Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চার মাসে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ১১৮ জন

১১ দাবি আদায়ে নাগরিক নিরাপত্তা জোটের ৫ কর্মসূচি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিস্থিতি মহামারি আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে নাগরিকের নিরাপত্তায় বৃহৎ ঐক্যের ডাক দিয়েছে ‘নাগরিক নিরাপত্তা’ জোট। সংগঠনটির দেয়া তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১১৮ জন নাগরিক নিহত হয়েছে। একই সময়ে নারী ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৩৫৪টি আর শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২৩৪টি। ১৪৪ শিশু খুন হয়েছে। অন্তত ছয়জনের গুম হওয়ার অভিযোগ আছে। এ পরিস্থিতিতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শাস্তি নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাসহ ১১ দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধভাবে পাঁচটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। জোটে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), ‘নিজেরা করি’সহ কয়েকটি সংগঠনের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
গতকাল শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আইনের শাসন, জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আয়োজিত নাগরিক নিরাপত্তা জোটের সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুল ধরা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনের সংগঠন মিলে এ জোট গঠন করা হয়েছে। বাকি সংগঠনগুলোকেও এ জোটে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। রাজনৈতিক দলের ভূমিকায় শূন্যতা তৈরি হওয়ায় নাগরিকদের নিজেদেরই এগিয়ে আসতে হবে এসময় অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১১ দফা দাবি পূরণে দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও মানববন্ধন, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে সমন্বয় ও যৌথভাবে প্রতিবাদ, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা এবং তরুণ জনগোষ্ঠীকে মানবাধিকার রক্ষায় ও জঙ্গিবাদ দমনে সম্পৃক্ত করতে কর্মসূচি পালন করা হবে।
মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, সারাদেশে ভীতির সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছে। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ করতে হবে। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে উচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্তে¡ও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না এবং এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও তদারকি নেই।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানানো হয়, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা যেকোনও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠলে তা দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত এবং সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শাস্তি প্রদান করতে হবে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে আটক বা গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সম্পূর্ণভাবে মেনে চলার নির্দেশ দিতে হবে।
এছাড়া গণমাধ্যম ও নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অংশীদারদের মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনতে হবে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিজ বিশ্বাস ও রীতি চর্চার অধিকার এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দুদক ও নির্বাচন কমিশনসহ সব কমিশনকে শক্তিশালী করার দাবিও জানায় নাগরিক নিরাপত্তা জোট। সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, জিয়াউদ্দিন তারিক আলীসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু তা হচ্ছে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে মুক্তচিন্তা ও বাকস্বাধীনতা ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ