Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মায় বাড়ছে পানি আগাম বন্যার আশঙ্কা

খুলে দেয়া হয়েছে ফারাক্কার ৪টি গেট

মুরশাদ সুবহানী ও এস এম রাজা , পাবনা থেকে | প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

দেশে শুষ্ক এখন মওসুম। কিন্তু পদ্মা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধিতে আগাম বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে এই সময় পদ্মার বুক শুষ্ক থাকে এবার তা নেই। পানি বাড়ছে দ্রুত বিপদ সীমা অতিক্রম না করলেও যে কোন সময় করতে পারে। তাহলে নিম্নাঞ্চল আগাম বন্যায় প্লাবিত হয়ে পড়বে।
পাবনা হাইড্রোলজি দপ্তর সূত্রের দায়িত্বশীল একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২৪ ঘন্টায় ১ ফুট করে পানি বাড়ছে। এই সময় এই পয়েন্টে বালুর চর থাকে এবার তা নেই। ভারতের ফারাক্কা ব্যারেজ দিয়ে পানি আসছে কি না জানতে চাইলে উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অপর এক সূত্রে, ফারাক্কা ব্যারেজ পয়েন্টে গঙ্গার পানি বাড়ায় ৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে ফলে পদ্মায় পানি ঢুকে পড়েছে। সাধারণত বর্ষা মওসুমে ফারাক্কা ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয়। দেশের উত্তরের জেলায় দেখা দেয় বন্যা আর শুষ্ক মওসুমে চুৃক্তি মাফিক পানি ছাড়া হয় না ফলে পদ্মাসহ এর প্রধান শাখা নদী গড়াই, আত্রাই এবং অন্যান্য শাখা ও উপশাখা নদী মিলিয়ে প্রায় ৫৩টি নদ-নদীর পানি শুকিয়ে যায়। বিরাজ করে মরু আবহাওয়া, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়, জীববৈচিত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
গত বছর শুকনো মওসুম শুরু প্রাক্কালেই পদ্মার বুকে বড় ছোট অসংখ্য চর জেগে উঠেছিল। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর গভীরত্ব কমে যায়। চুক্তি শর্ত অনুসারে পদ্মা নদীতে পানি পাওয়া যায়নি। যদিও ভারত কাগজে কলমে এটি স্বীকার কখনই করেনি। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ভারত গঙ্গা পানি বন্টন চুক্তি হওয়ার পর ১৯৯৭ সালের জানুয়ারী মাসে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে আসেন। প্রতি বছর একই সময় বিশষেজ্ঞ দল আসেন এবং আমাদের দেশের প্রতিনিধি দল ফারক্কা পয়েন্টে যান। গত বছর ভারতীয় কমিটির এ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন জে চন্দ্র শেখর আয়ার। আর বাংলাদেশের পক্ষে ছিল পানি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ভূ-পরিস্থ পানি জরিপ দপ্তর (সাবেক হাইড্রোলজি) উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
ভারতীয় প্রতিনিধি দল প্রতি বছর আসেন গোপনীয়তা রক্ষা করে পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে মাপ-জোক করেন। প্রতি মাসের ১০ দিন অন্তর এক সাইকেল করে ৪ সাইকেলে এই পরিমাপ করা হয়। তারা থাকেন হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পার হয়ে ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া জেলাধীন) রেস্ট হাউজে। কিন্তু চুক্তির পর থেকে কখনই প্রকাশ্যে তথ্য সাংবাদিকদের জানান না। সাধারণ মানুষ কোনো তথ্য জানতে পারেন না এবং বাস্তব চোখেও পদ্মায় পানির প্রবাহ দেখেন না। এবার পানির প্রবাহ জানা না গেলেও বাস্তব চোখে শুষ্ক মওসুমে পানি বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চলতি বছর মে মাসের মাঝামাছি সময়ে পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে যা আগাম বন্যার পদধ্বনি ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ