Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

পোড়া তেলে মচমচে জিলাপি কি দারুণ মজা

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল : | প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

পোড়া তেলে ইফতারি তৈরি যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। খরচ বাঁচাতে কেউ কেউ ব্যবহার করছেন পাম অয়েল। খাবারের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে চলছে রাসায়নিক রঙের ব্যবহার। মানবদেহের জন্য প্রতিটি জিনিসই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও কুমিল্লায় এভাবেই চলছে ইফতারসামগ্রী তৈরি।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, ইফতারিতে রং, মবিল, পোড়া তেল ব্যবহৃত খাবার খেলে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর, তা খেলে পেটের পীড়া, কিডনি ও যকৃত সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। রমজানে কুমিল্লার ফুটপাত থেকে শুরু করে যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো ইফতারির দোকান গড়ে ওঠে। উন্মুক্ত স্থানে ধুলাবালির মধ্যে সেসব অস্থায়ী দোকানে তৈরি হচ্ছে বাহারি খাবার। তাতে ব্যবহৃত হচ্ছে রং-মবিলের মতো ক্ষতিকারক উপাদান। স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি কুমিল্লার কান্দিরপাড়, চকবাজার, রাজগঞ্জবাজার, রানীরবাজার, পুলিশ লাইন রোড, আদালতপাড়া, রেইসকোর্স, ঝাউতলা, শাসনগাছাসহ অন্যান্য এলাকায় ছোট-বড় অসংখ্য ইফতারির দোকান বসেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব দোকানের বেশির ভাগই রাস্তার পাশে কিংবা ফুটপাতের ওপর। খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনার পাশেই তৈরি হচ্ছে নানান পদ। কযয়কটি দোকানে পুরোনো কালো তেল ও ঘোলা তেলে ছোলা, পেঁয়াজু, বড়া ও বেগুনি ভাজতে দেখা গেছে। ইফতারি তৈরির কয়েকজন কারিগর জানান, বেসনের সঙ্গে রং মেশালে খাবার দেখতে উজ্জ্বল হয়। পুরোনো তেল ব্যবহৃত হচ্ছে সব দোকানেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর বাহিরে বিভিন্ন এলাকায় পোড়া মবিল পরিশোধনের কারখানা গড়ে উঠেছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকার ড্রাইভারদের কাছ থেকে পুরনো মবিল কিনে এনে একটি চক্র এ কারখানায় পরিশোধন করে। শুধু রমজান মাস নয়, সারাবছর ওই কারখানায় গাড়ির পোড়া মবিল বেচাকেনা হয়। বিশেষ পদ্ধতিতে ময়লা মবিল ছেঁকে পরিশোধন করে বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁর জন্য ‘খাবার মবিল’ নামে বিক্রি হয়। বর্তমানে তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে তেলের বদলে পরিশোধিত মবিলে জিলাপি ভাজা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দোকানিরা জানিয়েছেন, খাবার মবিলে ভাজা জিলাপি বেশ মচমচে হয়। এছাড়া ছোলা, ঘুগনি, আলুচপ, পেঁয়াজু, বেগুনি এ মবিলে ভাজা হয়। সাধারণ মানুষ এ সম্পর্কে না জানায় তা কিনে খায়। পেঁয়াজু, আলুরচপ ও বেগুনিতে ব্যবহৃত হচ্ছে ডাইং কালার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব সামগ্রীতে ফুড কালার ব্যবহার করলেও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কিছুটা কম থাকত। কিন্তু কাপড় রঙ করায় ব্যবহৃত ডাইং কালার ব্যবহৃত হওয়ায় জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় বিশেষত বাস, রেলস্টেশনে বড় বড় ডেকচির পানিতে হলুদ ও লাল রঙয়ের বরফ মিশ্রিত শরবত বিক্রি হয়। প্রচন্ড তাপদাহে ক্লান্ত হয়ে মানুষ এ শরবত পান করছেন। এইসব খাবার খেয়ে মানুষ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ