয়ায় সচিবালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে আরও দুই তিন দিন লাগবে। এর বাইরে যারা আগে ছুটি কাটিয়েছেন বা অতিরিক্ত ছুটি নেননি তাদের প্রায় সবাই অফিসের কাজে যোগ দিয়েছেন। উপস্থিতির হার কিছুটা বেশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোতে। এসব কার্যালয়ে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি দেখা গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জনগণের প্রত্যাশিত সেবা প্রদানে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার জন্য সরকারি কর্মচারিদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারীদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক। এই প্রত্যাশা পূরণে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে। শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদ, বিভিন্ন দপ্তর প্রধানগণসহ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।