পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম নগরীর প্রধান সড়কের বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত এলিভেটেডে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে। সড়কে শুরু হয়েছে খোঁড়াখুঁড়ি। প্রায় তিন বছর ধরে চলছে পোর্ট কানেকটিং রোডের সম্প্রসারণ। আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের সংস্কার কাজও চলমান।
ব্যস্ততম বহদ্দারহাট থেকে কর্ণফুলী সেতু সংযোগ সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে কয়েক বছর ধরে। বহদ্দারহাট থেকে সিএন্ডবি, কাপ্তাই রাস্তার মাথা হয়ে কালুরঘাট সড়কে ওয়াসার পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য একপাশ বন্ধ তিন বছর। অন্যপাশও যানবাহন চলাচলের অযোগ্য সেই তখন থেকে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন সড়ক আর অলিগলিতে পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য লাগাতার খোঁড়াখুঁড়ি করছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। সরকারি আরও কয়েকটি সংস্থাও রাস্তা কাটছে।
ফলে রাস্তায় নামলেই চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে নগরবাসীকে। কয়েকটি এলাকায় যানজট স্থায়ী রূপ নিয়েছে। রোদে ধুলোবালির আস্তরণ আর বৃষ্টিতে কাদা পানিতে সয়লাব হচ্ছে এসব এলাকা। উন্নয়ন কাজে ধীরগতিতে মানুষের দুর্ভোগের কোন শেষ নেই। বিশেষ করে বন্দর এলাকার পোর্ট কানেকটিং ও আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের বেহাল অবস্থার কারণে আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এসব সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ না হলে আসন্ন বর্ষায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে বছরের পুরো সময় চলছে সড়কে কাটাকাটি। জনদুর্ভোগ কমাতে সিটি মেয়রের উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে সেবা সংস্থাগুলোকে নিয়ে সভা করা হয়। তবে তাতেও তেমন সুফল মেলেনি।
দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বন্দর নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পোর্ট কানেকটিং রোডের সম্প্রসারণ কাজ চলছে ধীরগতিতে। খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সড়কে বড় বড় গর্ত। ভারী যানবাহন আটকে সড়কে নিত্য যানজট হচ্ছে। প্রতিদিন আট থেকে দশ হাজার আমদানি-রফতানি পণ্যবাহি যানবাহন ওই সড়কে চলাচল করে। যানজট এড়াতে ওই সড়ক এড়িয়ে চলায় বন্দর ব্রিজ থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত টোল রোডে ভারী যানবাহনের চাপ বেড়ে সেখানেও যানজট হচ্ছে। চরমদুর্ভোগে অনেকে সড়কের পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিয়েছে। অনেকে বাসা ছেড়ে দিয়ে অন্য এলাকায় চলে গেছেন। সড়কের দুই পাশে ব্যবসা-বাণিজ্য হয়ে পড়েছে স্থবির।
জাইকার অর্থায়নে সড়কের উন্নয়ন কাজ চলছে। ছয় লেনের ১২০ ফুট প্রশস্থ ২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের উন্নয়নকাজে ব্যয় হচ্ছে ১০০ কোটি টাকা। সড়কের সংস্কার কাজ দ্রæত শেষ করার দাবিতে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা দফায় দফায় মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। গত ৭ এপ্রিল কাজের অগ্রগতি দেখতে যান সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
এ সময় উপস্থিত কর্মকর্তারা মেয়রকে জানান, সড়কের ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে এ সড়কে মেকাডামের (পাথর বসানো) কাজ চলমান রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে এ কাজ শেষ হবে। এরপর কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হবে। উন্নয়নকাজ শেষ হবে মে মাসের মধ্যে। মেয়র বর্ষার আগেই কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন।
পোর্ট কানেকটিং সড়কের সাথে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার সংযোগ স্থাপনকারী আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের অবস্থাও বেহাল। স্থানীয়দের আন্দোলনের মুখে সিটি কর্পোরেশন ৪৮ কোটি ৯৬ লাখ ৬৬ হাজার ৮৪৮ টাকায় সড়কটির ২ দশমিক ২০ কিলোমিটার অংশের উন্নয়ন কাজ শুরু করে। চলতি বছরের মে মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার টার্গেট নির্ধারণ করা হয়। তবে যে গতিতে কাজ চলছে তাতে আগামী এক বছরেও কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়েও সংশয় স্থানীয়দের। সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ সম্প্রতি দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, বর্ষার আগেই সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করা হবে। কিছু কাজ বাকি থাকলেও তা বর্ষায় করা যাবে।
সব চেয়ে নাজুক অবস্থা নগরীর বহদ্দারহাট থেকে কালুঘাট পর্যন্ত সড়কের। চট্টগ্রাম ওয়াসার পাইপ লাইন বসানোর জন্য তিন বছর ধরে সড়কের একপাশ বন্ধ রেখে খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। অন্যপাশে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করায় সেখানেও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি উঠে যায়। আর ভারী বর্ষণে হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে যায় পুরো সড়ক। ফলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
প্রতিদিন শত শত যানবাহন আটকা পড়ছে। স্থায়ী রুপ নিয়েছে যানজট। ওয়াসা পাইপ লাইন বসানোর কাজ শেষ করলেও সিটি কর্পোরেশন এখনও সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করেনি। কর্পোরেশনের প্রকৌশলীরা বলছেন কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলে কাজ শুরু হবে। আর কাজ শেষ হতে অন্তত এক বছরের বেশি সময় লাগবে। ফলে ওই এলাকার মানুষের দুর্ভোগও ততদিন স্থায়ী হচ্ছে।
বহদ্দারহাট থেকে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত ছয় লেনের সংযোগ সড়ক সম্প্রসারণ ও সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে তিন বছর আগে। সে কাজও চলছে ধীরগতিতে। ফলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের অশেষ দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। প্রতিদিন ওই সড়কে শত শত যানবাহন চলাচল করে। সড়কে বড় বড় গর্ত আর নির্মাণ কাজের জন্য একাংশ বন্ধ করে দেওয়ায় যানজট স্থায়ী রূপ নিয়েছে। এদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ চলছে। সয়েল টেস্টের জন্য গত চার মাসের বেশি সময় ধরে সড়কের বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। মূল কাজ শুরু হয়েছে কাটগড় পয়েন্টে। সেখানে সড়কের মাঝখানে চলছে ড্রিলিং। দুই পাশের সরু অংশে চলছে যানবাহন। ফলে পতেঙ্গা এলাকায় গড়ে উঠা বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনালগুলো থেকে চট্টগ্রাম বন্দরমুখি ভারী যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। রাতে দিন যানজট হচ্ছে।
যানজট কমাতে ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য আউটার রিং রোড দ্রুত খুলে দেওয়ার কথা থাকলে তা হচ্ছে না। কারণ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএর ওই প্রকল্পটিও চলছে সম্ভুক গতিতে। তবে প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, বর্ষার আগেই আউটার রিং রোড যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। আউটার রিং রোডে এখন কার্পোটিংয়ের কাজ চলছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম ওয়াসা বিভিন্ন সড়কে পাইপ লাইন স্থাপন করছে। সড়ক ছাড়িয়ে অলিগলিতেও চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। ওয়াসা আগেই ঘোষণা দিয়েছে পাইপ লাইন বসাতে ২০২১ সাল পর্যন্ত তাদের এই খোঁড়াখুঁড়ি চলবে। ৬০০ কিলোমিটার পাইপ লাইন বসাতে নগরীর ১১শ কিলোমিটার সড়কের প্রায় পুরোটাই কাটছে ওয়াসা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।