পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তাদের কেউ ‘ডিবি পুলিশ’, কেউ ‘সাংবাদিক’। নারী সদস্যরা পাতে ‘প্রেমের’ ফাঁদ। ওই ফাঁদে ফেলা হয় ধনাঢ্য ব্যক্তি, উঠতি ব্যবসায়ীদের। জিম্মি করে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা। এ চক্রের সর্বশেষ শিকার নগরীর আছদগঞ্জের এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী।
ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে ফাঁদে আটকে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের সময় পাকড়াও করা হয় ওই চক্রের চার সদস্যকে। যাদের মধ্যে দুইজনই নারী। পুলিশ বলছে গত কয়েক বছরে অন্তত অর্ধশত ব্যক্তিকে এভাবে ফাঁদে আটকে কোটি কোটি টাকা আদায় করেছে এ ভয়ঙ্কর অপরাধী চক্রটি।
আছদগঞ্জের ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেনকে (৫০) জিম্মি করে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে এ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সোমবার বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত টানা অভিযানে চারজনকে পাকড়াও করা হয়। এই চক্রের অপর দুই সদস্যকে ধরতে অভিযান চলছে। এমন অপরাধের সাথে জড়িত আরও যারা আছে তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। নগর পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রেমের ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটছে দীর্ঘদিন থেকে। তবে এর সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে ডিবি পুলিশ পরিচয়। ডিবি পরিচয়ে রাস্তা থেকে তুলে আনা হচ্ছে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের।
পুলিশ জানায়, এরা মূলত একটি অপহরণকারী সংঘবদ্ধ চক্র। চক্রটি বিগত ৫ বছর ধরে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার বিত্তশালী ব্যবসায়ীদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিলো। তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নেয়। বাসার ড্রইং রুমটি হালকা আসবাবপত্রে সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো হয়। পুরুষ সদস্যরা মহানগরী ঘুরে বিভিন্ন বিত্তশালী লোক, ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবীদের মোবাইল নম্বরসহ তথ্য সংগ্রহ করে।
চক্রের মহিলা সদস্যরা মোবাইলে প্রথমে টার্গেকৃতদের সাথে কথা বলে ‘প্রেমের’ প্রস্তাব দেয়। এরপর ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে। এক পর্যায়ে তাদের বাসায় আসার আহ্বান জানানো হয়। বাসায় আসলে তাদের আটক করে নারী সদস্যদের সাথে অশ্লিল ছবি তুলে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করা হয়। আবার যারা বাসায় আসতে রাজি হয় না তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়। পরে সুযোগ বুঝে এ চক্রের পুরুষ সদস্যরা নিজেদের ডিবি পরিচয়ে তাদের তুলে আনে। নারীদের সাথে ছবি তুলে টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে রাজি না হলে তাদের হাতে ইয়াবাসহ মাদক ধরিয়ে দেয়। চক্রের কেউ এ সময় সাংবাদিক সেজে মাদকসহ ওই ব্যক্তির ছবি তুলে। আর তা পত্রিকায় প্রকাশ করার হুমকি দেয়।
এভাবে ব্যবসায়ীদের জিম্মি রেখে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। ৮-১০টি অপহরণ করার পর চক্রের সদস্যরা ফের বাসা বদল করে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মুক্তিপণ নিয়ে ছাড়া পেয়েছে পরবর্তীতে এমন অনেকের কাছ থেকেও অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করা হয়েছে। তবে প্রতারণার শিকার কেউই আত্মসম্মানের ভয়ে এসব বিষয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানায়নি। গত পাঁচ বছরে তারা কমপক্ষে ৫০ জনকে এভাবে জিম্মি করে টাকা আদায় করার কথা স্বীকার করেছে।
ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেনকও টার্গেট করে এ চক্রের সদস্যরা। সোমবার সকালে তাকে কোতোয়ালী থানার চামড়ার গুদাম এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাকে চান্দগাঁও শরফত উল্লাহ পেট্রোল পাম্পের পাশের একটি বাসায় আটকে রেখে অশ্লীল ছবি তোলা হয়। এরপর তার ছোট ভাই ও দোকানের দুই কর্মচারীর মোবাইলে ফোন করে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণের টাকা দিতে দুটি বিকাশ নম্বরও দেয় অপহরণকারীরা। ব্যবসায়ীর ছোট ভাই বিষয়টি দুপুরে কোতোয়ালী থানাকে জানালে বিকাশের নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশ অভিযান চালায়।
বিকাশ এজেন্টের দোকান থেকে প্রথমে হাসিনা আক্তার ওরফে মুক্তাকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয়। এরপর তার দেখানো মতে, শরফত উল্লাহ পেট্রোল পাম্পের পাশে নূর মঞ্জিল ৩য় তলার ৬ নং ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে মোঃ নাসির উদ্দিন (৩৫), প্রদীপ দাশ (৩৫) ও ছালেহা আক্তারকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়। বাকি দুইজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ওই বাসা থেকে আলতাফ হোসেনকে উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় সাতটি মোবাইল। এসব মোবাইলে আগে অপহৃত ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে ব্যবসায়ীদের ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় একটি মামলা রয়েছে বলে জানান থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।