পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মেজবান নিয়ে ছড়াকার সুকুমার বড়–য়া লিখেছিলেন- ‘ওরে দেশের ভাই খুশির সীমা নাই, জলদি আইয়ু সাজিগুজি মেজবান খাইবার লাই। বদ্দা আইবো বদ্দি আইবো মামু জেডা-জেডি, ঢাকার ভিতর চাডিগাঁইয়া যত বেডাবেডি, বেয়াগগুনে খুশি হইবা ইষ্ট কুডুম পাই। জলদি আইয়ু সাজিগুজি মেজবান খাইবার লাই।’
মেজবানি খাবার নিয়ে সুকুমার বড়–য়ার ১৯৯৩ সালে লেখা এ ছড়ার প্রভাব প্রায় ২৫ বছর পর প্রত্মতত্ত¡, খাদি ও রসমালাইয়ের জেলা কুমিল্লাতে পড়েছে। চাটগাঁয়ের (চট্টগ্রাম) বিখ্যাত খাবার মেজবানি খুশবুতে মাতোয়ারা কুমিল্লা শহরবাসী। প্রাচীন ঐতিহ্যের মেজবানে এখন খাবারের মেন্যুতেও এসেছে পরিবর্তন।
রান্নাতেও রয়েছে বৈচিত্র্যতা। চিকন চালের ভাত, চনা ডাল, গরুর মেজবানি ভুনা, গরুর নেহারি, গরুর কালা ভুনা মিলিয়ে মাটির তৈজষপত্রে পরিবেশিত মেজবানি খাবারের স্বাদ এখন কুমিল্লা শহরেই পাচ্ছে ভোজনরসিকরা। বিশেষ করে এবারের রোজায় ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে মেজবানি খাবার।
কুমিল্লা শহরের পুলিশ লাইন্স এলাকায় এসএ বারি মার্কেটে বসেছে মেজবানি খাবারের জমজমাট পসরা। রোজার শুরু থেকেই বিকেল সাড়ে ৫টার মধ্যেই মেজবানি খাবারপ্রেমিদের ভিড়ে দোকানের ভেতর পরিপূর্ণ হয়ে যায়। চট্টগ্রামের মেজবানি খাবারের অবিকল স্বাদ মিলছে কুমিল্লার পুলিশ লাইন্স এলাকার নবাবী মেজবানি প্যাকেজে। খাবারের মান ও পরিবেশের তুলনায় দাম নাগালের মধ্যেই রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
কুমিল্লাতে চাটগাঁইয়া জনগোষ্ঠীর ব্যাপক বসতি রয়েছে। এখানে চট্টগ্রাম সমিতিও আছে। বৈবাহিক সম্পর্কের সূত্র ধরেই দুই জেলার মানুষের মধ্যে এক নিবিড় আত্মীয়তার সেতুবন্ধন গড়ে উঠেছে। যার ফলে চাটগাঁয়ের মেজবানি খাবারের প্রতি কুমিল্লার মানুষের স্বভাবতই আগে থেকেই আগ্রহ রয়েছে। সেই আগ্রহকে প্রাধান্য দিয়ে নগরীর স্বপ্নবাজ যুবক কামাল আহমেদ চাটগাঁয়ের মেজবানি খাবারের গুরুত্বকে ইতিহাস ঐতিহ্যের জেলা কুমিল্লায় তুলে ধরলেন তাঁর মেধা, সৃজনশীল ও শৈল্পিক ধারণায়।
কালের বিবর্তনে মেজবান বিলুপ্তির পথে হলেও মাত্র দেড় মাসের মধ্যে মেজবানি খাবারের শৈল্পিক আয়োজন কুমিল্লাবাসীর নজরে এনেছেন কামাল আহমেদ। মেজবানি খাবার প্রসঙ্গে তিনি ইনকিলাবকে জানান, কুমিল্লা জেলার সাথে চট্টগ্রামের মানুষের সম্পর্ক বেশ আত্মিক। চট্টগ্রামের হাজার বছরের ঐতিহ্যকে কুমিল্লাতে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করতেই মেজবানি খাবারকে জনপ্রিয় করে তুলতে চাইছি।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়িক মনোভাব নয়, ঐতিহ্যের জেলা কুমিল্লায় ঐতিহ্যের খাবার ঘিরে সবসময় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করুক এমন ভাবনা থেকেই মেজবানি খাবারের প্রকৃত স্বাদ তুলে দিতে চাই। কুমিল্লার মানুষ ভোজনরসিক। মেজবান চট্টগ্রামের ঐতিহ্যের একটি অংশ হলেও এ খাবারের মাধ্যমে দেশীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্য ধরে রাখা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।