Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিয়েই ভূমি অধিগ্রহণ

একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী ১৮১৯১ কোটি টাকার ৭ প্রকল্প অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

সরকারি প্রকল্পের প্রয়োজনে ভূমি অধিগ্রহণে জমির মালিককে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে কৃষি জমি অধিগ্রহণ করে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী জমির দাম তিন গুণ পরিশোধের পাশাপাশি তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের নির্দেশনা দেন। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এসব নির্দেশনা দেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় ১৮ হাজার ১৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। উল্লেখ কয়েক মাস আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভূমি অধিগ্রহণে বাজারদরের তিনগুন বেশি মূল্য পরিশোধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বৈঠকের পর পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোনো প্রকল্পের জন্য কৃষি জমি বা গরীব মানুষ ও বর্গাচাষীদের জমি নেওয়া যাবে না। একান্তই যদি জমি নিতে হয়, তাহলে জমির দাম তিনগুণ দেওয়ার পাশাপাশি প্রকল্প শুরু আগেই তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। আগামীতে সরকারি প্রকল্পে অবশ্যই অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার পাশাপাশি ভবন যাতে খোলামেলা ভবন নির্মাণ করা হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন, ২০১৬’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই আইনে সরকারি সংস্থার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে বাজারদরের চেয়ে দুই গুন বেশি ক্ষতিপূরণ ভূমির মালিককে দেওয়া হতো। ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মতো লাভজনক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে ক্ষতিপূরণের হার ধরা হয় তিন গুণ বেশি। তবে ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল বিল-২০১৭’ সংসদে পাস করা হয়। এই আইনে হুকুমদখলের জমি অধিগ্রহণে মালিককে বাজারমূল্যের তিনগুন মূল্য পরিশোধের কথা বলা হয়েছে।
গতকাল একনেক সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় নেওয়া প্রকল্পগুলোতে যারা প্রকল্প পরিচালকের (পিডি) দায়িত্ব পালন করেন, তাদেরকে অবশ্যই প্রকল্প এলাকায় থাকতে আবারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পিডিরা যাতে সপরিবারের এলাকায় থাকেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে তাদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। পুকুর বা জলাশয় ভরাট না করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগুন লাগলে এসব পুকুর ও জলাশয়ের পানি কাজে দেয় প্রয়োজনে আরো বেশি করে পুকুর খননের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। পরিকল্পনমন্ত্রী বলেন, একনেকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে মাঠ পর্যায়ে থাকেন, সে ব্যবস্থা করতে হবে। তবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রামে ধরে রাখার উপযোগী পরিবেশ তৈরির জন্যও সংশিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, একনেকে অনুমোদন পাওয়া সাতটি প্রকল্পে মোট খরচ ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ৬২২ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১১ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা টাকা খরচ করা হবে।
গতকাল একনেক সভায় আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ১৬ হাজার ১০৪ কোটি টাকা। যার মধ্যে দশ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা ঋণ দেবে চীন। বাকি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে যোগান দেওয়া হবে। প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকার রেলপথকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হচ্ছে পর্যায়ক্রমে দেশের সব রেলপথকে ব্রডগেজে রূপান্তর করতে হবে। অতীতে যারা রেলকে অবহেলা করেছে, তারা অন্যায় করেছে।
মঙ্গলবারের একনেকে আটটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপিত প্রকল্পগুলো হলো রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের আখাউড়া-সিলেট সেকশনের মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজ রেললাইনে রূপান্তর’ প্রকল্প; পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কমপেক্স নির্মাণ’ প্রকল্প; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘মাগুরা-শ্রীপুর জেলা মহাসড়ক বাঁক সরলীকরণসহ সম্প্রসারণ’ প্রকল্প; জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ‘খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নতুন কার্যালয় ভবন এবং অডিটরিয়াম নির্মাণ’ প্রকল্প; প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন’ প্রকল্প; বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ‘বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ফ্যাক্টরি স্থাপন, ডেমরা, ঢাকা’ প্রকল্প; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘বিসিএসআইআর ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শুটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ এবং ইনডোর ফার্মিং গবেষণা সংক্রান্ত সুবিধাদি স্থাপন’ প্রকল্প এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ঘুঘুমারী থেকে ফুলুয়ার চরঘাট ও রাজিবপুর উপজেলা সদর (মেম্বার পাড়া) থেকে মোহনগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন থেকে বাম তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্প।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব নূরুল আমিন, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব আবুল মনসুর মোহাম্মদ ফয়েজুলাহ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী প্রমূখ।



 

Show all comments
  • Miru Talukder ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:৪২ এএম says : 0
    সরকারি প্রকল্পের প্রয়োজনে ভূমি অধিগ্রহণে জমির মালিককে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসংখ্য ধন্যবাদ। ফিরোজ
    Total Reply(0) Reply
  • Nadia Tuli ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:৪২ এএম says : 0
    সকলকেই তার যথাযথ প্রাপ্য দেয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Howladar Nayem Islam ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:৪৩ এএম says : 0
    সকল বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী খুব সুন্দর দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Shahinur Rahman Ripon ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:৪৪ এএম says : 0
    আপনার নেতৃত্বেই দেশ আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply
  • Faisal Farhan ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:৪৪ এএম says : 0
    Go ahead PM
    Total Reply(0) Reply
  • Syed Mamurul Islam ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ১১:৩২ এএম says : 0
    But in our area we are not getting any compensation fm Govt. side. Our present Parliament Member embarrassed some place forcefully w/out any compensation
    Total Reply(0) Reply
  • Tuhin ১৩ এপ্রিল, ২০১৯, ৪:১৬ পিএম says : 0
    ক্ষতিপূরণের টাকা না দিয়ে আমাদের ভূমি দখল করে কাজ চালাচ্ছে। এগুলো কি সরকার দেখেনা। নাকি দেখেও না দেখার ভান করে আছে...? এখানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে আগে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে তারপর কাজ করতে। কিন্তু এখন তো সব উল্টা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ কেউ মানতেছেনা।
    Total Reply(0) Reply
  • md jahirulIslam ১১ মে, ২০১৯, ১২:১৯ এএম says : 0
    আমার জমির ওপর দিয়ে রাস্তা গেলে সরকার আমাকে ক্ষতিপুরন দিবে?
    Total Reply(0) Reply
  • মিরাজুল ইসলাম ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:৩৫ পিএম says : 0
    রাস্তার পার্শ্বের জমির দাম অনেক বেশি এবং দূরের জমির দাম কম। ভালো হয় রাস্তর পার্শ্বের ১০০/২০০/৩০০/৪০০/৫০০ ফুট জমির দাম ও দূরের জমির দাম আলাদা করে দেওয়া। ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • মিরাজুল ইসলাম ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:৩৬ পিএম says : 0
    রাস্তার পার্শ্বের জমির দাম অনেক বেশি এবং দূরের জমির দাম কম। ভালো হয় রাস্তর পার্শ্বের ১০০/২০০/৩০০/৪০০/৫০০ ফুট জমির দাম ও দূরের জমির দাম আলাদা করে দেওয়া। ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Sahabuddin ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৯:৪১ এএম says : 0
    Amader jomi odigohon hoice bt ekhono taka pai nai ..bt sorkari lok boltese ekhoni bari vainga dite ...eta kamon bichar?
    Total Reply(0) Reply
  • Mdnasir ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২৩ এএম says : 0
    Vumi odigohon Ain Dhaka DC office hukom dokhol Ain 1982dara karjokor kora hoella sadarun manus ar gorep manus der khob upokar hoeito Ain hukom dokhol 2017 amara sadarun manus ar khob gorep manus amader khob upokar hoeito Ain hukom dokhol 2017
    Total Reply(0) Reply
  • Mdnasir shah ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৮:১৬ এএম says : 0
    Vumi odigohon Ain Dhaka DC office hukom dokhol Ain 1982dara karjokor kora hoei bay kobay htek apni amader key janabay amra sadarun gorep manus der khob upokar hoeito
    Total Reply(0) Reply
  • Mdnasir shah ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৮:১৬ এএম says : 0
    Vumi odigohon Ain Dhaka DC office huk om dokhol Ain 1982dara karjokor kora hoei bay kobay htek apni amader key janabay amra sadarun gorep manus der khob upokar hoeito
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ