পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্ষুদ্রঋণের অপব্যবহার বন্ধে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার। সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম এবার এক ছাতার নিচে আনতে এ নীতিমালা জারি করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের লক্ষ্যে সারা দেশের গ্রাম ও শহর এলাকাকে পর্যায়ক্রমে দারিদ্র্যমুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি গ্রামে সমন্বিত সঞ্চয় ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং ২০৩০ সালে দারিদ্র্য ও ভিক্ষুকমুক্ত গ্রাম করতে জাতীয় সমন্বিত সঞ্চয় ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নীতিমালা-২০১৯ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে দেশের সব গ্রামকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত গ্রামে পরিণত করার লক্ষ্যে এক ছাতার নিচে আনতে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের নিদেশনা প্রদান করেন। এ লক্ষ্যে নীতিমালাটি চূড়ান্ত করতে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করা হয়। বিষয়টি সার্বিকভাবে মনিটরিং করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সংশ্লিষ্ট কমিটির বৈঠকে খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সঞ্চয় ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সমন্বয়ের মাধ্যমে সারা দেশে প্রতিটি গ্রাম থেকে শহর এলাকাকে সুসংগঠিত টেকসই, আত্মনির্ভরশীল দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত, ভিক্ষুকমুক্ত এলাকা রূপান্তর করার জন্য দ্বৈততা পরিহার করার প্রয়োজন। সমন্বিত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়নে প্রধানমন্ত্রী নীতিগত সম্মতি দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতহারের আলোকে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ এ অঙ্গীকার পূরণের লক্ষ্যে সারা দেশের গ্রাম ও শহর এলাকাকে পর্যায়ক্রমে দারিদ্র্যমুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
নীতিমালায় আরো বলা হয়, বর্তমান সরকার আগামী ২০৩০ সালে দারিদ্র্য ও ভিক্ষুকমুক্ত গ্রাম বাস্তবায়নের জন্য সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি অন্যান্য মন্ত্রণালয় দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এতে করে একই ব্যক্তি একাধিক মন্ত্রণালয়ের ঋণসুবিধা গ্রহণ করছেন। আবার ঋণ পাওয়ার যোগ্য অনেকেই ঋণসুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর ফলে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে একই ছাতার নিচে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হলো। জাতীয় সমন্বিত সঞ্চয় ও ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হযেছে। এতে অর্থমন্ত্রীকে আহ্বায়ক করা হয়। আর সদস্য করা হয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী এবং দুর্যোগ ব্যস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী। এ ছাড়া কোনো মন্ত্রী না থাকলে তখন প্রতিমন্ত্রী সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবেন। বর্তমানে সরকারের ৯টি দফতর ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সেগুলো হচ্ছে- সমাজসেবা অধিদফতর, আমার বাড়ি, আমার খামার, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি), মহিলা বিষয়ক অধিদফতর, সমবায় অধিদফতর, মৎস্য অধিদফতর, যুব উন্নয়ন অধিদফতর, প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ও বাংলাদেশ কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)। এসব প্রতিষ্ঠান তহবিল থেকে সমন্বিত পদ্ধতি অনুসরণ করে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে, যা বিতরণ করা হয় উপজেলা কমিটির মাধ্যমে। সুদমুক্ত ঋণ ও সামাজিক নিরাপত্তায় ভিন্নতা রয়েছে। এখন থেকে সারা দেশে এ ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এজন্য প্রতিটি উপজেলায় থাকবে সমন্বিত ক্ষুদ্রঋণ বাস্তবায়ন কমিটি। ১২ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটির প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর উপজেলা কর্মকর্তা এর সদস্য হিসেবে থাকবেন। তবে কোনো জনপ্রতিনিধিকে এ কমিটিতে রাখা হয়নি। তারা শুধু উপদেশ বা পরামর্শ দিতে পারবেন। কেননা জনপ্রতিনিধিকে কমিটিতে সম্পৃক্ত করা হলে যথাযথভাবে নীতিমালা মেনে চলা কঠিন হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, এ খাতে সরকারের সব বিভাগ থেকে পাওয়া অর্থের ওপর ভিত্তি করে গ্রামের অগ্রাধিকার তালিকা প্রণয়ন করা। এজন্য গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করে সুবিধাভোগী পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করা। প্রতি পরিবার থেকে ১ জন করে সদস্য নিয়ে ২০-২৫ জনের কর্মদল গঠন করা, যারা দলভিত্তিক ঋণ নিয়ে বিভিন্ন স্কিম বা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে স্বাবলম্বী হবে। এ ছাড়া ব্যক্তিপর্যায়েও ঋণ দেয়া হবে। সেক্ষেত্রে তিনি যে বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তাকে সে খাত থেকে ঋণ দেয়া হবে। নামমাত্র সার্ভিস চার্জ ছাড়া সরকার ঋণের বিপরীতে কোনো সুদ নেবে না। আর যে সার্ভিস চার্জ নেয়া হবে, সেটিও দলভিত্তিক কমিটির ফান্ডে গচ্ছিত থাকবে। তাদের সঞ্চয় করা তহবিলের সঙ্গে এটি যুক্ত হবে।
উপজেলা সমন্বিত ক্ষুদ্রক্ষণ বাস্তবায়ন কমিটির সব কার্যক্রম জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক গঠিত কমিটি তদারক করবে। এ ছাড়া ডিসি অফিস থেকে এ বিষয়ে মাসিক প্রতিবেদন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাতে হবে। একটি উপজেলার সব ক’টি গ্রাম প্রথমেই একসঙ্গে এ কর্মসূচির আওতায় আসবে না। আবার নির্বাচিত গ্রামের সব দরিদ্র লোক একসঙ্গে এ ঋণসুবিধা পাবেন না।
বার্ষিক গড় আয়ের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোকে তিন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। যাদের বার্ষিক আয় ১ লাখ টাকা তারা ‘ক’ শ্রেনীতে, ১ লাখ ১ টাকা থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত তারা ‘খ’ শ্রেণী এবং অসচ্ছল ২ লাখ ১ টাকা থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা যাদের বার্ষিক আয় তাদের ‘গ’ শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। এরপর যারা তুলনামূলক বেশি দরিদ্র বা অসচ্ছল তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগে ঋণ দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।