পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঘূর্ণিঝড় ফণি মোকাবেলায় বরিশাল, নোয়াখালী, খুলনা, কক্সবাজার পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা ও বাগেরহাট, ল²ীপুর, ভোলাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ফেরি ও যানবাহন পারাপার। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ প্রস্তুত সকল স্বেচ্ছাসেবকরা। এলাকায় এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। মগাফোনের মাধ্যমে সাইরেন বাজানো বিপদ সংকেতপূর্ণ ৩টি করে লাল পাতকা উত্তোলন করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর :
নাছিম উল আলম বরিশাল থেকে জানান, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা ও বাগেরহাট থেকে পশ্চিমের সাতক্ষীরার সব নৌপথ ও নদী বন্দরগুলোকেও এ সংকেতের আওতায় আনা হয়। গতকাল সকাল ১০টা থেকেই বরিশাল-ভোলা-ল²ীপুর এবং বরিশাল-ঢাকাসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের নৌ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রাজধানীর সাথে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সড়ক যোগাযোগ রক্ষাকারী দুটি ফেরি সেক্টর ছাড়াও বরিশাল-ভোলা ও ভোলা-ল²ীপুর ফেরি ও যানবাহন পারাপার বন্ধ করে দেয়া হয় সকাল থেকে। তবে বরিশাল বিমান বন্দরের সাথে বিকেল পর্যন্ত সব ফ্লাইট চালু ছিল। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বরিশাল সেক্টরে সরকারি-বেসরকারি ৩টি সং¯’ার উড়ানপূর্ণ যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। বিআইডবিøউটিএ, বিআইডবিøউটিসি ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বরিশালে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি রয়েছে। গতকাল বিকেল থেকে বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে টেলিটকের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে প্রায় ৪ হাজার আশ্রয় কেন্দ্রে উপক‚লের ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে সরিয়ে আনতে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী-সিপিপি’র ৫৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। সিপিপি উপক‚লের ৪০টি উপজেলার সাড়ে ৩শ’ ইউনিয়নে তার ৩ হাজার ৬৮৪টি ইউনিটের মাধ্যমে ইতোমধ্যে উদ্ধার ও সতর্কতার কাজ শুরু করেছে। বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, খুলনা, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জোনাল অফিসগুলোর সাথে উপক‚লের ১৪৬টি ভিএইচএফ ও ইউএইচএফ স্টেশনের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাসহ মনিটরিং করা হচ্ছে।
খুলনা ব্যুরো জানায়, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে খুলনা জেলা প্রশাসন। এটি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র। খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এ তথ্য জানান। খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি এবং নয়টি উপজেলায় নয়টি কন্ট্রোল র”ম খোলা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনকে সতর্ক করতে উপক‚লীয় উপজেলাগুলোতে মাইকিং করা হয়েছে। সার্বিক পরি¯ি’তি মোকাবিলায় ১১৪ টি মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
নোয়াখালী ব্যুরো জানান, স্বরণকালের ভয়াবহ আকার রুপ নেয়া ঘূর্ণিঝড় ফনী’র ঝুঁকিতে রয়েছে নোয়াখালীর উপক‚লীয় ও মেঘনা বেষ্ঠিত হাতিয়া উপজেলার ৮ লক্ষাধিক অধিবাসী। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঝড় জলোচ্ছাস সরাসরি আঘাত হানে হাতিয়া, সন্ধীপ ও মনপুরা উপজেলায়। ফলে অতীতে প্রাকৃতিক দূর্যোগ বিশেষ করে ঝড় জলে”ছাসে এ অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়।
১৯৭৬ সালের পর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সবচে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ’ফনি’ ভয়ানক র”প ধারণ করে ক্রমান্বয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এতে করে উপক‚লীয় ও দ্বীপাঞ্চলের অধিবাসীরা চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এরমধ্যে মেঘনা বেষ্টিত হাতিয়া উপজেলা ও তৎসংলগ্ন চরাঞ্চলে বসবাসকারী ৬ লক্ষাধিক অধিবাসী আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। হাতিয়া উপজেলার মূল ভ‚খন্ডের বাইরে নিঝুমদ্বীপ, হরণী ও চানন্দী ইউনিয়নে দেড় লাখ মানুষ বসবাস করছে। ঝড় জলো”ছাসে ৩টি ইউনিয়নে ক্ষয়ক্ষতি বেশী হবে। এছাড়া হাতিয়া মূল ভূখন্ডের বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ না থাকায় জলোচ্ছাসে বিপুল প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছেছ।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ২ হাজার ৬৫৫জন স্বেচ্ছাসেবক তৈরি রাখা হয়েছে। উপজেলার সর্বত্র মাইকিং চলছে। নদীর তীরে বিপদ সংকেত সম্বলিত লাল পতাকা টাঙ্গানো হয়েছে। হাতিয়া উপজেলায় ১৭৪ টি সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে। এসব শেল্টারে লোকজন নিরাপদ আশ্রয় নিতে পারবে।
হাতিয়া আসনের এমপি আয়েশা ফেরদাউস ইনকিলাবকে জানান, হাতিয়ায় সর্বাতœক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক ছাড়াও প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সতর্কতামূলক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার, খাবার স্যালাইন, প্রাথমিক চিকিৎসা ও বিশুদ্ব পানি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। লোকজন যাতে তাৎক্ষনিকভাবে নিরাপদে সাইক্লোন শেল্টারে পৌছতে পারে সে দিকে স্বে”ছাসেবকরা দৃষ্টি নিবন্ধ রেখেছে। বিশেষ করে মা ও শিশুদের দ্র”ততম সময়ে সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় গ্রহনের উপর জোর দেয়া হয়েছে।
ল²ীপুর : মেঘনা উপক‚লীয় জেলা ল²ীপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জেলার ১০০টি আশ্রয়ন কেন্দ্রকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে ৬৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। উপক‚লীয় এলাকায় মাইকিং করে জনসাধারন, মেঘনায় অবস্থানরত জেলে ও নৌকাসহ সকল ইঞ্চিন চালিত ট্রলারকে নিরাপদে আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণি মোকাবেলায় বাগেরহাটের ২৩৪ টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য জেলার সর্বত্র মাইকিং করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।