Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশে এলে ফাঁসি হতে পারে আইএস বধূ শামীমার আইটিভি নিউজকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ মে, ২০১৯, ১২:০৯ এএম


পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, শামীমা বেগম বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নয়। তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয়েছে। এরপর তিনি যদি বাংলাদেশে আসেন তাহলে সন্ত্রাসের কারণে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দেয়া হতে পারে।
ব্রিটেনের আইটিভি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেছেন একে আবদুল মোমেন। গত বৃহস্পতিবার আইটিভি নিউজের সিকিউরিটি এডিটর রোহিত খসরু ওই সাক্ষাতকার নেন। এর আগে যখন ব্রিটেন শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিল করে তখন বাংলাদেশ অবস্থান পরিষ্কার করেছিল। বলেছিল, শামীমা বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নয়। তাকে ঠাঁই দেবে না বাংলাদেশ। কিন্তু তারপর দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন মন্ত্রী হিসেবে আবদুল মোমেন প্রথমবার ক্যামেরার মুখোমুখি হলেন এ ইস্যুতে।
২০১৫ সালে শামীমাসহ তিনজন স্কুলপড়ুয়া ব্রিটেনের বেথনাল গ্রিন থেকে পালিয়ে তুরস্ক হয়ে চলে যান সিরিয়ায়। যোগ দেন আইএসে। সেখানে বিয়ে করেন আইএস যোদ্ধাকে। শামীমার দুটি সন্তান জন্ম নেয়ার পর মারা যায়। এ বিষয়টি এ বছরের শুরু পর্যন্ত ছিল অজানা। কিন্তু এ বছর যখন তিনি তৃতীয় সন্তান প্রসবের আগে ব্রিটেনে ফেরত আসার আবেদন জানান, তখনই সব প্রকাশ পায়। তাকে দেখা যায় এ বছরের শুরুর দিকে সিরিয়ায় একটি শরণার্থী শিবিরে। তার দেশে ফেরার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ। একই সঙ্গে নাগরিকত্ব বাতিল করেন ফেব্রæয়ারিতে। আইটিভি নিউজ লিখেছে, শামীমা বেগমকে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করার সরকারি কারণ কখনোই প্রকাশ করা হয় নি। তবে এটা বিশ্বাস করা হয় যে, যেহেতু তার পিতা বাংলাদেশী, তাই তিনি বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পেতে পারেন।
এ নিয়েই প্রথমবার গত বৃহস্পতিবার ক্যামেরার মুখোমুখি হন আবদুল মোমেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন শামীমা বেগম বাংলাদেশে গেলে তাকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে। তার ভাষায়, শামীমার বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। তিনি বাংলাদেশী নাগরিক নন। তিনি কখনো বাংলাদেশী নাগরিকত্বের জন্য আবেদনও করেন নি। তিনি জন্মেছেন ইংল্যান্ডে। তার মা একজন ব্রিটিশ। যদি কাউকে সন্ত্রাসে জড়িত দেখা যায়, তাহলে আমাদের আইন খুব সরল, তার শাস্তি মৃত্যুদÐ হতে পারে (ক্যাপিট্যাল পানিশমেন্ট)। এ ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। তাকে জেলে ঢোকানো হবে। আইন অনুযায়ী তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ফাঁসি দেয়া উচিত হবে।
আইটিভি নিউজ লিখেছে, কাউকে রাষ্ট্রহীন করা হলো আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। ফলে ড. আবদুল মোমেনের বক্তব্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায় নি ব্রিটিশ সরকারের তরফ থেকে। কিন্তু এর আগে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, দেশের নিরাপত্তার জন্য কাউকে ব্রিটিশ পাসপোর্ট থেকে বঞ্চিত করা যেতে পারে। যদি কেউ রাষ্ট্রহীন হয়ে না পড়েন তাহলে তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করার ক্ষমতা আছে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
ড. আবদুল মোমেন বলেন, সন্ত্রাসের বিষয়ে বাংলাদেশের রয়েছে শূণ্য সহনশীলতার নীতি। সব রকম সন্ত্রাস নির্মূলে বাংলাদেশ একটি মডেল। তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসের বিস্তার রোধ করতে অন্য সব দেশকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। তিনি বলেন, যদি শামীমা বেগম রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েন তাহলে তিনি দুঃখবোধ করবেন। তবে এতে আমাদের করার কিছু নেই। আমরা অনেক মানুষকে দেখছি রাষ্ট্রহীন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ