পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৫ কোটি মানুষ থাইরয়েডজনিত সমস্যায় আক্রান্ত। এর মধ্যে ৩ কোটি মানুষ জানে না তারা এ সমস্যায় আক্রান্ত। এদের বেশিরভাগই গ্রামে বসবাস করে। গতকাল বিশ্ব থাইরয়েড দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বারডেম মিলনায়তনে আয়োজিত সচেতনতামূলক সভায় এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. ফারুক পাঠানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বারডেম হাসপাতালের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. জাফর এ লতিফ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডা. মো. হাফিজুর রহমান, সহ-সভাপতি প্রফেসর ডা. এসএম আশরাফুজ্জামান, সহ-সভাপতি প্রফেসর ডা. এম এ হাসানাত, সহ-সভাপতি ডা. এম এ সামাদ, ইসি সদস্য প্রফেসর ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সম্পাদক ডা. কাজী আলী হাসান, বিজ্ঞান ও গবেষণা সম্পাদক ডা. নাজমুল কবীর কুরায়েশী, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহজাদা সেলিম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশের মানুষের শরীরে অতিরিক্ত অ্যান্টিবডির সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে; এটা ক্ষতিকর। থাইরয়েডজনিত রোগ বিশ্বের ১ নম্বর রোগ। বাংলাদেশে সম্ভাব্য থাইরয়েডে হরমোনজনিত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি। যার মধ্যে প্রায় ৩ কোটি রোগীই জানেনা তাদের এই সমস্যা রয়েছে। এই রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতাই মূখ্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, থাইরয়েড হরমোন কম বা বেশি নিঃসৃত হওয়া উভয়ই রোগের সৃষ্টি করে। তাই বিয়ের আগে বা গর্ভধারণের পূর্বে নারীদের অবশ্যই থাইরয়েড পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিৎ। এ রোগের সম্ভাবনা থাকলে যথাযথ চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করে গর্ভধারণ করা উচিৎ। অন্যথায় শিশুরাও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এ হরমোনের তারতম্যের ফলে শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি, হঠাৎ করে শরীর মোটা ও চিকন হওয়া, মাসিকের বিভিন্ন সমস্যা, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, হার্টের সমস্যা, চোখ ভয়ংকর আকারে বড় হয়ে যাওয়া, বন্ধ্যাত্ব, এমনকি ক্যান্সারের সৃষ্টি হতে পারে। সাধারনত একজন পুরুষের বিপরীতে ১০ জন নারীর থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশকে আয়রন ঘাটতির অঞ্চল হিসেবে উলেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন ঘাটতি থাকায় থাইরয়েড রোগের মত মারাত্মক সব রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। যা সম্পর্কে দেশের সাধারন জনগন জানে না।
বাংলাদেশে থাইরয়েডের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশে থায়রয়েড সমস্যার সকল ধরণকে এক সাথে হিসেব করলে তা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশের কাছাকাছি হবে। প্রাপ্ত বয়স্ক নারীদের প্রায় ২ শতাংশ এবং পুরুষদের প্রায় শুণ্য দশমিক ২ শতাংশ হাইপারথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড ও হরমোনের বৃদ্ধি জনিত সমস্যা) রোগে ভোগে। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এছাড়া প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও নারীদের মধ্যে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ হারে হাইপোথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড ও হরমোনের ঘাটতি জনিত সমস্যা) থাকতে পারে। এছাড়া ৭ ভাগ নারী ও পুরুষ সাবক্লিনিক্যাল হাইপোথায়রয়েডিজমে ভোগে। নবজাতক শিশুদেরও থাইরয়েডের হরমোন ঘাটতি জনিত সমস্যা (কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডিজম) হতে পারে। তার হার ১০ হাজার জীবিত নবজাতকের ক্ষেত্রে ২ থেকে ৮ জন। বাড়ন্ত শিশুরাও থাইরয়েডের হরমোন ঘাটতিতে ভুগতে পারে। খুলনা বিভাগে চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, ৯২৫ জন নারীর মধ্যে ২০ দশমিক ৪৩ ভাগই থাইরয়েড সমস্যায় আক্রান্ত।
প্রসঙ্গেত, থায়রয়েড গ্রন্থিটি গলার সামনের দিকে অবস্থিত প্রজাপতিসদৃশ একটি গ্রন্থি। যা ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালিকে প্যাঁচিয়ে থাকে। যদিও এটি একটি ছোট গ্রন্থি, কিন্তু এর কার্যকরীতা ব্যাপক। থায়রয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোন মানব পরিপাক প্রক্রিয়ায় অন্যতম ভ‚মিকা পালন করে। ভ্রুণ অবস্থা থেকে আমৃত্যু থাইরয়েড হরমোনের প্রয়োজন অপরিহার্য। এ হরমোনের তারতম্যে শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি, শরীর মোটা হওয়- ক্ষয় হওয়া, মাসিকের বিভিন্ন সমস্যা, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, হার্টের সমস্যা এবং চোখ ভয়ঙ্করভাবে বড় হয়ে যেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।