Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কারাবন্দি অবস্থায় খালেদা জিয়ার তৃতীয় ঈদ

বাসার খাবার নিয়ে স্বজনদের সাক্ষাত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

কারাবন্দি অবস্থায় তৃতীয় ঈদ কাটালেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গতবছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা কাটিয়েছেন পুরনা ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে। এবার অসুস্থ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে রয়েছেন চিকিৎসাধীন। সেখানেই ঈদুল ফিতর কেটেছে ৭৪ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রীর। কারাবন্দি থাকায় বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে অন্যান্য দিনের মতোই ঈদের দিনও ছিল স্বাভাবিক একটি দিন। শুধু দুপুর বেলা পরিবারের কয়েকজন সদস্যের সাথে দেখা হয়েছে এবং বাসা থেকে রান্না করে নিয়ে যাওয়া খাওয়ার খেয়েছেন। বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ঈদের দিন গত বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ৬২১ নম্বর কক্ষে খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত করতে যান তার স্বজনরা। তাদের মধ্যে ছিলেন- খালেদা জিয়ার বোন সেলিনা ইসলাম, তার স্বামী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ভাই মরহুম সাঈদ এস্কান্দারের স্ত্রী নাসরিন এস্কান্দার, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের ছেলে অভীক এস্কান্দার, ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউকের মেয়ে তামান্না হক, খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বড় বোন শাহিনা খান জামান বিন্দু এবং খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমানের শাশুড়ি মোখরেমা রেজা।

তারা ওই দিন দুপুরে খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত করার জন্য বিএসএমএমইউ’তে যান। বেলা ১টায় তাদেরকে হাসপাতালের ছয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। কারাবিধি অনুয়ায়ি স্বজনদের সাক্ষাতের দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষ করে তাদের ঢুকতে দেওয়া হয় খালেদা জিয়ার কেবিনে। স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, স্বজনরা যখন হাসপাতালে খালেদা জিয়ার কেবিনে যান তখন তিনি বিছানায় শুয়ে ছিলেন। সেখানে তার কেবিনে একটি চেয়ার, একটি টেবিল, একটি বেড, ড্রেসিং টেবিল রয়েছে। গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম থাকেন পাশের আরেকটি কক্ষে, ফাতেমাই তার সেবাশুশ্রূষা করেন। পরিবারের সদস্যরা যখন রুমের ভেতরে প্রবেশ করেন তখন তাদের দেখে তিনি নিজেই শুয়ে থেকে উঠার চেষ্টা করছিলেন কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে পারেননি। পরে পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় তাকে উঠিয়ে বসানো হয়। স্বজনদের হাতে থাকা গোলাপ ফুলের তোড়া তারা খালেদা জিয়ার হাতে দিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। এসময় পরিবারের সকলকে কাছে পেয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের কাছ থেকে পরিবারের বাকী সদস্য এবং দলের নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবর নেন। একই সাথে তার জন্য চিন্তা না করে দেশ ও দেশের জনগণের কল্যাণে সকলকে কাজ করতে বলেন এবং তার জন্য দোয়া করতে বলেছেন।
পরে স্বজনরা বাসা থেকে নিয়ে যাওয়া রান্না করা খাবার সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে খাওয়ান। এসব খাবারের মধ্যে ছিল- পোলাও, মুরুগির রোস্ট, রেজালা, বিভিন্ন মাছের ভাজা, দুধ-সেমাই ও মিষ্টি। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানান, দুপুর ১টা থেকে বেলা পৌনে ৩টা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা খালেদা জিয়ার সাথে সময় কাটিয়ে তার স্বজনরা কেবিন বøক থেকে বেরিয়ে আসেন।

এদিকে পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বিএনপি নেতারাও ঈদের দিনে দলটির প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত করার জন্য অনুমতি চান। কিন্তু কারাকর্তৃপক্ষ দলের কোন নেতাকেই তার সাথে সাক্ষাতের অনুমতি প্রদান করেনি। সাক্ষাত চেয়ে অনুমতি না পাওয়ায় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর বিএসএমএমইউ শাখার সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম সেলিমসহ কয়েকজন চিকিৎসক ও কর্মচারী বেলা ১২টার দিকে একটি ফুলের তোড়া দিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখতে যেতে চাইলেও কারা কর্তৃপক্ষ তাদের ফিরিয়ে দেয়। মহিলা দলের ২০/৩০ নেতাকর্মীকে বৃষ্টির মধ্যে নিচে দাঁড়িয়ে ছয় তলায় তাদের নেত্রীর কেবিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেয়া যায়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। কারাবন্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় গত ১ এপ্রিল তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এখন তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।



 

Show all comments
  • Mohammed Kowaj Ali khan ৮ জুন, ২০১৯, ৬:২২ এএম says : 0
    পাপে বাপকে ও ছারে না। এই যে জুলুম, কি মনে করিতেছে? ভোট চুন্নি। যে যাহার জন্য কোয়া কুদে সেই কোয়াতে পড়ে তারই মৃত্যু হয়। হিংসার পরিনাম ধংস। যাবি কোথায় নাই খবর। খালেদা জিয়া জিন্দাবাদ। সকল ভোট চুর, ভোট চুন্নি মুরাদাবাদ। নাফাক ভারত যাক। ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply
  • আলী ৮ জুন, ২০১৯, ১:২২ পিএম says : 0
    যে দেশে আমার ভোট আমি দিতে পারি না , সে দেশে ন্যায় বিচার পাওয়া তো দুরের কথা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ