পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মার্ক জাকারবার্গকে আমি সর্বশেষ দেখি ২০১৭ সালের গ্রীষ্মে, ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি ঘটার আগে। ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কে ফেসবুকের অফিসে আমাদের দেখা হয়েছিণ। সেখান থেকে আমরা তার শান্ত, ছায়াঘেরা বাড়িতে যাই। আমরা এক বা দু’ঘন্টা এক সাথে কাটাই। এ সময় তার শিশু কন্যাটি চারপাশে ঘুরঘুর করছিল। আমরা প্রধানত রাজনীতি নিয়েই কথা বলছিলাম, ফেসবুক নিয়েও অল্প কিছু কথা হয়েছিল। আমাদের পরিবার নিয়েও সামান্য আলাপ করেছিলাম আমরা। ছায়া দীর্ঘতর হওয়ার পর আমাকে চলে আসতে হয়। তার স্ত্রী প্রিসিলাকে আলিঙ্গন করলাম। বিদায়, বললাম মার্ককে।
তখন থেকে মার্কের ব্যক্তিগত খ্যাতি ও ফেসবুকের খ্যাতির অবনতি শুরু হয়েছে। কোম্পানির ভুলগুলো যেমন-পঙ্কিল প্রাইভেসি প্র্যাকটিস যা কোটি কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য একটি রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাছে তুলে দেয়া, রুশ চরদের প্রতি ধীর জবাব, সহিংস বাগাড়ম্বর ও ভুয়া খবর এবং আমাদের সময় ও মনোযোগ আকৃষ্ট করার সীমাহীন প্রয়াস সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছে। আজ থেকে ১৫ বর্ছ আগে হার্ভার্ডে থাকার সময় আমি ছিলাম ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। এর পর এক দশক আমি এ কোম্পানিতে কাজ করি না। কিন্তু এর প্রতি রাগ ও দায়িত্ববোধের অনুভ‚তি রয়েছে।
মার্ক এখনো সেই মানুষই রয়ে গেছেন যাকে সেই সফোমোরে থাকার বছরে দেখতাম আমাদের ডরমিটরির কমনরুম ত্যাগ করার সময় তার বাবা-মাকে আলিঙ্গন করতে। সে সেই রকমই রয়ে গেছে যে পরীক্ষার পড়া পড়তে গড়িমসি করত, একটি পার্টিতে বাথরুমের জন্য লাইন বেঁধে থাকার সময় যে তার ভবিষ্যত স্ত্রীর প্রেমে পড়েছিল, একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টের মেঝেতে জাজিমে যে বছরের পর বছর ঘুমিয়েছে পরে অনেক কিছু পাবার আগে। অন্য কথায়, সে মানুষ। কিন্তু তার অতিরিক্ত মানবিকতা তার সীমাহীন ক্ষমতাকে সমস্যা সংকুল করে তুলেছে।
মার্কের বিস্ময়কর প্রভাব প্রাইভেট সেক্টর বা সরকারে থাকা যে কোনো ব্যক্তির চেয়ে অনেক বেশি। সে যোগাযোগের তিনটি মূল প্ল্যাটফর্ম নিয়ন্ত্রণ করে-ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ যা শত শত কোটি লোক ব্যবহার করে। ফেসবুক বোর্ড পরিদর্শকের চাইতে অনেক বেশি পরিমাণে একটি পরামর্শক কমিটি হিসেবে কাজ করে, কারণ মার্ক ভোটিং শেয়ারের ৬০ শতাংশেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করে। লোকজন তাদের নিউজফিডগুলোতে কী দেখে, কী ধরনের প্রাইভেসি সেটিং তারা ব্যবহার করে এবং কী মেসেজ তারা পায় এসব নির্ধারণে ফেসবুকের অ্যালগরিদম কিভাবে কনফিগার করতে হয় সে ব্যাপারে মার্ক একাই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সে কিভাবে নিছক আপত্তিকর হওয়া থেকে সহিংস ও উত্তেজনাকর বক্তব্য চিহ্নিত করতে হবে তার জন্য আইন তৈরি করে। সে কোনো প্রতিযোগীকে আয়ত্ত করে, ব্লক করে বা কপি করে তাকে থামিয়ে দেয়ার কাজ করতে পারে।
মার্ক একজন ভালো, দয়ালু মানুষ। কিন্তু আমি ক্লিকের জন্য তার নিরাপত্তা ও শিষ্টাচার বিসর্জন দিয়ে ব্যবসা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলার লক্ষ্যের প্রতি রাগ প্রদর্শন করছি। কীভাবে নিউজফিড অ্যালগরিদম আমাদের সংস্কৃতি পাল্টে দিতে, নির্বাচন প্রভাবিত করতে ও জাতীয়তাবাদী নেতাদের ক্ষমতায়ন করতে পারে সে ব্যাপারে বেশি চিন্তা ভাবনা না করার কারণে আমি ও ফেসবুকের প্রথম দিকের টিম হতাশ। আমি শঙ্কিত যে মার্ক এমন একটা টিম দ্বারা বেষ্টিত হয়ে আছে যারা তাকে চ্যালেঞ্জ করার পরিবর্তে তার বিশ্বাসকে জোরালো ভাবে সমর্থন করে।
সরকারের উচিত মার্ককে অবশ্যই জবাবদিহিতায় আনা। অনেক দীর্ঘ সময় ধরে আইন প্রণেতারা ফেসবুকের বিস্ফোরক প্রবৃদ্ধিতে বিস্মিত এবং তারা আমেরিাকানরা যে সুরক্ষিত ও বাজার প্রতিযোগিতামূলক তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছেন। এখন যে কোনোদিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন কোম্পানির উপর ৫শ’ কোটি ডলারের জরিমানা আরোপ করবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। তবে তা যথেষ্ট নয়, কিংবা যথেষ্ট নয় এক ধরনের প্রাইভেসি জার নিয়োগের ফেসবুকের প্রস্তাব। গত বছর কংগ্রেসে মার্কের সাক্ষ্য দানের পর তার ভুলগুলোর বিষয়ে তাকে প্রকৃতই সচেতন হওয়ার আহবান জানানো উচিত ছিল। তার বদলে যে সব আইন প্রণেতা তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, তারা অতি বৃদ্ধ ও প্রযুক্তি কর্ম বিষয়ে অনবগত বলে উপহাসের শিকার হলেন। মার্ক আমেরিকানদের কাছ থেকে এ রকম মনোভাবই আশা করেছিলেন, কারণ তার অর্থ অতি সমান্যই পরিবর্তন। (অসমাপ্ত)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।