Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মামলা ধামাচাপার চেষ্টা?

বিএনপি নেতা শাহীন হত্যা

বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বগুড়ায় বাংলা নববর্ষের রাতে নৃশংসভাবে নিহত বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুব আলম শাহীন হত্যা মামলা তদন্তের গতিতে ছেদ পড়েছে। সেই সাথে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ারও চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিহতের স্বজন ও তার সহকর্মীরা বলেছেন বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, পাল্টাপাটি কমিটি গঠন, কমিটি নিয়ে কোর্টে মামলা পাল্টা মামলাকে ঘিরে সৃষ্ট এই হত্যাকান্ডের আসল মাষ্টারমাইন্ডকে শনাক্ত করে প্রকৃত ঘাতকদের বিচারের মুখোমুখি করতে ব্যর্থ হলে বগুড়ায় খুনোখুনির বিস্তৃতি ঘটবে।
নিহতের একাধিক স্বজনরা বলছেন, ১৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টায় বগুড়া শহরতলীর উপশহর এলাকায় পেশাদার কিলাররা ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। এসময় তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না নিয়ে একদল উদ্ধারকারী প্রথমে স্বদেশ হাসপাতাল নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিক ও পরে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নেয়া হয় । মূলত এই দুটি জায়গায় সময় ক্ষেপণের ফলে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
হত্যাকারীরা মোটরসাইকেলে পালাবার সময় একাধিক সিসিটিভি ফুটেজে সেই ছবিও ধরা পড়ে। ঘটনার রাতেই পুলিশ সম্ভাব্য খুনি হিসেবে বেশ কয়েকজন রেকর্ডধারী ব্যাক্তিকে আটক করে। ২ দিন পরে পুলিশ এই হত্যাকান্ডের মোটিভ উদঘাটনের দাবি করে পায়েল শেখ (৩৮) ও রাসেল (২৮) নামের অপর দুজনকে গ্রেফতারের কথা মিডিয়ায় ব্রিফ করে। তাদেরকে প্রথম দফায় কোর্টে প্রেরণ করলে পায়েল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয় । রাসেলকে ২য় দফায় রিমান্ডে নিলে সেও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়।
২৩ এপ্রিল রাজধানী ঢাকায় গ্রেফতার হয় এ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি প্রবীণ শ্রমিকনেতা আব্দুল লতিফ মন্ডলের পুত্র আমিনুল ইসলাম মন্ডল ওরফে আমিনুর (৪০)। পুলিশের দেওয়া প্রাথমিক ভাষ্যে প্রচ্ছন্নভাবে আমিনুলকেই মাষ্টারমাইন্ড হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হলেও পরবর্তী ঘটনা প্রবাহে পুলিশের প্রাথমিক স্ট্যান্ডের ফলোআপ আর হয়নি। আমিনুলকে আদালতের মাধ্যমে ৫ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও সে এই ঘটনায় তার জড়িত থাকার বিষয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়নি। রাসেলের মতো আমিনুলকে যখন দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নেয়নি পুলিশ তখনই এই হত্যাকান্ডের রহস্য প্রকৃতই আর উদঘাটন হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ ঘনিভ‚ত হতে শুরু করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে নিহত অ্যাডভোকেট শাহীনের মতো একজন আইনজীবী, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও পরিবহন ব্যবসায়ী মার্ডারের তদন্ত যে আম্বার হোসেন নামে ফাঁড়ি ইনচার্জকে দিয়ে করা হচ্ছে তার তদন্ত কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আম্বার হোসেন এই ঘটনায় সুমন বাঙালী (৩৫) নামের একজনসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করেও তার পরিজনদের কাছে তাদের গ্রেফতারের বিষয়ে অস্বীকার করে। পরে অবশ্য সুমন বাঙালীকে গ্রেফতারের পরিষ্কার ভিডিও ফুটেজ তার পরিবার পুলিশকে দেখালে শর্ত সাপেক্ষে তাকে ছেড়ে দেয়। তবে শর্তের মধ্যে লেনদেনের বিষয় আছে কি না তা বলতে রাজি হয়নি তার পরিবার।
সংগত কারণেই নিহতের শাহীনের রাজনৈতিক ও আইন অঙ্গনেরসহ কর্মীরা মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুলিশের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বিভাগ পিবিআইকে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এদিকে অ্যাডভোকেট শাহীন হত্যার বিচার চেয়ে পুরো বগুড়া শহর হাজার হাজার পোস্টারে ছেয়ে গেছে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ