Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বকেয়া প্রাপ্তির প্রহর গুনছেন পাটকল শ্রমিক

১৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ

খুলনা ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

আসন্ন ঈদুল ফিতরে পাটকল শ্রমিকের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে ১৬৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা ‘থোক বরাদ্দ’ দিয়েছে সরকার। সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ বরাদ্দ দেয়া হয়। এ টাকা শ্রমিকদের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে দেয়ার শর্তারোপ করা হয়েছে। এ অবস্থায় শ্রমিকরা এখন বকেয়া পাওয়ার প্রহর গুনছেন।
বিজেএমসির আঞ্চলিক সমন্বয়কারি মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ টাকা শ্রমিকের নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে পাঠানোর জন্য কিছুটা সময় লাগছে। খুব শিগগিরি তাদের হিসাবে টাকা চলে যাবে বলে আশা করছি।’ সাধারণ শ্রমিকরা বলছেন, ঈদের আগে আমাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করায় সরকারকে ধন্যবাদ। তবে এটা যেন শুধু সান্ত¡না না হয়।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) সূত্র জানায়, খুলনা ও যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ জুট মিল শ্রমিকের ১২ সপ্তাহের মজুরি এবং কর্মচারি ও কর্মকর্তাদের তিন থেকে চার মাসের বেতনসহ প্রায় ৭৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এর মধ্যে শুধু শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ৫৮ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারিদের গত চার মাসে ১৬ কোটি ৪৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা বকেয়া বেতন রয়েছে। বকেয়া বেতন, মজুরি ও উৎসব ভাতা দাবিতে খুলনাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছিলেন। গত ৫ মে বিকেল থেকে খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯ পাটকলে কর্মবিরতি শুরু হয়। ১৩ মে থেকে সারাদেশে ২৬ রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলে এ কর্মবিরতি ছড়িয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার এ বরাদ্দ এলো।
পাটকল শ্রমিক লীগ খুলনা ও যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন বলেন, পাটকল শ্রমিকের জন্য জরুরি বিবেচনায় ১৬৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এ খবরে আমরা খুশি। দীর্ঘদিন ধরে না খাওয়া শ্রমিকরা এ খবর শুনে অনেক খুশি হয়েছেন। তবে ৯ দফা দাবি আদায়ে শ্রমিকরা যে আন্দোলন করছিলেন তার মধ্যে কেবল একটি দাবি পূরণ হয়েছে। আমরা মজুরি কমিশনসহ বাকি ৮ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় হতাশ হয়েছি। সব শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে।
এর আগে ২১ মে ৩ শর্তে পাটকল শ্রমিকের চলমান আন্দোলন এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়। ওইদিনই সন্ধ্যায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়। খুলনা জেলা প্রশাসন, বিজেএমসি ও শ্রমিকদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে টানা ১৫ দিনের আন্দোলন স্থগিত করা হয়।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের চেয়াম্যান শাহ মোহাম্মদ নাছিম বলেন, খুব শিগগিরি যে কোনও সময় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বিজেএমসির হিসাবে শ্রমিক কর্মচারিদের এপ্রিল পর্যন্ত বকেয়া পাওনা ও বোনাসের অর্থ ছাড় দিতে পারে। বিজেএমসির অ্যাকাউন্টে ঢোকার পর সেখান থেকে ২৬ পাটকলের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে। এক্ষেত্রে জরুরিভাবে কাজ করবে বিজেএমসির হিসাবসহ সব বিভাগ। হাতে পাওয়ার পর শ্রমিক-কর্মচারির পাওনা তাদের নিজ-নিজ অ্যাকাউন্টে দেয়ার জন্য প্রস্তুত বিজেএমসি। তবে পাটকলের এ অবস্থা থেকে উত্তরণে শ্রমিক কর্মকর্তাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
স্টার জুট মিল প্রকল্প প্রধান শাওন মাহমুদ বলেন, আমার হিসাব বিভাগ প্রস্তুত রেখেছি। আমাদের হিসাবে টাকা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিক কর্মচারির পাওনা দ্রæত তাদের হিসাবে দেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ