পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কদিন ধরে রাজশাহী মহানগরীর উপর দিয়ে বয়ে গেল বৈশাখী ঝড়ের মত অবৈধ দখল উচ্ছেদের ঝড়ো অভিযান। নগরীর রাস্তা ফুটপাতে এখন ফাঁকা ভাব। যানবাহন আর পথচারী চলছে স্বাচ্ছন্দে। নগরবাসী বলছেন এমনটি যেন থাকে সব সময়। আর যেন জুড়ে না বসে জঞ্জাল।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নির্বাচনী প্রতিশ্রæতি নগরীকে ক্লিন সিটি গ্রীন সিটি হিসাবে গড়ে তোলা। প্রভাবশালী ক্ষমতাসীন দলের অফিস কোন কিছুই আটকাতে পারেনি অভিযানের গতি। বৈশাখের দশদিনেই ঝড়ো অভিযানে রাস্তা ফুটপাত সব দখলমুক্ত হয়ে গেছে। অভিযান ঠেকাতে প্রভাবশালী মহল অনেক তদবীর করলেও এ ক্ষেত্রে মেয়র লিটনকে টলাতে পারেনি। আর সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট সমর পালও ছিলেন কঠোর।
মুক্ত হয়েছে কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত দৃষ্টি নন্দন ফুটপাতও। দখলে সংকীর্ণ হওয়া চওড়া রাস্তা, পানি নিস্কাশনের ড্রেন। বহু বছর ধরেই এসব স্থান বেদখলে ছিল। দিন দিন বাড়ছিল দখলের পরিধি সাথে বাড়ছিল নগরবাসীর বিড়ন্বনা। দখলকারীরা এসব স্থানকে নিজের বাপদাদার সম্পত্তির মতো ব্যবহার করছিল। অবশ্য এদের পেছনে ছিল প্রভাবশালী চক্র। এসব স্থান হতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দিতে হতো মাসোহারা। আর এ চক্র ছিল রাজনৈতিক পরিচয়ের আবরণে মোড়া। কোথাও সরকারী দল বিরোধীদল সমঝোতা করে চলছিল।
নগরীর এমন একটা রাস্তা ফুটপাত ছিলনা যা ছিল দখল মুক্ত। ফুটপাতের ছোট ছোট ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের কথা বাদ দিলেও রাস্তার ধারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা নিজ দোকান বাদেও সামনের ফুটপাত এমনকি তা ছাড়িয়ে রাস্তা পর্যন্ত দখল করেছিল। অবস্থা এমনও হয়েছিল নিজ ঘরের চেয়ে সামনের দখলের অংশটা ছিল বেশী। ফুটপাত ড্রেন রাস্তা দখল করে পাকা স্থাপনা বানিয়েছিল।
নগরীর প্রাণকেন্দ্রে ঐতিহাসিক ভ‚বনমোহন পার্ক। যেখানে এক সময় ছিল সভা সমাবেশ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার স্থান। সেখানে সভা সমাবেশ করেছেন দেশ বরেণ্য নেতারা। সেই ঐতিহাসিক ভূবনমোহন পার্কটি মুড়ে গিয়েছিল জুতো স্যান্ডেলে। বাইরে থেকে বোঝার উপায় ছিলনা এখানে একটি ছোট পার্ক ছিল। ভেতরে চলতো মাদকসহ নানা অসামাজিক কর্মকান্ড। এবারের অভিযানে সব দফারফা হয়ে গেছে। প্রেসক্লাবের সামনে থেকে দক্ষিণে গণকপাড়া পর্যন্ত রাস্তার অর্ধেকটা জুড়ে ছিল কাপড়ের দোকান। সেগুলো আর না থাকায় চওড়া রাস্তা জানান দিচ্ছে তার অস্তিত্ব। আর পাশের টাইলস মোড়ানো ফুটপাত হোটেল রেস্তোরার কিচেন হিসাবে ব্যবহার হচ্ছিল।
নামে গ্রেটার রোড হলেও দু’পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দখলের কারণে তা সরু রাস্তায় পরিণত হয়েছিল। এখন খানিকটা চওড়া মনে হচ্ছে। নগরীর রাস্তাঘাট, শহররক্ষা বাঁধের অবৈধ দখল আর জনভোগান্তি নিয়ে দৈনিক ইনকিলাবেও বেশকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সরেজমিন রাস্তা ফুটপাত পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল প্রখ্যাত কন্ঠ শিল্পী নির্মলা মিশ্রের জনপ্রিয় গান ‘এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না যাতে মুক্তা আছে’। তেমনি এমন একটি রাস্তা ফুটপাত খুঁজে পাওয়া যায়নি যা দখলমুক্ত ছিল। এখন অবশ্য অভিযানের পর উল্টোটি বলা যায়।
মেয়র বলেন ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা নিয়ম মেনে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারবেন। তবে রাস্তা দখল করে নয়্। চাইলে সবাই মিলে বিকল্প একটা গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা করা যেতে পারে। নগরবাসী এমন অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে বলছে এমন পরিচ্ছন্ন অবস্থার যেন ধারাবাহিকতা থাকে। কেননা অতীতে বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে সাময়িক শাসনামলে অভিযান চালিয়ে অবৈধ দখল উচ্ছেদ হবার পর ফের পুরানো অবস্থায় ফিরে যায়। এমনটি যেন আর না হয়। সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এতদিন ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় অভিযান চালানো যায়নি। এখন সে সমস্যা নেই। আর মেয়রসহ সকল কাউন্সিলরও জিরো টলারেন্সের পক্ষে। শুধু ফুটপাত ড্রেন রাস্তা নয়। নগর জীবন ব্যাহত করে এমন সব কিছুর ব্যাপারে তারা সজাগ থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।