পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর আকার দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। (স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ছাড়া) এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা খরচের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন অর্থবছরে খাতভিত্তিক বরাদ্দে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে পরিবহন খাত।
গতকাল রাজধানীর আগারগাঁও পরিকল্পনা কমিশনের এক বৈঠকে এ খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন- পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। চূড়ান্ত খসড়াটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে ব্রিফিং এ পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমরা এডিপির সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আগামী অর্থবছরেও সেই ধারা অব্যাহত থাকবে। নতুন এডিপিতে মানব সম্পদ উন্নয়ন, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা সচিব মো. নুরুল আমিন আগামী অর্থবছরের খসড়ার আকার তুলে ধরে বলেন এটি খসড়া প্রস্তাব। এক সপ্তাহের মধ্যেই এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
এডিপি পর্যালোচনায় বলা হয়, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) পর্যন্ত সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (আরএডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৫৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এ সময়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো খরচ করতে পেরেছে ৯৬ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থাৎ ১০ মাসে আরএডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল ৫২ দশমিক ৪২ শতাংশ। ওই সময় খরচ হয়েছিল ৮২ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের মূল এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। সে তুলনায় নতুন অর্থবছরের এডিপির আকার বাড়ছে ১৭ দশমিক ১৮ শতাংশ। এছাড়া, মাঝ পথে এ অর্থবছরের বরাদ্দ কমিয়ে সংশোধিত এডিপিতে ধরা হয় ১ লাখ ৬৭ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপির তুলনায় নতুন এডিপিতে বরাদ্দ বাড়বে ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। নতুন এডিপিতে পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগসহ গুরুত্ব বিবেচনায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে পরিবহন খাতে। এছাড়া, মন্ত্রণালয় হিসেবে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
খাতভিত্তিক বরাদ্দ : আগামী অর্থবছরের জন্য খাত ভিত্তিক বরাদ্দের খসড়ায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ধরা হয়েছে পরিহন খাতে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনায় পরিবহন খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৫২ হাজার ৮০৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, যা মোট এডিপির ২৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। এছাড়া অগ্রাধিকার খাত বিবেচনায় বিদ্যুৎ খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ১৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা, যা মোট এডিপির ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাতে তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ১২ শতাংশ।
এছাড়া পর্যায়ক্রমে অন্যান্য খাতের বরাদ্দ হচ্ছে, শিক্ষার প্রসার ও গুনগত মান বাড়াতে শিক্ষা ও ধর্ম খাতে চতুর্থ সর্বোচ্চ বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৩৭৯ কোটি ১২ লাখ টাকা, যা মোট এডিপির ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এছাড়া, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণসহ তথ্য ও প্রযুক্তি প্রসারে বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে পঞ্চম সর্বোচ্চ বরাদ্দ ১৭ হাজার ৫৪১ কোটি ২৬ লাখ টাকা, যা মোট এডিপির ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনা ও কর্মসংস্থান বাড়াতে পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে ১৫ হাজার ১৫৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা বা ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ বরাদ্দ ধরা হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ খাতে ১৩ হাজার ৫৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বা ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জনে কৃষি খাতে ৭ হাজার ৬১৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ বরাদ্দ ধরা হয়েছে।
নদী ভাঙ্গন রোধ ও নদীর ব্যবস্থাপনার জন্য পানি সম্পদ খাতে ৫ হাজার ৬৫২ কোটি ৯০ লাখ টাকা বা ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ বরাদ্দ ধরা হচ্ছে এবং মানব সম্পদ উন্নয়নসহ দক্ষতা বৃদ্ধিতে গতিশীলতা আনয়নের জন্য জনপ্রশাসন খাতে ৫ হাজার ২৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বা ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ : স্থানীয় সরকার বিভাগ ২৯ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ ২৬ হাজার ১৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ২৫ হাজার ১৬৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এছাড়া, পর্যায়ক্রমে বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রথম ১০ নম্বরে থাকা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হচ্ছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১৫ হাজার ৯০৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয় ১২ হাজার ৫৯৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ৯ হাজার ৯৩৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৯ হাজার ২৭০ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ ৮ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা, সেতু বিভাগ ৮ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ৬ হাজার ২৫৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা খসড়া বরাদ্দ ধরা হয়েছে।
ব্রিফিং-এ সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামিমা নার্গিসসহ কমিশনের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।