পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পুলওয়ামা হামলার জবাবে বালাকোটে বিমান হামলা। চলল হুমকি, পাল্টা হুমকি। নির্বাচনে জিততে মোদি প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছিলেন পাকিস্তান বিদ্বেষ। জাতীয়তাবাদের জোয়ার তুলে নির্বাচনী প্রচারণায় অসংখ্যবার তুলেছেন বালাকোটের প্রসঙ্গ।
আর বিরোধীদেরকে সবসময় আখ্যা দিয়ে এসেছেন পাকিস্তান ও ইমরান খানের বন্ধু বলে। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগের দিন দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়ে তার সেই বিখ্যাত রিভার্স সুইংটি করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী প্রাক্তন ক্রিকেটার ইমরান খান! নরেন্দ্র মোদি আর তার দল বিজেপিকেই তিনি সমর্থন করছেন বলে ঘোষণা দিলেন। ফলে, বিজেপির জাতীয়তাবাদ অস্ত্র ফাটা বেলুনের মতো চুপসে গেল। মোদির বন্ধু হয়ে তার অস্ত্রেই তাকে ঘায়েল করতে ভারতের কোনঠাসা বিরোধী দলগুলোকে কার্যত সুযোগ করে দিলেন ইমরান খান।
গতকাল বুধবার ইমরান খান বললেন, ‘নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী মোদির দল জিতলে কাশ্মীর ইস্যুতে দু’দেশের মধ্যে ফের শান্তি আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা আর তা ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’ এইটুকু বলেই থামলেন না। কংগ্রেসের বিরোধিতা করে জানালেন, ‘ভোটে জিতে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কাশ্মীর সমস্যা যেমন ছিল, তেমনই থাকবে। কারণ, দক্ষিণপন্থীরা হইচই বাধাবেন এই ভয়ে কাশ্মীর সমস্যা মেটাতে কংগ্রেস ততটা এগোবে না। যেটা একমাত্র সম্ভব, যদি বিজেপির মতো কোনও দক্ষিণপন্থী দল ক্ষমতায় আসে।’ তবে তিনি মন্তব্য করেন, ‘মোদি নির্বাচনে জিততে চাইছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কায়দায়। ভয় দেখিয়ে। দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধের আবেগকে উস্কে দিয়ে।’
ইমরানের এই মন্তব্যের পরই তোলপাড় ভারতের রাজনীতি। এত দিন বিরোধীদের দিকে পাকিস্তান প্রেম এবং দেশদ্রোহিতার অভিযোগ তুলে নির্বাচনী প্রচারের ছক সাজাচ্ছিলেন মোদি-শিবিরের সেনাপতিরা। এরই মধ্যে ইমরানের এই মন্তব্যের পর কটাক্ষ, বিদ্রুপ আর সমালোচনা নিয়ে মোদি-শিবিরকে আক্রমণ করতে আসরে নেমে পড়েছে কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)।
বিরোধীদের কোণঠাসা করতে এবং নির্বাচনী বৈতরণী পেরোতে নরেন্দ্র মোদি এবং তার রাজনৈতিক শিবির এতদিন বলে এসেছে, ‘এই দেশে বিরোধীরা কথা বলেন পাকিস্তানের ভাষায়, পাকিস্তানে সেনা অভিযান হলে মুষড়ে পড়েন বিরোধীরা।’ বালাকোটে সেনা অভিযান নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠলে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেরি হত না বিজেপির প্রচার ব্রিগেডের। পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশকে টুকরো-টুকরো করতে আগ্রহী বিরোধীরা, এই অভিযোগও তোলা হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে, যার সমালোচনায় বিরোধীদের ‘টুকরে-টুকরে গ্যাং’ নামও দিয়ে ফেলেছে তারা।
এই প্রেক্ষিতে মোদির সমর্থনে ইমরানের মন্তব্য যেন নতুন অক্সিজেন পেল বিরোধী শিবির। বিজেপির এত দিনের সুরে সুর মিলিয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার টুইট, ‘পাকিস্তান সরকারি ভাবে মোদির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। মোদিকে ভোট দেওয়া মানে পাকিস্তানকে ভোট দেওয়া।’ একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘মোদিজি, প্রথমে নওয়াজ শরিফ আপনার বন্ধু ছিলেন। এখন ইমরানও আপনার বন্ধু। ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে গিয়েছে।’
জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি বিজেপি ব্রিগেডের প্রতি তীব্র কটাক্ষ হেনে টুইটে রিখেছেন, ‘ইমরান খানের এই মন্তব্যের পর মাথা চুলকোচ্ছেন মোদি ভক্তরা। ওরা বুঝতে পারছেন না, ইমরানকে সমর্থন করবেন কিনা।’ মুফতির সঙ্গে সরব জম্মু ও কাশ্মীরের আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লাও। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান সমর্থন করলে কী হত, একবার ভেবে দেখুন। এখন তা হলে টুকড়ে-টুকড়ে গ্যাং-এর সদস্য কারা?’ আসরে নামতে দেরি করেননি আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরীওয়ালও। মোদিকে উদ্দেশ করে তার প্রশ্ন, ‘মোদিকে জেতাতে কেন উৎসাহী পাকিস্তান? দেশ জানতে চায়, আপনার সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক কতটা গভীর। দেশ জানতে চায়, মোদি জিতলে কি পাকিস্তানে বাজি পোড়ানো হবে?’ সূত্র: এনডিটিভি, টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।