জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন, দিন দিন বাংলাদেশ হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠছে। তারা সরকারের কাছে প্রশ্ন করে জানতে চান কারাগার একটি নিরাপদ জায়গা সেখানেও যদি মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হতে হয়। তাহলে আর নিরাপদ জায়গা কোথায়? জাতীয় হিন্দু মহাজোটের উদ্যোগে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
হিন্দু ছাত্র মহাজোটের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট পলাশ কুমার রায়কে পঞ্চগড় জেলা কারাগারে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুনে জ্বালিয়ে হত্যা করার প্রতিবাদে ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়ের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা: এম কে রায়, প্রদীপ পাল, মিঠুরঞ্জন দেব, মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব উত্তম দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সুব্রত দাস, আন্তর্জাতিক সম্পাদক রিপন দে, মহিলা মহাজোটের সভাপতি প্রীতিলতা বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট রনি ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ঘোষ, হিন্দু সাংস্কৃতিক মহাজোটের সভাপতি সাধন লাল দেবনাথ, যুব মহাজোটের সভাপতি কিশোর বর্মন, নির্বাহী সভাপতি প্রদীপ শঙ্কর, সিনিয়র সহ-সভাপতি অপূর্ব কুমার পাল, প্রধান সমন্বয়কারী প্রশান্ত হালদার, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার মাহাতো, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ সরদার, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি নিউটন পÐিত, সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দেবনাথ, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল, সাধারণ সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বারুরী প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, অ্যাডভোকেট পলাশ কুমার রায় সৎ, আদর্শ ও অন্যায়ের সাথে আপোষহীন ছিলেন। তিনি গত উপজেলা নির্বাচনে পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার প্রার্থী ছিলেন। সেখানে আওয়ামী প্রার্থী পক্ষের লোকের শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কটূক্তির মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ তাকে পুনরায় গ্রেফতার করে। গত ২৬ এপ্রিল সকালে কারা অভ্যন্তরে দুই ব্যক্তি টয়লেটের কাছ থেকে তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। চিৎকার করা অবস্থায় কারারক্ষীরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। ততক্ষণে তার দেহের বেশিরভাগ পুড়ে যায়। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। ৩০ এপ্রিল প্রায় ২টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
হিন্দু মহাজোটের নেতারা বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ন্যাক্করজনক ঘটনা আমরা দেখিনি। এর পাশাপাশি তারা আরো বলেন বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট রবীন ঘোষ আলোচিত সৌরভ মন্ডল হত্যাকাÐের তদন্তের অগ্রগতি জানতে গৌরনদী থানায় গেলে গৌরনদী থানার ওসি তাকে আটক করে রাখে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়। বক্তাগণ মানবাধিকার কর্মী রবীন ঘোষের আটক করায় এবং ভয়ভীতি দেখানোর তীব্র নিন্দা জানান।
তারা এঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে হত্যাকাÐে জড়িদের ৩ দিনের মধ্যে গ্রেফতার, দ্রæতবিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার ও ফাঁসি দাবি করেন। অন্যথায় আগামী ১০ এপ্রিল সারা দেশে একযোগে দেশের প্রতিটি জেলা ও থানা শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিতে বাধ্য হবে।