Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চার সিবিএ নেতার সম্পদের পাহাড়!

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

দুই সরকারি প্রতিষ্ঠানের চার সিবিএ (কালেকটিভ বার্গেনিং এজেন্ট) নেতার অঢেল সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে সংস্থাটি। তাঁরা হলেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সিবিএ সভাপতি আবুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সিবিএ সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন মিয়া। নিয়োগ-বদলি, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও বেনামে ঠিকাদারি ব্যবসাসহ নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, এর মধ্যে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে সম্পদের হিসাব চাওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের দুদকে তলবও করা হয়েছে। তবে তাঁদের সবাই বলেন, সিবিএর নেতৃত্ব থেকে সরাতে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনই তাঁদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন এসব অভিযোগ করেছেন। পিডিবির সিবিএ সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী সংস্থার সাবেক সহকারী হিসাবরক্ষক। সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন সাবেক স্টেনো টাইপিস্ট। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও তাঁরা সংস্থার যুগ্ম সচিব মর্যাদার কর্মকর্তাদের ব্যবহারযোগ্য পাজেরো গাড়ি ব্যবহার করতেন। অবসরে যাওয়ার দীর্ঘদিন পরও গাড়ি দুটি তাঁদের দখলে ছিল। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দুদক ওই গাড়ি দুটি তাঁদের দখল থেকে উদ্ধার করে পিডিবির পরিবহন পুলে জমা দেয়। ওই সময় দুদক জানিয়েছিল, এ দুজনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার ও সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক খলিলুর রহমান ১৭ এপ্রিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের দুদকে তলব করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অনেক দিন ধরে সিবিএর নেতৃত্বে থেকে বোর্ড প্রশাসনের ওপর খবরদারি ও অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়, সিবিএ সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ি অফিসার্স কোয়ার্টারে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত এ ক্যাটাগরির একটি বাসা ১০ বছর ধরে নিজ দখলে রেখে সরকারের লাখ লাখ টাকা ক্ষতি করেছেন। পিডিবির ভলিবল কোচ হিসেবে প্রতিবছর তিন লাখ টাকার অতিরিক্ত সুবিধা নিয়ে সংস্থার আর্থিক ক্ষতি করেছেন। দক্ষিণ বাড্ডা আফতাব নগরের উত্তর পাশে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের ফতেপুরে তিনতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ ও একটি ইটভাটা করেছেন। রাজধানীর কুড়িলে একটি কারখানা রয়েছে তাঁর।
বিআইড্িউটিএর দুই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়: বিআইডব্লিউটিএর সিবিএ সভাপতি আবুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে যেসব সুনির্দিষ্ট অভিযোগ, তার সপক্ষে সংশ্লিষ্ট নথিপত্রও পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক।
গত ১৩ ফেব্রুুয়ারি রফিকুল ইসলামকে সম্পদ বিবরণী জমা দেয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশে তাঁদের পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও পরিবারের সদস্যদের সব সম্পদ, ব্যাংক হিসাবসহ ১২ ধরনের তথ্য চাওয়া হয়। পাশাপাশি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ এপ্রিল তলব করা হলেও তিনি দুদকে হাজির হননি। আবুল হোসেনও তাঁর সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন। তবে দুই সিবিএ নেতাই বলেন, যেসব অনুসন্ধান হচ্ছে, তা নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। কিন্তু যাঁরা অভিযোগ করেছেন, তাঁরা বিএনপি-জামায়াতের লোক। সিবিএ থেকে আমাদের সরানোর চেষ্টায় মনগড়া অভিযোগ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ