পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটি (একনেকে) বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদনের পর রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১২ জেলার ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, উৎপাদক চাষীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে ।
একনেক ও রেলমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ২৪ হাজার ৭শ’৪০ কোটি ৬৬ লাখ টাকার মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১৯ হাজার ৩শ’৬১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩শ’৬ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বৈদেশিক (ভারতীয়) অর্থ সহায়তা পাওয়া যাবে ৫ হাজার ৭২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় বগুড়া-সিরাজগঞ্জ (শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন) নতুন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৫শ’৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
রেল সংশ্লিস্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যে সরাসরি রেলপথ না থাকায় এ অঞ্চলের ট্রেনগুলোকে বর্তমানে সান্তাহার, নাটোর এবং পাবনার ঈশ্বরদী হয়ে প্রায় ১২০ কিলোমিটার ঘুর পথে চলাচল করতে হচ্ছে। বাড়তি ওই পথ ঘুরতে একদিকে যেমন সময়ের অপচয় হচ্ছে তেমনি বেশি ভাড়াও গুনতে হচ্ছে। বগুড়া থেকে যেখানে সড়কপথে ঢাকা পৌছাতে লাগে ৪/৫ ঘন্টা সেখানে ট্রেনে ঘুরপথে যেতে লাগে ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা।
অথচ বগুড়া সিরাজগঞ্জ রেল প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর রাজশাহী বিভাগের বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও রংপুর বিভাগের ৮ জেলাসহ মোট ১২ জেলার সাথে রাজধানী ঢাকায় যোগাযোগের সময় নেমে আসবে অর্ধেকে সেই সাথে কমে যাবে হাজারো ঝক্কি ঝামেলা ও ভোগান্তি। কমবে ঢাকা বগুড়া রংপুর মহাসড়কের যানজট।
অপরদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এর ফলে কম খরচে পণ্য পরিবহনের কারণে রাজধানী ঢাকার ক্রেতারা কম দামে কিনতে পারবেন কাঁচামাল অন্যদিকে বৃহত্তর বগুড়া ও রংপুর দিনাজপুরের উৎপাদক চাষীরা পাবে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য।
উল্লেখ্য ২০০৫ সালেই বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণে প্রথম একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। ওই এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে রেলপথ নির্মাণের প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে জমি অধিগ্রহণের জন্য সে সময় প্রাথমিক জরিপও চালানো হয়। তবে বগুড়ার একজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্য ও পরিবহন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে প্রকল্পটি আর আলোর মুখ দেখেনি ।
পরবর্তীতে ২০১১ সালের ৯ এপ্রিল সিরাজগঞ্জে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ স্থাপনে প্রতিশ্রুতির নতুন করে চিঠি চালাচালি শুরু হয়। আশায় বুক বাঁধেন দুই জেলার মানুষ। ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর বগুড়ায় এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তবে তারপরও অর্থাভাবে প্রকল্পটি এতদিন ফাইলবন্দীই থাকে। ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর ঢাকায় বাংলাদেশে যোগাযোগ অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তৃতীয় ক্রেডিট লাইনের (এলওসি) আওতায় বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণে ঋণ দিতে সম্মত হয়। মূলত তার পরপরই গুরুত্বপূর্ণ ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইল (ডিপিপি) প্রণয়নসহ নকশা তৈরি, স্টেশনের সংখ্যা নির্ধারণ এবং রেলপথ নির্মাণে প্রয়োজনীয় জমির মূল্য নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা যায় , প্রকল্পের আওতায় ডুয়েল গেজের দুটি রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো বগুড়া স্টেশন থেকে আড়াই কিলোমিটার পশ্চিমে ছোট বেলাইল এলাকা থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার এবং অপরটি হলো বগুড়ার কাহালু স্টেশন থেকে রাণীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রেলপথ। সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৫শ’৭৯ কোটি ৭০ লাখ ১৫ হাজার টাকা। মূলত সান্তাহারের দিক থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে সান্তাহার হয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুরগামী ট্রেনগুলো যাতে বগুড়া স্টেশনকে এড়িয়ে সরাসরি চলাচল করতে পারে সেজন্য কাহালু-রাণীরহাট রেলপথটি নির্মাণ করা হচ্ছে। দুটি রেলপথ মিলিত হওয়ার কারণে বগুড়া শহর থেকে ৮ কি:মি: দূরে রাণীরহাটে একটি জংশনও নির্মাণ করা হবে
এছাড়া নতুন ওই রেলপথে আরও ৫টি স্টেশন স্থাপন করা হবে। এগুলো হলো শেরপুর, চান্দাইকোনা, রায়গঞ্জ, কৃষাণদিয়া ও সদানন্দপুর। প্রস্তাবিত ৮৪ কিলোমিটার রেলপথের জন্য মোট ৯শ’৬০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।