Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমান

জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আদালতে বিচার চাইতে গিয়ে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে বিচারপতিসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে দ্রুততম সময়ে রায় দিতে তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, দেশে এখন জমিসংক্রান্ত মামলার সংখ্যাই বেশি। এগুলো আপস-মীমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা গেলে মামলাজট কমবে।
গতকাল সকালে জাতীয় আইনগত সহতায়তা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
আমাদের সমাজে যেসব অবিচার হয় এর দিকেও নজর দিকে বিচারপতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধানমন্ত্রী। আজ মানুষই মানুষের নিষ্ঠুরতার শিকার জানিয়ে অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে খুন, অগ্নি সন্ত্রাস, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা এবং ধর্ষণের মত মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে বিচারের বাণী যেন নীরবে নিভৃতে না কাঁদে। দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব যেমন বিচারকদের, তেমনি আইন পেশার সঙ্গে জড়িতদেরও। তাই মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে দ্রুততম সময়ে রায় দেয়ার উপায় বের করার দায়িত্ব দুপক্ষেরই। তিনি বলেন, আমরা সর্বস্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে এমন একটি উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এমন একটি সমাজ বিনির্মাণ করতে চাই যেখানে ধনী, দরিদ্রের কোন বৈষম্য থাকবে না। জনগণ মৌলিক অধিকারসমূহ ভোগ করে নিজেরা নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করতে পারবে।
মেয়েরা যেন বাবার সম্পত্তিতে পুরোপুরি ভাগ পায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে তিনি সবার প্রতি অনুরোধ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েদের যে অধিকার সম্পদে, বাবা যে সম্পদ করে গেছেন, সেটা কেন অন্যরা টেনে নিয়ে যাবে। শরিয়া আইনের দোহাই দিয়ে সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে যাওয়ার একটা সুরাহা করা যায় কি না একটু দেখবেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। সমাজের উচ্চবিত্তদের মধ্যে বোনকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার প্রবণতা বেশি বলে জানান। এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায় সম্বলহীন ও নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে দেশের কোনো নাগরিক যেন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যে আমরা ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণয়ন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জেলায় লিগ্যাল এইড অফিসসমূহ ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি’র কেন্দ্রস্থল হিসেবে মামলার পক্ষসমূহের মধ্যে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করছে, যা সারাদেশের আদালতসমূহে মামলাজট হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশে আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়। ’৭৫ পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার হত্যা, দমন, নির্যাতন ও নিপীড়নের রাজত্ব কায়েম করে। সুবিচারের পথ রুদ্ধ করে দেয়। দেশের জনগণ আইনগত সহায়তা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।
শেখ হাসিনা জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে জনগণের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করেন। তিনি তার বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে করতে পারতেন। জনসাধারণের অধিকারের কথা বিবেচনা করেই সাধারণ আদালতে এই হত্যাকান্ডের বিচার হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সংগ্রাম আর ত্যাগের বিনিময়ে আমরা দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছি। গণতন্ত্র না থাকলে আইনের শাসন যেমন সুপ্রতিষ্ঠিত হয় না, তেমনি আইনের শাসন না থাকলে গণতন্ত্র টেকসই হয় না। আর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় স্বাধীন বিচারব্যবস্থার বিকল্প নেই।#



 

Show all comments
  • Chan Miah ২৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৪ এএম says : 0
    এক যুগের কমে কোন মামলার নিষ্পত্তি আদালতের কাছে সম্ভব নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Aktar ২৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৫ এএম says : 0
    শেখ হাছিনার লোক জনের যেন কোন মামলা না থাকে
    Total Reply(0) Reply
  • Azizul Islam ২৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৫ এএম says : 0
    কোর্টে না সরকারের কোন ক্ষমতা নেই।তাহলে এই নির্দেশ কি ভাবে দেয় সরকার।
    Total Reply(0) Reply
  • Ahsan Faruk ২৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৫ এএম says : 0
    আইন করা হোক এক মাসের মধ্যে যেকোন মামলা নিস্পত্তি করতে হবে ।বিচারকদের কারসাজিতে মামলা জট হয় ।
    Total Reply(0) Reply
  • Habib Khan ২৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৬ এএম says : 0
    ৮ বছরে জজ সাহেবের সামনে দারাতে পারিনি সম্পদের ভাগ চেয়েছিলাম বলে করা মামলায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi AB Zalil ২৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৬ এএম says : 0
    শুধু এই একটি কারনে মামলার এই অহেতুক দীর্ঘ সূত্রীতার জন্য মানুষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Madinar Poth ২৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৬ এএম says : 0
    ধর্ষনের দিক দিয়ে বৃদ্ধ ও বয়ষ্করাই এগিয়ে, সে হিসেবে এদেশের যুবকরাই অনেক ভাল।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ