Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে পানির সঙ্কট

সায়ীদ আবদুল মালিক : | প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

রমজানের শুরুতেই ওয়াসার সুপেয় পানি সঙ্কটে পড়েছে রাজধানীবাসী। গ্রীষ্মের দাবদাহ ও রমজানের কারণে পানির অতিরিক্ত চাহিদা বেড়েছে। সে চাহিদার আলোকে পানির সরবরাহ বৃদ্ধির পরিবর্তে কমেছে। অন্যদিকে ওয়াসার লাইনে যে পানি আসে তাও দুর্গন্ধের জন্য ব্যবহার করা যাচ্ছে না। অনেক এলাকায় দৈনন্দিনের রান্না ও গোসলের কাজ অনেকটাই বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতে অবস্থা হয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় মসজিদেও পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। মুসল্লিরা অজু করতে গিয়ে পড়ছে বিপাকে। রাজধানীর জুরাইন, পোস্তগোলা, যাত্রাবাড়ি, মোহাম্মদপুর ও মিরপুরের মহল্লায় মহল্লায় পানির জন্য হাহাকার চলছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও পাম্প ঘেরাও করছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওয়াসার একশ্রেণীর অসাধু কর্মচারীর বিরুদ্ধে পানি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এক গাড়ি পানির দাম ৫০০ টাকা হলেও দেড় হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে কোনো কোনো এলাকায়। পানি না পেয়ে অনেকে মিনারেল বোতলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। অনেকেই গোসলসহ প্রয়োজনীয় কাজ সেরে আসছেন আত্মীয়র বাসা থেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজানের শুরুতেই তীব্র গরমে পানি না পেয়ে রাজধানীর জুরাইন যাত্রাবাড়ি ও মুগদা মানিক নগরসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকার প্রায় শত শত পরিবার কষ্টে দিন পার করছেন। প্রায় ৬ মাস ধরে এসব এলাকায় সররাহকৃত ওয়াসার পানি ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত হলেও গত ১৫ দিন ধরে একেবারেই পানি পাচ্ছেন না পূর্ব জুরাইন এলাকার বাসিন্দারা। রমজানের আগেই এই পানির সমস্যা সমাধানের জন্য দাবি জানিয়েছিলেন এলাকাবাসী। স¤প্রতি ওয়াসা পানি শতভাগ বিশুদ্ধ ও খাওয়ার উপযোগী, ওয়াসা কর্তৃপক্ষের এমন দাবির প্রতিবাদ জানায় রাজধানীর জুরাইন এলাকার বাসিন্দারা। ঐ এলাকার পানি ময়লা ও দূষিত এমন অভিযোগ করে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে সেই পানি দিয়ে শরবত খাওয়ানোর আয়োজন করে তারা। ব্যতিক্রমধর্মী এমন প্রতিবাদের পর ওই এলাকায় বিশুদ্ধ পানি তো দূরের কথা পানি সরবরাহই পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বলে অভিযোগ জুরাইনবাসীর।
এদিকে রাজধানীর বাসাবো, কদমতলা, বৌদ্ধমন্দির, মায়াকাননসহ আশেপারে এলাকায় গত প্রায় ১০দিন ধরে ওয়াসার পানির তিব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ওই এলাকায়, বসবাসকারী প্রায় দুই লক্ষাধীক মানুষের পানি সঙ্কটে এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। বাসাবোর বৌদ্ধমন্দির এলাকার বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন কামাল বলেন, গত ১০ দিনের পানির অভাবে জীবন প্রায় ওষ্ঠাগত অবস্থা। গোসল নাই, চুলায় রান্না-বান্না নাই। বাইর থেকে কতদিন আর কেনা পানি দিয়ে চলা যায়। পানির এ সমস্যা ওয়াসাকে জানানোর পরও এর কোন সমাধান নাই। এভাবেতো চলতে পারে না। এক ট্রাক পানি নগদ টাকায় কেনার জন্য চেয়ে পাওয়া যায়নি।
একই অবস্থা, রাজধানীর অভিজাত এলাকা উত্তরা মডেল টাউনের বিভিন্ন সেক্টরেও। মিরপুরের মনিপুর এলাকাতেও পানির সমস্যা গত এক বছর ধরে। রাজধানীর গোড়ান, খিলগাঁও, কদমতলা, আহমেদবাগ, রাজারবাগ, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, তাঁতীবাজার, চাঁদনীঘাট, নারিন্দা, পানিটেলা, রামপুরা, বাড্ডা, শান্তিনগর, নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, মাদারটেক, বাসাবো, কুসুমবাগ, মুগদাপাড়া, মানিকনগর, গোপীবাগ, জিয়ামাঠ, আজিমপুর ও নিউ ইস্কাটন, লালমাটিয়া, গণকটুলী, ওয়ারী, মৈশুটি, বনগ্রাম, আরমানিটোলা, ল²ীবাজার, বাংলাবাজার, শাঁখারীবাজার, বাড্ডা, নবাবপুর, ধোলাইখাল, ইসলামপুর, বংশাল, জোয়ারসাহারা, কুড়াতলী, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা, মেম্বারবাড়ি মিরপুর-১, ২, পল্লবী, ইব্রাহীমপুর, মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ী রোড, শ্যামলী রিং রোডসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাতেও বিরাজ করছে পানির সঙ্কট।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ