Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্থিরতা সংসদ সচিবালয়ে

কে কখন কোথায় থাকছেন চলছে খোঁজ : আাঁড়ি পাতা হচ্ছে মোবাইলেও

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

তদন্তের পর তদন্ত চলছে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিষয়ে। তারা কে কখন কোথায় থাকছেন, ভাই-বোন, স্বজনরা কোথায় কি করছেন খোঁজ নেয়া হচ্ছে। এমনকি স্ত্রী-সন্তানদের বিষয়েও নতুন করে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। কর্মরতদের অনেকের মোবাইলেও আঁড়ি পাতা হচ্ছে। আর এমনটি শুধু একবার নয়, বার বার, অনেকবার প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারির বিষয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে। কিন্তু এতোসব তদন্ত কিংবা খোঁজ খবর নেয়ার হেতু কি এই বিষয়টি স্পষ্ট করছে না সংসদ সচিবালয়। সংসদের সাজেন্ট অ্যাট আর্মসের দপ্তর থেকে এটিকে চলমান এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলেই দাবি করা হয়েছে। তবে সংসদ সচিবালয়ের উর্দ্ধতনরা সরবারের নির্দেশে এসব তদন্ত পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সচিব জাফর আহমদ খান ইনকিলাবকে বলেন, তথ্য তাদের দিতে হবে। কারণ এটি সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নির্দেশ। তবে অযৌক্তিক কোনো তথ্য চাওয়া হলে তা বাদ দেয়া যায় কিনা সেটা ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে সংসদ সচিবালয়ে কর্মরতরা নিজেদের বিষয়ে এভাবে একের পর এক তদন্ত হওয়ায় যেমনি বিব্রত তেমনি অতিষ্ঠও। বার বার পুলিশি তদন্তের কারণে তারা নানা ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলেও জানান। বিষয়টি নিয়ে তারা সম্প্রতি সংসদের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমদ খানের সঙ্গেও দেখা করেন। চাকরিবিধি লঙ্ঘিত হতে পারে ভেবে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে প্রকাশ্যে কেউই মুখ খুলতে না চাইলেও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, সাধারণত চাকরিতে নিয়োগ দেয়ার আগে ও পদোন্নতির সময় এই ধরনের তদন্ত হয়। কেউ সন্দেহজনক কাজ করলেও তদন্ত হতে পারে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর দফতরে আছেন তাদের বিষয়েও সন্দেহজনক কিছু হলে তদন্ত হতে পারে। কিন্তু সংসদের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস বার বার অযথা তাদের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছেন। এছাড়া অনেকের মোবাইলেও আঁড়িপাতা হচ্ছে। বার বার পুলিশি তদন্তের শিকার হয়ে তারা হয়রানি হচ্ছেন এবং নানা ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়ায় তারা বিব্রত বোধ করছেন বলেও জানান অনেকে।
সংসদ সচিবালয়ের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, সংসদ সচিবালয়ে চাকরি পাওয়ার পর থেকে অনেকেই সাত-আট বার তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) থেকে এসব তদন্ত করা হয়। সম্প্রতি আবারও নতুন করে সংসদের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মসের পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত ১১ ধরনের তথ্য, পিতা-মাতা-সংক্রান্ত ১২ ধরনের তথ্য, ভাই-বোন-সংক্রান্ত চার ধরনের তথ্যা, বিয়ে-সংক্রান্ত পাঁচ ধরনের তথ্য এবং সন্তান-সংক্রান্ত চার ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছে। ১৫ এপ্রিলের মধ্যে এসব তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। ব্যক্তিগত তথ্যের মধ্যে বিগত পাঁচ বছরে কে কোন ঠিকানায় বসবাস করেছেন তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। কোনো দেশ ভ্রমণ করলে তার বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে। চাওয়া হয়েছে ব্যাংক হিসাব নম্বর এবং শাখার নামও। এ নিয়ে সবার মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সংসদের নিরাপত্তা বিষয়ক এক কর্মকর্তা জানান, সংসদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কিছু কর্মকর্তা স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য দেন। নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ও গুরুত্ব জাহিরের জন্য তিলকে তাল করে দেখান। একটা ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে নানা ধরনের কাজ করা হচ্ছে। এসব তদন্ত তারই অংশ।
এ বিষয়ে সংসদের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস ক্যাপ্টেন মোস্তাক আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, এসব তদন্ত একটি চলমান ও স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বিভিন্ন কারণেই তদন্ত করতে হয়। কাউকে হয়রানি করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। সবার নিরাপত্তা দেখভালের জন্য আবার নতুন করে তথ্য চাওয়া হয়েছে।



 

Show all comments
  • Faridul Alam ৮ এপ্রিল, ২০১৯, ২:০৩ এএম says : 0
    চোরের মনে পূলিশ পূলিশ ভাব থাকবেই..
    Total Reply(0) Reply
  • রুবি আক্তার ৮ এপ্রিল, ২০১৯, ২:০৫ এএম says : 0
    বিনাভোটের সরকারের যা হয় আর কি। সবসময় পেছন থেকে ভুত দেখতে পায়। এভাবে যে কদিন যায় আর কী।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৮ এপ্রিল, ২০১৯, ২:০৬ এএম says : 0
    এত নজরদারির পরেও বিদায় ঘন্টা বেজে গেলে শেষ রক্ষা হবে না। সরকার হয়তো মনে করছে তাদের দক্ষতায় টিকে আছে। কিন্তু আল্লাহ চাইলে যে কোনো সময় পতন হবে। কোনো কিছুতেই কাজ হবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • জমির শেখ ৮ এপ্রিল, ২০১৯, ২:০৭ এএম says : 0
    অস্থির তো পুরো দেশই। জোর করে ক্ষমতায় থাকলে অস্থির তো থাকবেই। এভাবে যতদিন টিকে আর কি।
    Total Reply(0) Reply
  • মামুন ৮ এপ্রিল, ২০১৯, ২:০৮ এএম says : 0
    যড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সবসময় সজাগ থাকতে হবে। তারা যে কোনো সময় দেশকে অস্থিতিশীল করে ফায়দা লুটতে পারে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ