পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং ওয়ান-ইলেভেন সরকারের আমলে সচিবদের দখলে এখনো রয়েছে সরকারি বাড়ি। নতুন সরকার গঠনের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো উঠতে পারেননি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। অনেকই ভাড়া বাসা এমপি হোস্টেল এবং নিজ বাড়ি থেকে অফিস করছেন। মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এখন ৪৬জন। অথচ তাদের বসবাসের জন্য সরকারি বাসা রয়েছে মাত্র ২৩টি। ফলে ৪৬ মন্ত্রী-প্রতমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর মধ্যে ২৩ এখনো কোনো সুবিধা পাননি। বাকি ২৩ জন মন্ত্রী সরকারি বাসা বরাদ্দ পেয়েছেন। কিন্তু বরাদ্দ করা বাসায় এখনও উঠতে পারেননি ১৩ জন। কারণ গত মন্ত্রিপরিষদের মেয়াদ শেষ হলেও সরকারি বাসা ছাড়েননি অনেক সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। এদিকে বাড়ি উদ্ধারে আইনীয় পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। গত ৯ এপ্রিল এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (বিধি, সেবা ও আইন) শফিউল আজিম ইনকিলাবকে বলেন, সরকারি বাসা না নিলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রতিমাসের বেতন-ভাতার টাকার সঙ্গে বাসা ভাড়াও পান মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা পেয়ে থাকেন।
এ ছাড়া ওয়ান-ইলেভেন সরকারের আমলে একাধিক সচিব মন্ত্রীদের বাসা বরাদ্দ নিয়ে পর্যায়ক্রমে বসবাস করে চলেছেন। মন্ত্রীদের আবাসন সংকট হলেও তাদের বাসা বদল হয়নি। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনী এলাকা থেকেই অফিস করছেন অনেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। বাসা স্বল্পতার কারণে আবেদন করে বাসা পাননি ছয় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। কয়েকজন মন্ত্রী আবাসন সংকটের কথা জানতে পেরে জানিয়েছেন, তাদের আপাতত বাসার প্রয়োজন নেই। কয়েকজন আবেদনই করেননি। দ্য মিনিস্টার্স, মিনিস্টার্স অব স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টার্স (রেমিউনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০১৬ অনুযায়ী, সরকারি বাসায় না থাকলে মন্ত্রীরা বাড়ি ভাড়া বাবদ ৮০ হাজার টাকা এবং প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা ৭০ হাজার টাকা পাবেন।
আবেদন করে বাসা না পাওয়া সাত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হলেন- বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, সংস্কৃতিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল। তাদের দেওয়ার মতো কোনো বাড়ি নেই বলে জানিয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আবাসন পরিদপ্তর। একই কারণে আরও ১৭ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বাসা বরাদ্দ দিতে পারেনি সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, সরকারি বাসার জন্য আবেদন করলেও এখনও পাইনি। সিদ্ধেশ্বরী বাসা থেকে প্রতিদিন অফিস করছি। আন্তর্জাতিক বা জাতীয় কোনো অনুষ্ঠান থাকলে সকালেই বাসা থেকে বের হই।
আবাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বসবাসের জন্য বর্তমানে ১৬টি বাংলো ও ১৭টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। আরো নতুন ১০টি অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করা হচ্ছে। এতে মন্ত্রীদের বসবাসের জন্য মোট বাসা হবে ৩৩টি। তবে নতুন ১০টি অ্যাপার্টমেন্টের কাজ শেষ করতে কয়েক মাস সময় লাগবে। এর মধ্যে মন্ত্রিসভার পরিধি আরও বাড়তে পারে। কারণ, সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া সদস্য ছিলেন ৫২ জন। আর বর্তমান মন্ত্রিসভায় সদস্য রয়েছেন ৪৬ জন। ফলে নতুন করে ১০টি অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি হলেও আরও প্রায় ২৫টি বাসা সংকট থাকবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম ইনকিলাবকে বলেন, মন্ত্রীদের আবাসন সংকট নিরসনের জন্য মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্ট বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে। যেসব মন্ত্রীর ঢাকায় নিজস্ব বাসা রয়েছে, তাদের সরকারি বাসা বরাদ্দ না দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। যারা বরাদ্দ পেয়েছেন তারা পর্যায়ক্রমে বরাদ্দকৃত বাসায় উঠবেন।
এ দিকে বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় জায়গা না পেলেও এখনো মন্ত্রী হিসেবে এখনও সরকারি বাসায় বাস করছেন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু (ছায়াবীথি-৬, নিলয় হেয়ার রোড), সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত (ছায়াবীথি-২ তন্ময় হেয়ার রোড), সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান (৫ নং মিন্টো রোড), সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ (৩৫নং মিন্টো রোড), সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল (৫ নং মিন্টো রোড), সাবেক মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ (মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্ট ১নং ভবনের ২য় তলা পশ্চিমাংশ) এবং সাবেক রেলপথমন্ত্রী মো. মজিবুল হক (২০ পার্ক রোড)। গত ৩ জানুয়ারি সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মারা গেলেও তার পরিবারের সদস্যরা এখনও ২১ বেইলি রোডের বাসায় বসবাস করছেন। মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্ট ১নং ভবনের ৪র্থ তলায় (পশ্চিমাংশ) বাস করছেন সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদার।
এ ছাড়া ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এবং পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান পুনরায় দায়িত্ব নেওয়ার পর অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বাংলোতে যাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু বাংলো খালি না হওয়ায় অ্যাপার্টমেন্টগুলোও খালি করেননি তারা। নতুন মন্ত্রীদের শপথের পরপরই তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি ২৩টি বাসা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু সাবেক মন্ত্রীরা বাসা না ছাড়ায় ১৩ জন নতুন মন্ত্রী বরাদ্দকৃত বাসায় উঠতে পারেননি।
২০০৬ সালের আগ পর্যন্ত কোনো সরকারের আমলেই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বাসভবন বরাদ্দে কোনো সংকট হয়নি। তবে ওয়ান-ইলেভেন সরকারের আমলে একাধিক সচিব মন্ত্রীদের বাসভবন বরাদ্দ নিয়ে পর্যায়ক্রমে এখনও বসবাস করছেন। সরকার বদল হলেও তাদের বাসা বদল হয়নি। ৯, ১০, ১১ ও ৩৮ মিন্টো রোডসহ আরও কয়েকটি বাসায় ২০০৬ সালের আগে মন্ত্রীরা বসবাস করলেও এখন সচিবরা বসবাস করছেন।
সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের পরিচালক শেখ আতাহার হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি বাসা আবাসন পরিদপ্তরের নেই। তাই অনেকে আবেদন করলেও বাসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।