Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতীয় চালে সরকারি গোডাউন ভরার আশঙ্কা

মাহফুজুল হক আনার | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ধান আছে দাম নেই। দাম নিয়ে কৃষকদের মধ্যে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে। অথচ এই ধান থেকেই হয় চাল। ধানের মূল্যের উপর নির্ভর করে চালের মূল্য। কিন্তু বর্তমানে বাজারে চালের ধানের মূল্যের সাথে চালের মূল্য তারতম্য অনেক। বর্তমানে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে সেই হিসাবে প্রতি কেজি চালের মূল্য হওয়া উচিত ২১ থেকে ২২ টাকা কেজি। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ টাকা।
ধানের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে কৃষকদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাও পথে নেমে এসেছে। প্রতিবাদী হয়ে কৃষকরা নিজের উৎপাদিত ধানে আগুন দিয়েছে। সরকারও পড়েছে কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায়। কৃষিমন্ত্রী বলেছেন কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনে বিদেশে চাল রফতানি করা হবে। তিনি বলেছেন প্রয়োজনে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মত বেশী দামে চাল কিনে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে কম দামে চাল রফতানি করা হবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটছে উল্টোটা-ভারত থেকে দেদারছে চাল আসছে। ভারত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মণ চাল ঢুকছে বাংলাদেশে। সরকারী ক্রয় অভিযানে ধানের তুলনায় চাল ক্রয় করা হবে অনেক বেশী। ফলে বাংলাদেশী নয় সরকারী গোডাউনগুলি ভারতীয় চালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দিনাজপুর হিলি স্থল বন্দর দিয়ে গত এপ্রিল মাসে চাল আমদানী হয়েছে ৯ হাজার মেট্রিক টনের বেশী চাল। মধ্য মে পর্যন্ত আরো আমদানী হয়েছে সোয়া ৫ হাজার মেট্রিক টন চাল। বন্দরের একটি সূত্র মতে প্রতিদিন গড়ে ৩শ’ ট্রাক চাল কেবলমাত্র হিলি বন্দর দিয়েই প্রবেশ করছে। ফলে বাংলাদেশে সদ্য উঠা ধান ক্রয় করার প্রয়োজন বোধ করছে না বড় বড় মিলার তথা সরকারী গোডাউনে চাল সরবরাহকারী অটো মিলগুলির মালিকেরা। বাজারও সয়লাব হয়ে আছে ভারতীয় চাল দিয়ে। এ অবস্থায় বাজারে ধানের ক্রেতা না থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ধান বিক্রি করা কৃষকের জন্য অত্যন্ত জরুরী। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে মধ্য স্বত্তভোগীরা। কৃষকের কাছ থেকে পানির দামে দাম কিনে গোডাউনজাত করছে। মিলারদের মতে বর্তমান বাজারে ধানের দাম কম। কিন্তু কিছুদিন আগেও ধানের দাম চড়া ছিল। সে সময়ে কেনা চাল তারা বাজারে বিক্রি করতে পারছে না। যার অন্যতম কারণ হচ্ছে ভারতীয় চাল। তাদের মতে ব্যাংকগুলিও টাকা ছাড় করছে না। তাদের যা পুঁজি ছিল তা আগে ক্রয় করা ধানে আটকে গেছে। ফলে এখন বাজার থেকে ধান ক্রয় করার মত প্রয়োজনীয় অর্থ নেই তাদের হাতে।
হিলি স্থল বন্দর দিয়ে চাল আমদানীকারকদের একটি সূত্র বলছে ভারত থেকে আমদানী করা চাল বাংলাদেশে এসে পড়ছে ২৬ থেকে ২৮ টাকা। আর সরকার চাল ক্রয় করছে ৩৬ টাকা দরে। এ অবস্থায় মিল চালিয়ে লেবার খাটিয়ে পুজি খাটিয়ে ব্যাংকের সুদ গুনে দেশীয় ধান ক্রয় করে চাল বানানোর মত অবস্থায় নেই মিলাররা। এ অবস্থায় কৃষক আর মিলার দেখে লাভ নেই কৃষক বাঁচাতে হলে বাজার থেকে চাল নয় বেশী করে ধান ক্রয় করা না হলে ধানের বাজার স্থিতিশীল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এক্ষেত্রে কার্ডধারী কৃষক নয় কাঙ্খিত মানের ধান যে দিবে তার কাছ থেকেই ক্রয় করতে হবে সরকারকে। এক্ষেত্রে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের গ্রোথ সেন্টারগুলোকে কাজে লাগালে ধানের বাজার তড়িৎগতিতে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ