পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবৈধভাবে রাজধানীর ফুটপাত দখল করে দোকান করতে দেওয়ার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ভাসমান হকাররা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা গুলিস্তান হকাররা এক প্রকার অচল করে দেয়।
হকারদের বিক্ষোভের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গুলিস্তানসহ আশপাশের সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে রোজার প্রথম দিনই চরম ভোগান্তিতে পড়েন অফিস ফেরত চাকরিজীবীসহ সাধারণ নগরবাসী।
নগরবাসীদের অভিযোগ, অনায্য দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে হকাররা আন্দোলনের নামে হয়রানি ও নাগরিক ভোগান্তি তৈরি করলেও তাদেরকে প্রতিহত করা হচ্ছে না। এতে তারা আগের তুলনায় অনেক বেশি বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিরব ভূমিকার কারণে হকাররা এমন দুঃসাহস দেখাতে পারছে। হকারদের কঠোরভাবে দমনের দাবি জানান ভুক্তভোগী নগরবাসী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে হকাররা। পরে তারা গোলাপ শাহ মাজারের সামনের নর্থ সাউথ রোড বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। বেলা ১টার দিকে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের সামনের সড়কও অবরোধ করে হকাররা। এতে পল্টন থেকে ফুলবাড়িয়া হয়ে সদরঘাট এবং গুলিস্তান থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সড়কে সব ধরণের যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট থেকে সচিবালয়মুখী আব্দুল গণি রোডের মুখে ওয়াসার পয়নিষ্কাশনের বড় বড় পাইপ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যান চলাচলে বাধা দেয় হকাররা।
বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাসিম কবির বলেন, মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন হকারদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়রের কার্যালয়ে গিয়ে তার দেখা মেলেনি। তিনি আরও বলেন, এর আগে গত রোববার আমরা মেয়রের সাথে দেখা করে পুনর্বাসনের আগ পর্যন্ত ফুটপাতে বসার দাবি জানালেও কোন ব্যবস্থা করা হয়নি।
হকারদের আন্দোলনের কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন অফিস ফেরত মানুষরা। তারা গাড়ি না পেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকেন। গাড়িতে থাকা যাত্রীরাও দীর্ঘ সময় এক জায়গায় ঠায় দাড়িয়ে থাকেন। ভুক্তভোগী মানুষদের অনেকে হকারদের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়ে গালমন্দ করেন। অনেকে বাধ্য হয়ে উপায়ন্তর না পেয়ে পায়ে হেটেই গন্তব্যে রওয়ানা দেন।
দুপুরের পর গুলিস্তানে গিয়ে দেখা যায়, একই জায়গায় দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন রুটের গাড়ি ঠায় দাড়িয়ে আছে। মিরপুরগামী যাত্রী সুমাইয়্যা সুলতানা বলেন, হকাররা অনায্য দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গুলিস্তানের মতো ব্যস্ততম সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাকেও কায়েকদিন পায়ে হেটে শাহবাগ গিয়ে গাড়িতে উঠে বাসায় ফিরতে হয়েছে। তার দাবি, সরকার হকারদের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ না নেওয়ায় এবং শ্রমিকরা লীগের নেতাদের ইন্ধনে হকররা অনেক বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
বঙ্গভবনের সামনে এক যাত্রী বলেন, কলাবাগান থেকে মেঘলা পরিবহনের গাড়িতে করে গুলিস্তান পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে আসতে পেরেছেন। এখন গুলিস্তানের আন্দোলনের কারণে বঙ্গভবনের সামনের সড়কে এক জায়গায় দুই ঘণ্টা ধরে দাড়িয়ে আছেন। এক ফুটও গাড়ি নড়েনি বলে তিনি জানান।
গুলিস্তানের বিভিন্ন মার্কেটের স্থায়ী দোকানীরা বলেন, দুপুরের আগ থেকে আন্দোলন শুরু করে অফিস ছুটির আগ পর্যন্ত তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখে। দোকানীদের দাবি, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় সন্ত্রাসীরা মাসোহারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গুলিস্তানে দোকান বসিয়ে আসছে। তারা হকারদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে মূলত তাদেরকে শেল্টার দেয়। তারাই মূলত হকারদের দিয়ে অনায্য আন্দোলন করাচ্ছে বলে দোকানীদের দাবি।
শাহবাগ থানার পরিদর্শক (পেট্রোল) আবুল বাশার বলেন, হকারদের বিক্ষোভের কারণে দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে ঘরে ফেরা মানুষেরা অনেক ভোগান্তিতে পড়েন। হকারদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিতে গেলেও তারা শোনেনি। তবে বিকেলের দিকে তারা রাস্তা ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ডিএমপির মতিঝিল ট্রাফিক জোনের এসি এসএম বজলুর রশিদ জানান, হকারদের যদি কোনো দাবি থাকে তাহলে সেটি তারা ডিএমপি অথবা সিটি কর্পোরেশন বরাবর জানাতে পারে। এভাবে রোজার মাসে রাস্তা বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল রাজধানীতে ১১টি হলিডে মার্কেট বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় ডিএমপি। পবিত্র রমজান মাস ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এসব মার্কেট চালু থাকবে। ঈদুল ফিতরের পর এসব মার্কেট বন্ধ করে দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।