পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাজার ছাপিয়ে সড়কের দুই পাশে বসে বৈশাখী মাছের মেলা। হাজারো মানুষের কলরবে মুখরিত হয়ে ওঠে কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী রাজগঞ্জ, মোগলটুলি এলাকা। রাজগঞ্জ বাজারের মাছের মেলায় এ অঞ্চলের লোকজন খুঁজে পায় বাঙালি ঐতিহ্যের ছোঁয়া।
পহেলা বৈশাখের সকালে বাতাসে ছড়িয়ে পড়া হাজারো মাছের আঁশটে ঘ্রাণ জানান দেয় এটি রাজগঞ্জ বাজারের মাছের মেলা। যার পরিধি ঠেকেছে বাজার এলাকার দেড় কিলোমিটার সড়কে। মৎস্যখাতে বিপ্লব সৃষ্টি করা কুমিল্লা জেলায় কেবলমাত্র নগরীতেই নববর্ষের প্রথমদিন ও দ্বিতীয়দিন গতকাল সোমবার প্রায় ১৫ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে।
ঐতিহ্য ও বিশেষত্বের জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জের বৈশাখী মাছের মেলা। যুগ যুগ ধরে বৈশাখী মাছের মেলার ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছে রাজগঞ্জের মৎস্য ব্যবসায়িরা। পহেলা বৈশাখ ঘিরে রাজগঞ্জ মৎস্য বাজারের ভেতর ছাপিয়ে মাছের মেলা স্থান করে নেয় এক সময়ের ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের দুইপাশে মোগলটুলির পূর্বদিকের মোরগবাজার, থানা রোড হয়ে পশ্চিমদিকে প্রধান ডাকঘর পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা। বৈশাখের প্রথমদিন ভোরের সুর্য উঠার আগেই মৎস্য আড়তগুলোতে হাকডাক শুরু। আর ভোর ছয়টা থেকেই বিক্রেতারা বড় থালা-ঢালায় মাছ সাজানোর কাজ শুরু করেন। বৈশাখের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে রাজগঞ্জ বাজার ও সংলগ্ন সড়কে মাছের মেলার এমন দৃশ্য কেবল ক্রেতাই নয়, শিশু-কিশোরাও উপভোগ করেছে। বৈশাখী মাছের মেলা নতুন প্রজন্মের চোখে সৃষ্টি করেছে বিস্ময়। অনেকে বড় আকারের মাছের সাথে সেলফি তুলে উল্লাস প্রকাশ করেছে।
কুমিল্লা নগরীর প্রধান বাজার রাজগঞ্জ ছাড়াও রাণীর বাজার, বাদশা মিয়ার বাজার, চকবাজার, টমসমব্রীজ, মগবাড়ি চৌহমুনী ও পদুয়ার বাজারের মাছের মেলায় ছিল ক্রেতা ও উৎসুক মানুষের উপচেপড়া ভিড়। গত রোববার পহেলা বৈশাখ উদযাপন হয় সারা দেশে। ওইদিন অনেকেই মাছের মেলায় পা রাখেন। গতকাল সোমবার সনাতন ধর্মের লোকজন রাজগঞ্জসহ নগরীর অন্যান্য বাজারে বড় আকারের মাছ কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন।। দুইদিনেই নগরীর বাজারগুলোতে ভোর ৬টা থেকে বিকেল পর্যন্ত কাতল, রুই, চিতল, ব্রিগেড, ঘাসকার্প ও বোয়াল মাছের মেলা জমে উঠে। দুই কেজি থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ বিশ কেজি ওজনের মাছ বিক্রেতাদের থালায়-ঢালায় ঠাঁই পেয়েছে।
এবারে মাছের দামও ছিল নাগালের মধ্যে। তিনশো থেকে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে মাছ। আবার বড় বড় হাফড্রামে পানিতে রেখে জীবিত মাছও খুশি মনে কিনেছেন ক্রেতারা। এসব মাছ যশোর, রাজশাহী, খুলনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ভৈরব, আশুগঞ্জ থেকে ট্রাকযোগে ‘বিশেষ পদ্ধতিতে’ জীবিত রেখে বাজারে আনা হয়। দেশিয় মাছ দাউদকান্দি, চান্দিনা, দেবিদ্বার, লাকসাম, ব্রাহ্মণপাড়া থেকে রাজগঞ্জসহ নগরীর অন্যান্য বাজারে স্থান পায়। নগরীতে রাজগঞ্জ, চকবাজার, নোয়াপাড়ায় প্রায় ৩৫টি মাছের আড়ত রয়েছে। আড়তের বাইরে পুকুর-দিঘী থেকে ধরা মাছও বাজারে তুলেছেন বিক্রেতারা।
মাছ বিক্রেতা আনিস জানান, সে রাজগঞ্জ বাজারের ভেতরে মাছ বিক্রি করে। পহেলা বৈশাখ ঘিরে তারা কয়েকজন মিলে সড়কের পাশে ঢালা পেতে বসেছে। দেবিদ্বার, মুরাদনগর, ব্রাহ্মণপাড়া থেকে তারা মাছ আনেন। মাছের দাম কম-বেশি বড় কথা নয়, বৈশাখের প্রথম ও দ্বিতীয়দিন সবাই আনন্দের সঙ্গে মাছ কিনে থাকেন।
নগরীর রাজগঞ্জ বাজারের মৎস্যআড়ত আবেদীর এন্টারপ্রাইজের মালিক জয়নাল আবেদীন জানান, এবারের নববর্ষের প্রথম ও দ্বিতীয়দিন রাজগঞ্জে যে পরিমান মাছ স্থান পেয়েছে তা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় ধনী-গরীব সবাই ছোট-বড় সাইজের মাছ কিনেছে। রাজগঞ্জসহ নগরীর অন্যান্য বাজারগুলোতে পহেলা বৈশাখ ও পরেরদিন প্রায় ১৫ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে ৮০ভাগই বিক্রি হয়েছে কাতল মাছ। মুলত বৈশাখে মাছের মেলায় কাতলের দিকেই ক্রেতাদের দৃষ্টি বেশি পড়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।