পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী অঞ্চলের শহুরে বাজার গুলোয় ঈদের কেনাকাটায় কিছুটা উত্তাপ থাকলেও গ্রামীন জনপদে চিত্রটা একেবারে উল্টো। কৃষি প্রধান এ অঞ্চলের ঈদ বিয়েশাদীসহ বিভিন্ন পার্বণ নির্ভর করে কৃষি অর্থনীতির ওপর। বিশেষত ধান আম আর কৃষি পণ্য বিক্রি করে চিরচেনা টানাপোড়েনের মাঝে সাধ আর সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে কেনাকাটা করে।
এবারো মাঠে মাঠে বোরোর সোনালী দোলের সাথে স্বপ্ন দেখেছিল ঈদটায় ভাল আনন্দ করবে। আর ঈদ মানেই নতুন জামা জুতো শাড়ি কাপড়। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের ধান উঠেছে। কিন্তু কাঙ্খিত দাম পায়নি। বরং লোকসানের পাল্লা ভারী হয়েছে। দেনার ফাঁসটা আরো আঁটোসাটো হয়ে বসেছে। উবে গেছে মন মত ঈদের কেনাকাটা করার। আগে ধান বেচে দল বেঁধে শহুরে বাজারে যেত পছন্দের কেনাকাটা করতে। সারাদিন এ বাজার ও বাজার ঘুরে পকেটে থাকা লিষ্ট নিয়ে কেনাকাটা করে আনন্দচিত্তে ঘরে ফেরা। এরপর পরিবারের সদস্যদের পছন্দ অপছন্দ নিয়ে খুনসুটি। এবার আর তেমনটি নেই। উপজেলার হাট বাজারই ভরসা।
ধানের পরেই আরেক কৃষি অর্থনীতি আম। এখন আমের মওসুম শুরু হয়েছে। নানা ঝড় ঝাপটা সয়ে গাছে গাছে ঝুলছে আম। এখনো বাজার জমেনি। গত তিনবার আমচাষী দামে বেশ ধরা খেয়েছে। এবার কি হয় এনিয়ে ভাবনা কম নয়। আম বিক্রি করে কেনাকাটা করবে তেমন অবস্থা এখনো শুরু হয়নি। দুজন আমচাষী বলেন, বছর করা দিন (ঈদের) বলে কথা। ধারদেনা করে হলেও বউ ছেলে মেয়েদের মুখে হাসি আনন্দ আনতে হবে। আপনাদের শহুরে লোকদের মত না হলেও চেষ্টা করব কেনাকাটা করার। মনভাল নেই রাজশাহীর পবা মোহনপুরের, সবজি চাষীদের। তাদের সাথে আলাপকালে জানান, শুরুর দিকে সব ধরনের শাকসবজির দাম একটু ভাল থাকলেও এখন একেবারে নেই। যা দাম মিলছে তাতে ক্ষেত থেকে এসব তোলার মজুরীও মিলছেনা।
শহুরে বাজারে পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙ্গে, শসা, শ্বজনেডাটা, কাঠুয়ার ডাটার দাম প্রতিকেজি কুড়ি ত্রিশ টাকার নীচে নেই। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে এসব সবজির দাম পাঁচ সাত টাকা কেজি। মধ্যস্বত্ব ভোগীরা সব খেয়ে ফেলছে। উপকন্ঠ পবা থেকে নগরীর সাহেব বাজারে দামে অনেক ফারাক দেখা যায়। সেখান থেকে পটল, ঢেঁড়স চার পাঁচ টাকাতে কিনে এনে যার কাছে যেমন ভাবে পারছে বিক্রি করছে।
নগরীর পাইকারি সবজি বাজার মাষ্টারপাড়ার ব্যবসায়ীরা জানালেন প্রচুর আমদানি রয়েছে। মাঠেও ফলন ভাল। কিন্তু এখন প্রত্যাশিত ক্রেতা নেই। কারন হিসাবে জানালেন শিক্ষা নগরী রাজশাহীতে নগরীর বাইরে থেকে লেখাপড়া করতে আসে লাখ দেড়েক শিক্ষার্থী। ঈদের ছুটিতে তারা ফিরেছে নিজ গ্রামে স্বজনদের কাছে। ফলে এসবের চাহিদা কমে গেছে। ডিম মুরগীর বাজারে এর প্রভাব খানিকটা পড়েছে। ধান আম শাকসবজির সবটাতে লোকসান। সব মিলিয়ে কৃষি প্রধান এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে বেশ খানিকটা বিরূপ সময় চলছে। যার প্রভাব পড়েছে ঈদ বাজারেও।
রাজশাহীর প্রধান বাজার সাহেব বাজার, নিউমার্কেট, আর ডি মার্কেট সিল্কপাড়া গনকপাড়াসহ বেশকটি শপিং সেন্টার পর্যবেক্ষন করে দেখা যায় এসব স্থানে ক্রেতাদের আগমন রয়েছে। ক্রেতারা আসছেন, দেখছেন, এ বাজার ও বাজার ঘুরছেন। পছন্দ আর দামে বনিবনা হলে কিনছেন। বড় কাপড়ের বাজার সাহেব বাজারের এসবি ক্লথের বিক্রয়কর্মী রাজীব জানায়, ভীড় বেশি মনে হলেও আসলে সবাই ক্রেতা নয়।
একজনের সাথে আসছে চার পাঁচজন করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছুটি হয়ে যাওয়ায় বছরজুড়ে কেনাকাটা যারা করে তারা নিজ ঘরে ফিরেছে। এখন সব নগরীর মানুষ। গাঁয়ের মানুষ কম দেখা যাচ্ছে। ব্যবসা এখনো তেমন জমে ওঠেনি। প্রত্যাশা সামনের ক’টা দিন বেচা বিক্রি ভাল হবে। তার মতে এখন কেনাকাটা করছে চাকরিজীবী আর ব্যবসায়ীরা। বেতন বোনাসের টাকা নিয়ে বাজারে নেমেছে। বড় ব্রান্ডের শপিংমলগুলোয় দেখা যায় সেখানে বিত্তবানদের বিলাসী কেনাকাটা। অন্যদিকে ফুটপাতে মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্তদের দামাদামির কেনাকাটা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।