Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৫ দফায় লাগাতার আন্দোলনে যাচ্ছে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

সেশনজট নিরসন, ত্রুটিমুক্ত ফল প্রকাশ,স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবনসহ পাঁচ দফা দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত রাজধানীর সরকারী ৭ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার এ দাবিতে দিনব্যাপী মানববন্ধন ও নীলক্ষেত মোড়ে ৪ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে দাবি আদায় হওয়ার আগ পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলনের নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন ঢাকা কলেজের ছাত্র আবু বকর। তিনি জানান,আজকের (বুধবার) মধ্যে পাঁচ দফা দাবি পূরণের ঘোষণা না দেয়া হলে বুধবার বেলা ১১টা থেকে নিউমার্কেট সড়কে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে ঢাকা কলেজের গেটের সামনে আমরণ অনশন করছেন ঢাকা কলেজের তিন শিক্ষার্থী।
পূর্বঘোষিত পাঁচ দফা দাবি আদায়ে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ঢাকা কলেজের প্রধান ফটকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে নীলক্ষেত মোড়ে এসে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হচ্ছে- পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ত্রুটিমুক্ত ফল প্রকাশসহ একটি বর্ষের সব বিভাগের ফল একত্রে প্রকাশ করতে হবে; ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স সব বর্ষের ফল গণহারে অকৃতকার্য হওয়ার কারণ প্রকাশসহ খাতার পুনঃমূল্যায়ন করতে হবে; সাত কলেজ পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবন; প্রতি মাসে দুদিন করে সাত কলেজের প্রত্যেকটা বিভাগে মোট ১৪ দিন ঢাবির শিক্ষকদের ক্লাস নিতে হবে এবং সেশনজট নিরসনের লক্ষ্যে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশসহ ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকাকালে তাঁদের পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা দেখা দেয়। হঠাৎ করে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার পর তাঁরা ভেবেছিলেন সেশনজট কমবে। একই সঙ্গে শিক্ষার মানও বাড়বে। এর কিছুই হয়নি। শিক্ষার্থীরা বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের আরও বেশি সেশনজটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ফলাফলও তারা ৯০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করতে পারছে না। ত্রুটিযুক্ত ফলাফলও তারা প্রকাশ করছে। শিক্ষার্থীরা এসবের সমাধান চান। তারা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এর আগেও তাদের অনেক আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এর কোনো বাস্তবায়ন তাঁরা দেখেননি। তাঁর অফিসে গিয়েও অনেকবার স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে, এতে কোনো কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আমাদের অধীনে পরিচালিত যেসব সেশন শুরু হয়েছে, এতে কোন জট নেই। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থাকাকালে যেসব সেশন আমাদের অধীনে দেয়া হয়েছে, লোকবল কম থাকায় তা পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে অচিরেই তা কেটে যাবে। তিনি বলেন, ছাত্ররা না বুঝে আন্দোলন করলেই হবে না, আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
আমরণ অনশনে ৩ শিক্ষার্থী: এদিকে, পাঁচ দফা দাবিতে আমরণ অনশন করছেন ঢাকা কলেজের তিন শিক্ষার্থী। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা কলেজের গেটের সামনে অনশন শুরু করেন তারা।
আমরণ অনশনে যাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র আবু নোমান রুমি, ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র সাকিব এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম। তারা জানান, যতক্ষণ পর্যন্ত পাঁচ দফা দাবি মানা না হবে, ততক্ষণ তারা আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এসে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে তবেই অনশন তুলে নেবেন তারা।
প্রসঙ্গত,শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং সরকারি বাঙলা কলেজ। একই বছর পরীক্ষার রুটিনের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে দুই চোখ হারায় তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ