Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অন্য গ্রুপের সাথে রাজনীতি করায় ছাত্রলীগ কর্মীকে নেতার মারধর

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

অন্য গ্রুপের রাজনীতি করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলে এক ছাত্রলীগ কর্মীর গায়ে হাত তুলেছে হল সংসদের জিএস (সাধারণ সম্পাদক) নাজমুল হাসান নিশানের কর্মীরা। রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে হলের মিনি গেষ্টরুমে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন জিদ্দা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী। জিএস-এর উপস্থিতিতে জিদ্দার গায়ে হাত তুলা হয় বলে জানা যায়।
সূত্র জানায়, জুবায়ের হোসেন জিদ্দার বাড়ি ঝিনাইদহে। অন্যদিকে বিজয় একাত্তর হলের জিএস নাজমুল হাসান নিশানের বাড়িও একই জেলায়। জুবায়ের হলে ছাত্রলীগের খুলনা গ্রুপের রাজনীতি করে। তারা উভয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের অনুসারী। এছাড়া নিশান আগে সাবেক ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সের অনুসারী ছিল বলে জানা গেছে। হল সংসদের জিএস হওয়ার পর থেকে নিশানদের গ্রুপে মনোমালিন্য শুরু হয়। নিশান সকল গ্রুপে তার একক আধিপত্য স্থাপন করার চেষ্টা করছিল। অন্যদিকে একই গ্রুপে একাধিক নেতা থাকার কারনে জুবায়ের রাজিবের অনুসারী ছিল। ‘জুবায়ের কেন রাজিবের অনুসারী, তার নয়’ এর জের ধরে জিসানের উপস্থিতিতে তার অনুসারি অন্য নেতাকর্মীরা জুবায়েরের গায়ে হাত তুলে। পরে ‘চেইন অব কমান্ড’ না মানার অভিযোগে হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে। তারা স্ট্যাম্প নিয়ে হল গেইটে অবস্থান নেয়। এসময় তারা ‘জিএস ভুয়া’ বলে স্লোগান দেয়।
সূত্র আরও জানায়, গত শুক্রবার জুমার নামাজের আগে বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিশিরকে হলের যমুনা ৩০০২ নম্বর কক্ষে (নিশানের কক্ষ) নিয়ে যায় চতুর্থ বর্ষের তোফায়েল ও তৃতীয় বর্ষের নাহিদ। সেখানে শিশিরকে রাজীবের রাজনীতি ছেড়ে নিশানের রাজনীতি করার নির্দেশ দেয়া হয়। নইলে এর ফল ভালো হবে না বলে জানানো হয়। এ বিষয়ে শিশির বলেন, সেখানে গেলে আমাকে প্রথমে রড দেখিয়ে শাসান হলের জিএস নিশান। পরে খাটের নিচে একটি অস্ত্র দেখিয়ে বলেন, আমার সঙ্গে রাজনীতি না করলে তোকে গুলি করে শেষ করে দিব। আরও বলেন, চিনস আমারে! আমি এখন সরকারি লোক (হল সংসদের নেতা হিসেবে)। আমি কান্না শুরু করলে ফারিয়াল ভাইসহ অন্যরা আমাকে নিশানের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিচে পাঠিয়ে দেয়।
রবিবার রাতে হামলার বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন জিদ্দা বলেন, হলে থাকতে হলে হলের ইমিডিয়েট সিনিয়রদের অনুসরণ করার একটা রেওয়াজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। রবিবার রাতে হলের বাইরে গেলে হলের খুলনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের কিছু ভাই আমাকে ডাকছিল। আমি তাদের চেইন অব কমান্ডের কথা স্মরণ করিয়ে দিলে কিছু ভাই আমাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মিনি গেষ্টরুমে নিয়ে যায়। এখানে নিয়ে হলের জিএস নাজমুল হাসান নিশানের উপস্থিতিতে অন্যান্যরা আমাকে মারধর করে।
তবে, বিষয়টি অস্বীকার করে নাজমুল হাসান নিশান বলেন, আসলে সিনিয়র কেউ জুনিয়রের গায়ে হাত তুলেনি। তবে রাব্বি, শাহরিয়ার, শাওনসহ আরও কয়েকজন জুনিয়র সিনিয়রের গায়ে হাত তুলেছে। বিষয়টা ঘটার সময়ে আমি হলে ছিলাম না। আমার অনুস্থিতিতে বিষয়টি ঘটেছে। তিনি বলেন, আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। হলে কিছু বখাটে থাকে যারা এসব কাজ করছে। তারা স্ট্যাম্প নিয়ে হল গেইটে অবস্থান করেছিল। যারা আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, তারাই জুনিয়রদের দিয়ে এসব কাজ করাচ্ছে। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, এটা যদি ঘটে থাকে তাহলে খুবই দুঃখজনক। এর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিকভাবে যা ব্যবস্থা নিতে হয় আমরা নিব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ