পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলছে। পাড়া-মহল্লাকেন্দ্রিক ঝগড়ায়ও ব্যবহার হচ্ছে অস্ত্র। পুলিশ, ডিবি ও র্যাব মামলার তদন্ত, নিয়মিত টহল এবং জঙ্গি দমনে ব্যস্ত সময় পার করায় সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা।
প্রায় প্রতিদিনই খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে অস্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। এক সময় ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীদের পছন্দের তালিকায় একে-৪৭, এম-১৬ রাইফেল, সেকেন্দার বন্দুক থাকলেও এখন তারা ঝুঁকছে ক্ষুদ্র অস্ত্রের দিকে। পুলিশ, র্যাব ও ডিবির অভিযানে প্রায়ই আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি ধরা পড়লেও এর ব্যবহার যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ ধরনের কোড ও সাঙ্কেতিক ভাষা ব্যবহার করে হাতবদল হচ্ছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরকের। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রুপকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্র-বিস্ফোরকের চালান ঠেকাতে তৎপর রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রিভলবারকে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো চাকতি এবং পিস্তলকে সাতের মাল ও পাঁচের মাল বলে অভিহিত করছে। সেভেন পয়েন্ট সিক্স-ফাইভ পিস্তলের যেটিতে সাতটি গুলি লোড করা যায়, সেটিকে সাতের মাল এবং যেটিতে পাঁচটি গুলি লোড করা যায় সেটিকে পাঁচের মাল বলে নিজেদের মধ্যে দেনদরবার করছে।
একাধিক সূত্র বলেছে, ইউএসএ, জার্মানি, ভারত, ইতালি, চেকোশ্লোভিয়া, ব্রাজিল, আর্মেনিয়াসহ উন্নত দেশগুলোতে তৈরি অত্যাধুনিক ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্র এখন অপরাধ জগতে পরিচিত নাম। প্রতিবছর নানা মাধ্যমে সীমান্তের চোরাই পথে অবৈধভাবে দেশে হাজার কোটি টাকার এ ধরনের ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্র প্রবেশ করছে। হাত বদল হয়ে অপরাধ জগতের শীর্ষ ও দুর্ধষ সন্ত্রাসীদের হাতে চলে যাচ্ছে এসব আগ্নেয়াস্ত্র। এ ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির মতো গুরুতর অপরাধ সংঘটিত করে চলছে অপরাধীরা। অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের বেশিরভাগ আসছে সীমান্ত দিয়ে, আর তা ছোট-বড় সব সন্ত্রাসীদের হাতে সহজেই চলে যাচ্ছে।
জানা যায়, কুমিল্লা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের একটি দল গত ২৪ এপ্রিল রাতে শহরতলির চম্পকনগর-সাতোরা এলাকার স্নেহনীড় হাউজিংয়ের ফ্রেন্ডস টাওয়ারের সপ্তমতলার ডি ইউনিটের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়। ডিবি জানায়, ওই ফ্ল্যাটে অস্ত্র কেনা-বেচা হয়ে থাকে- এমন তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হয়। এসময় ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে তারা বিদেশি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিদেশি দুটি শর্টগান, একটি বিদেশি ৭.৬৫ বোরের পিস্তল, ১০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৯০ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ, পিস্তলের দুটি ম্যাগজিন। এসব অস্ত্র ওই ফ্ল্যাটের ড্রইংরুমের একটি বক্স খাটের ভেতরে প্লাস্টিকের বড় ব্যাগে পলিথিন দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ছিল। চারটি কার্টন ভর্তি অবস্থায় পাওয়া যায় গুলি ও কার্তুজ। পরদিন ডিবির এসআই ইকতিয়ারউদ্দিন বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হচ্ছে- ওই ফ্ল্যাটের মালিক ও জেলার বুড়িচং উপজেলা সদরের ব্যাপারি বাড়ির নিয়ত আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম ওরফে রমজান এবং তার বন্ধু ওমর ফারুক ও সাইফুল। কিন্তু পুলিশ এখনো তাদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
তবে জেলা ডিবির ওসি নাসিরউদ্দিন মৃধা জানান, আসামিরা আটক হলে অবৈধ অস্ত্রের চালান ও ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
এদিকে র্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পের একটি দল গত ২৮ এপ্রিল ভোররাতে জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বেরলা গ্রামের আবদুল কাদেরের বসতঘর থেকে নতুন একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন ও পাঁচ রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করে। এসময় আবদুল কাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। জেলা ও ডিবি পুলিশের অভিযানে গত ২৮ মার্চ একটি শর্টগান ও সাতটি কার্তুজ, ৩০ মার্চ একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন ও দুই রাউন্ড গুলি, ৪ এপ্রিল একটি পাইপগান এবং ২১ এপ্রিল দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এসব অভিযানে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, ছোট অস্ত্রের ক্রেতা বেশি। পেশাদার ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, খুনি ছাড়াও রাজনৈতিক দলের অনেক অসাধু নেতা এসব অস্ত্র সংগ্রহ করে থাকেন। অনেকেই আধিপত্য বিস্তারে এসব ছোট অস্ত্র রাখছে। এসব অবৈধ ছোট অস্ত্রের কিছু উদ্ধার হলেও বেশির ভাগই চলে যাচ্ছে নানা উপায়ে অপরাধীদের হাতে।
র্যাব-১১ কুমিল্লা ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার এএসপি প্রণব কুমার বলেন, বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার এবং বিশেষ করে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, অবৈধ অস্ত্রধারী এবং অস্ত্র কেনা-বেচার উৎসসহ সংঘবদ্ধ চক্রকে গ্রেফতারে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। এছাড়া অবৈধ ছোট অস্ত্রের সরবরাহ এবং ব্যবহারকারীদের ধরতে সীমান্তবর্তী এ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযানের সক্রিয় চিন্তাও রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।