Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

একই পরিণতি বাবা-ছেলের

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আজ থেকে ঠিক ১৫ বছর আগে বগুড়ায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছিল পুলিশের খাতায় পেশাদার খুনি হিসেবে তালিকাভুক্ত বগুড়া শহরের খান্দার শহীদ নগর এলাকার বাসিন্দা লিয়াকত আলী (৫০)। তখন নিহত লিয়াকতের রক্তাক্ত লাশ ছুঁয়ে তার ১০/১১ বছর বয়সী কিশোর ছেলে রাফিদ আনাম স্বর্গ আর্তনাদ ও শপথ করে বলেছিল একদিন সে বাবার হত্যার বদলা নেবে। ওই সময়ে শোক সন্তপ্ত ক্ষুব্ধ এক কিশোরের বিলাপকে কেউ আমলে নেয়নি। তবে পরবর্তীতে লিয়াকত পুত্র স্বর্গ লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে বাবার পথে হেঁটে বাবার মতই সন্ত্রাসী হযে উঠেছিল। খ্যাতিও পেয়েছিল ভাড়াটে কিলার হিসেবে। ফলে ১৫ বছর পর তার পরিণতিও হয়েছে বাবার মতই। লিয়াকত আলী ২০০৩ সালে বগুড়ার কোটিপতি ব্যবসায়ী আবুল কাশেম খান হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কদিন পরেই জামিনে বের হয়। এর ২০০৪ সালের ১০ অক্টোবর রাতে বগুড়া সদরের মাটিডালি বিমান মোড়ের পুর্বপাড়ের নির্জন জায়গায় পুলিশের ভাষায় সন্ত্রাসীদের সাথে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধ চলার সময়ে ক্রসফায়ারে পড়ে নিহত হয়। ওই ঘটনার পর ধামাচাপা পড়ে যায় কাশেম খান হত্যা কান্ডের বিষয়টি ।
এর ঠিক ১৫ বছর পরে ওই মাটিডালি বিমান মোড়েরই পুর্বদিকের এক নির্জন স্থানে মাঝরাতে নিহত হল লিয়াকত পুত্র রাফিদ আনাম স্বর্গ (২৬)। ১৪ এপ্রিল রাতে বগুড়ার কোটিপতি পরিবহন ব্যাবসায়ী ও বিএনপি নেতা এ্যাড, মাহাবুব আলম শাহীন হত্যাকান্ডে বিশেষভাবে সন্দিগ্ধদের তালিকায় ছিল স্বর্গ। নিহত স্বর্গকে কে বা কারা শাহীন হত্যাকান্ডের রাতেই উঠিয়ে নিয়ে গেছে মর্মে বগুড়া সদর থানায় একটি লিখিত আবেদনও করে তার পরিবার।
তবে পুলিশ দুই দল সন্ত্রাসীর ‘গোলাগুলি’তে শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসী রাফিদ আনাম ওরফে স্বর্গ (২৬) নিহত হওয়া প্রসঙ্গে প্রেসকে জানায়, ‘বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাত দেড়টার দিকে বগুড়া পৌরসভার আওতাধীন উপশহর এলাকায় সুবিল খালের ওপর ধুন্দাল এলাকার সেতুর কাছে দুদল সন্ত্রাসীর‘গোলাগুলি’র ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল উপস্থিত হয়ে সেখান থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, এক রাউন্ড গুলি ও বর্মিজ চাকুসহ গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত অবস্থায় স্বর্গ এর লাশ উদ্ধার করে ।
নিহত স্বর্গ সম্পর্কে পুলিশ আরো জানায়, সে তাদের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছিল। তার বিরুদ্ধে দুটি হত্যাসহ মোট ৮টি মামলা চলমান আছে।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক ও এলাকাবাসি সূত্র থেকে জানা যায়, একাধিক মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে ২০১৬ সালে গ্রেফতার হয়ে কারাগারেই আটক ছিল স্বর্গ। প্রায় এক মাস আগে সে জামিনে বের হয়ে আসে এবং আবারও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে । শাজাহানপুরের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়েও মারপিট করে সে। এছাড়া বিএনপি নেতা শাহীন হত্যাকান্ডের আগে তার জামিনে বের হয়ে আসাটাও সন্দেহজনক বলে মনে করছে পুলিশ ।
এছাড়া ৮ বছর আগে ২০১১ সালে বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় প্রগ্রেস কোচিং সেন্টারে সে প্রথম কন্ট্রাক্ট কিলিং ঘটায়। ওই কোচিং সেন্টারের মালিকানা নিয়ে দ্ব›েদ্ব কোচিং সেন্টারের মূল মালিকের সাবেক স্ত্রী ও প্রতিপক্ষ তন্দ্রা ম্যাডাম এর পক্ষে ভাড়াটিয়া হিসেবে সে শরিফুল আলম নামে একজনকে খুন করে। এর এক বছরের মাথায় ২০১২ সালের মাঝামাঝি সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজের ছাত্র নিরঞ্জন চক্রবর্তী দীপু হত্যাকান্ডে তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে।



 

Show all comments
  • Ali Raj ২১ মে, ২০১৯, ৭:১৮ এএম says : 0
    Allah Is The One
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ