Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোজার ফিতরা আদায় করা

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্্শী | প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে ‘ফিতরা’ বলা হয় এমন পরিমাণ অর্থ বা সম্পদকে, যারা জাকাত গ্রহণ করতে পারে এমন গরিব ব্যক্তিকে রমজান মাস পরিসমাপ্তির পর বিশেষ পদ্ধতিতে প্রদান করা হয়। ‘ফিতরা’ বুঝাতে হাদিস শরীফে ‘সদকাতুল ফিতর’ এবং ‘জাকাতুল ফিতর’ উভয় শব্দই ব্যবহৃত হয়েছে। উভয় শব্দের অর্থ ও মর্ম একই অর্থাৎ রোজা খোলার জাকাত বা সদকাহ। হিজরতের দ্বিতীয় সালে ঈদুল ফিতরের দুই দিন আগে মুসলিম সমাজে এই ফিতরা সর্বপ্রথম বাধ্যতামূলকভাবে ধার্য করা হয় ও এর প্রচলন শুরু হয়।
বস্তুত ফিতরা আদায় করার কর্তব্য সম্পর্কে ইসলামী শরীয়তে পূর্ণ ঐকমত্য বা ইজমা রয়েছে। এতে কারো কোনো দ্বিমত নেই। ইমাম শাফেয়ি (রহ.) ও ইমাম মালেক (রহ.)-এর মাজহাব অনুসারে সদকায়ে ফিতর আদায় করা সুন্নত, সুন্নতে মুয়াক্কাদা। ওয়াজিব বা ফরজ নয়। তাদের মতে, হাদিসের শব্দ ফরজ করে দিয়েছেন কথাটির অর্থ হলো, নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন কিংবা ধার্য করে দিয়েছেন। ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মাজহাবে এটি ফরজ নয় এবং ফরজ বলতে যা বুঝায় তাও নয়; বরং ওয়াজিব। হাদিসের শব্দ ফরজ করে দিয়েছেন অর্থ ওয়াজিব করে দিয়েছেন। হানাফী মাজহাবে ‘ফরজ’ এবং ‘ওয়াজিব’ শব্দদ্বয়ের মধ্যে সামান্য পার্থক্য রয়েছে।
সদকায়ে ফিত্্র মুসলমান মাত্রেরই আদায় করা কর্তব্য। পুরুষদের ব্যাপারটি অত্যন্ত স্পষ্ট। আর মেয়েলোক বিবাহিতা হলে স্বামীই তার সদকায়ে ফিতর আদায় করবে। আর অবিবাহিত হলে তার নিজের সামর্থ্য থাকলে সে নিজেই তা আদায় করবে। অন্যথায় তার এবং অন্য নাবালেগদের, বালেগ পোষ্য ছেলেদের সদকায়ে ফিতর আদায় করবে তাদের পিতা। পিতার অবর্তমানে তাদের অলি বা অভিভাবক সদকায়ে ফিতর আদায় করবে। এ ব্যাপারে ঐকমত্য এই যে, যেসব ব্যক্তির পক্ষে জাকাত গ্রহণ করা যায়েজ ও হালাল, তারা স্বেচ্ছামূলকভাবে নিজেদের সদকায়ে ফিতর আদায় করলে অধিক পুণ্যের অধিকারী হবে। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ফকির গরিবের পক্ষেও ফিতরা দেয়া বিধেয়। সে যা দেবে আল্লাহ পাক তাকে তার দেয়া পরিমাণের বেশি ফিরিয়ে দেবেন।
সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত আছে। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে এই যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এক ভাষণে বলেছেন : “তোমরা প্রত্যেক স্বাধীন, ক্রীতদাস বা গৃহভৃত্য ছোট কিংবা বড়-এর তরফ হতে অর্ধ ‘সা’ গম কিংবা এক ‘সা’ যব কিংবা এক ‘সা’ খেজুর ফিতরা বাবদ আদায় করবে।” ‘সা’ একটা বিশেষ পরিমাণের ওজন। এক ‘সা’ হিজাজি ওজনে প্রায় পৌনে তিন সের এবং ইরাকি ওজনে প্রায় চার সের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ