Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলবে স্বস্তির দুয়ার

মেঘনা ও গোমতী দ্বিতীয় সেতু

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০১৯, ১২:০৯ এএম

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্য ও যাত্রীবাহি পরিবহণের জন্য যানজটের আঁতুড়ঘর মেঘনা ও গোমতি সেতু টোলপ্লাজা। মহাসড়কের এ দুটি সেতু এলাকা যেনো বিষফোঁড়া। তবে এ বিষফোঁড়ার যন্ত্রণা অল্প সময়ের মধ্যেই লাঘব হতে যাচ্ছে। এবারের রোজাতেই মেঘনা ও গোমতী দ্বিতীয় সেতু খুলে দিবে স্বস্তির দুয়ার। আর ঈদযাত্রার সব শঙ্কা দূর করে স্বস্তিতে ঘরে ফিরতে পারবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয় থেকে এমন আভাসই মিলছে।
দেশের ইকোনমিক লাইফ লাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট উৎপত্তির স্থল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতী সেতু। সেতুতে যানবাহন চলাচলে বিশৃঙ্খলা, মেঘনা-গোমতিতে টোল আদায়ে ধীরগতিসহ নানা অব্যবস্থাপনায় সপ্তাহের অনন্ত ৫দিনই মহাসড়ক আক্রান্ত থাকে যানজটে। কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রামের সিটি গেইট পর্যন্ত দুইলেনের মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত হওয়ার পর সবাই ভেবেছিল যানজটের ত্রাহি অবস্থা থেকে যাত্রীদের মুক্তি মিলবে। কিন্তু না, দিন দিন মহাসড়ক হয়ে ওঠে যন্ত্রণার পথচলা। কারণ একটাই, ঢাকা হয়ে কাঁচপুর সেতু এলাকা থেকে চট্টগ্রাম-কুমিল্লা হয়ে গোমতী-মেঘনা সেতুর টোলপ্লাজা স্থবির করে দেয় গন্তব্যে পৌঁছানোর পথ। মুলত, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতীর দ্বিতীয় সেতু নির্মাণের কাজ শুরুর পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জের অংশে সপ্তাহের ৫দিনেই কমবেশি যানজট লেগে থাকতো। এবছরের ১৬ মার্চ নির্মাণ কাজ শেষে শীতালক্ষ্যা নদীর উপর নির্মিত দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মহাসড়কের মেঘনা এবং গোমতী সেতু টোলপ্লাজা ঘিরে এখনো চলেছে যানজট যন্ত্রণা। গত ৩দিন ধরে যানজট যন্ত্রণায় নাকাল যাত্রীরা। ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়িতেই কাটছে সময়। তবে এ যন্ত্রণার অবসান ঘটতে যাচ্ছে এবারের রোজাতেই। দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে খুলে যাবে যানজটের দুয়ার। আর স্বস্তির ঈদ যাত্রায় পুরোপুরি গতি পাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। কুমিল্লার পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা মনে করছেন মহাসড়কের কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতীর তিন পয়েন্টে যখন তখন জটবাধা যানজট যন্ত্রণা ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলবে যাত্রীদের।
জানা যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিদ্যমান পুরনো কাঁচপুর সেতু, মেঘনা ও গোমতী সেতুর পাশে একই নামে আরো তিনটি সেতুর মধ্যে দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। বাকি দুটি দ্বিতীয় মেঘনা সেতু ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু রয়েছে উদ্বোধনের অপেক্ষায়। জাপানী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবায়েশি করপোরেশন, শিমিজু করপোরেশন, জেএফই প্রকৌশলী করপোরেশন এবং আইএইচ ইনফ্রা সিস্টেম কোম্পানি লিমিটেড দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুসহ দ্বিতীয় মেঘনা এবং দ্বিতীয় গোমতী সেতুর কাজ ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু করে।
এদিকে গত মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের মেঘনা সেতুর টোলপ্লাজায় অত্যাধুনিক ইলেকট্রিক টোল আদায় সিস্টেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম জানান, ৯৩০ মিটার দৈর্ঘ্যরে দ্বিতীয় মেঘনা সেতু এবং ১ হাজার ৪১০ মিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতীয় গোমতী সেতুটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। আগামী ঈদুল ফিতরের আগেই দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে জানান, দেশে প্রথমবারের মতো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা ও গোমতী সেতু ব্যবহারকারী যাত্রী ও পণ্য পরিবহনকারী যানবাহনের টোল আদায়ে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হলো। এতে করে টোলপ্লাজায় টোল আদায়ের কারণে মহাসড়কে যে যানজট সৃষ্টি হতো, তা আর হবে না। এ পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে মহাসড়ক অনেকটাই যানজটমুক্ত থাকবে।
মন্ত্রণালয়ের এমন আভাসে মহাসড়কে চলাচলকারি পরিবহণের চালক, যাত্রীরা অপেক্ষার প্রহর গুনছেন কখন দেখা মিলবে ভ্রমণে স্বস্তির মহাসড়কের।
কুমিল্লা-ঢাকা রুটের পরিবহন রয়েল কোচের চালক কবির জানান, কাঁচপুরের নতুন সেতু চালু হওয়াতে এদিকটায় (চিটাগাং রোড ও কাঁচপুরে) যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক। কাঁচপুরের পুরনো সেতুর সংস্কার কাজ চলছে। এটি শেষ হলে এবং রোজায় দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু চালু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট বিড়ম্বনা থাকবেনা বলে ধারণা করছি। আর এক্ষেত্রে আমরা যারা চালক আছি তারা যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা বজায় রাখলে এবারের ঈদে ঘরমুখো মানুষরা স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরবে বলে মনে করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ