Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুঃসহ গরমে কাহিল মানুষ

সাময়িক বৃষ্টিপাত ছাড়া আবহাওয়ায় উন্নতির আভাস নেই

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

দুঃসহ গরমে সর্বত্র কাহিল হয়ে পড়েছে মানুষজন। প্রায় দেড় মাস ধরে চলছে তাপদাহ। মাঝেমধ্যে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হলেও খরতপ্ত আবহাওয়ার সার্বিক উন্নতি নেই। এতে করে সমগ্র দেশে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দুর্বিষহ অবস্থায় রয়েছে। মাহে রমজানে রোজাদারদের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। অসহনীয় গরমের সাথে বিদ্যুৎবিভ্রাট ও লোডশেডিং, পানির সঙ্কটে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানুষের কষ্ট-ভোগান্তি সীমাহীন। গতকালও (মঙ্গলবার) দিনভর তীব্র রোদের তেজে বাতাসে যেন লু-হাওয়া বয়ে যায়।
অব্যাহত তাপদাহের কারণে রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। ভিড় বেড়েছে হাসপাতাল, ক্লিনিক, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ডাক্তারের চেম্বারে। গরমে তৃষ্ণা মেটাতে রাস্তাঘাটের ধারে হরদম বিক্রি হওয়া বরফ ও রঙ মেশানো শরবৎ, ফলের রস পান করে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কেননা এসব পানীয় দূষিত এবং অস্বাস্থ্যকর। এদিকে আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস মতে, আজ (বুধবার) দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত ও সাময়িক বৃষ্টিপাত হতে পারে। এছাড়া আবহাওয়ায় সার্বিক উন্নতির আভাস আপাতত নেই।
তীব্র গা-জ্বলা গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা বেড়েই চলেছে। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি মিলছে না। অবিরাম দেড় মাস চলা গরমের দাপটে সারাদেশে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থমকে গেছে। দিনভর তীর্যক সূর্যের দহনে কড়া রোদের আগুনে শরীর যেন ঝলসে যাচ্ছে। গতকাল রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রার পারদ ৩৬ ডিগ্রির ঘরে থাকলেও বাতাসে অত্যধিক হারে জলীয়বাষ্পের উপস্থিতির কারণে বাস্তবে তাপের দহন ৪২ থেকে ৪৪ ডিগ্রি।
ভ্যাপসা গরমের মধ্যে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’র মতো ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট-লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা এবং পানির সঙ্কটে শহর-নগর, গ্রামে-গঞ্জে মানুষের ত্রাহি অবস্থা। পুকুর দীঘি কুয়া নদ-নদী ঝরণা আগেই শুকিয়ে গেছে। অনেক এলাকায় নলকুপে পানি উঠছে না। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। মাঝেমধ্যে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার সাথে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে কোথাও কোথাও। কিন্তু এতে মাটিও ভিজছে না। বরং খরতাপ যেন উসকে উঠছে। সবখানে স্বস্তির বৃষ্টির আকুতি নিয়ে সবার দৃষ্টি আকাশপানে। মেঘ বৃষ্টি চাই। রহমতের বৃষ্টির জন্য আল্লাহর দরবারে বিশেষ দোয়া মোনাজাত হচ্ছে দেশের সর্বত্র মসজিদে মসজিদে।
এদিকে আবহাওয়া বিভাগ আগামী তিন দিনের পূর্বাভাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা ক্রমশ বৃদ্ধির সুখবর দিয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙ্গামাটি অঞ্চলসহ রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
চলবে তাপপ্রবাহ
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৬.২ এবং সর্বনিম্ন ২৭.১ ডিগ্রি সে.। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে ডিমলায় ৩৩, তেঁতুলিয়ায় ২৫, সিলেটে ১২, নেত্রকোনায় ১৪, টাঙ্গাইলে ৭ মি.মি. এবং ঢাকায় ছিটেফোঁটা বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া বিভাগ জানায়, লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আজ (বুধবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। রাজশাহী, পাবনা, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী এবং পটুয়াখালী অঞ্চলসহ খুলনা ও ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর পরের ৫ দিনে আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তণ হতে পারে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ