পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও-এর আমন্ত্রণে ওয়াশিংটন সফরে গেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। গত শনিবার দিবাগত রাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রা করেন। আজ সোমবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে ঢাকার পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত আনা এবং তেল-গ্যাস-জ্বালানি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল, প্রতিরক্ষা, সুশাসনসহ একাধিক খাতে গুরুত্ব দিতে পারে ওয়াশিংটন।
গত একমাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে ঘটে যাওয়া দুটি ঘটনা আসন্ন ঢাকা-ওয়াশিংটন বৈঠকে কী প্রভাব পড়তে পারে সে দিকে নজর রাখছেন কূটনীতিকরা। ঘটনা দুটির একটি হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন ঢাকার পক্ষ থেকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গত মার্চে প্রত্যাখ্যান করা হয়। অন্যটি হচ্ছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র কী কারণে রেড এলার্ট জারি করেছে তা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঢাকা-ওয়াশিংটন বৈঠক সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দু-দেশের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক বিরাজ করছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক খাতের উন্নয়নে দেশ দুটি ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। আমাদের গাস-তেল এবং জ্বালানি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের আরও বিনিয়োগ করার সুযোগ আছে, বৈঠকে ওয়াশিংটনকে এই খাতে বিনিয়োগের আহবান জানাবো। সমুদ্র অর্থনীতি নিয়েও ঢাকা-ওয়াশিংটন একসঙ্গে কাজ করতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় বাস্তবায়ন করা একটি অগ্রাধিকারের বিষয়। খুনি রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আনার বিষয়ে বৈঠকে আলাপ করবো। এ ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট, বিনিয়োগসহ দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল, প্রতিরক্ষা খাত, সন্ত্রাসবাদ, সুশাসন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি, গত সংসদ নির্বাচনসহ একাধিক ইস্যুতে আসন্ন বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।
মোমেন-পম্পেও বৈঠক সম্পর্কে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জানান, আসন্ন বৈঠকটি খুবই ফলপ্রসু হবে। রোহিঙ্গা সংকট কাটাতে ঢাকার পক্ষে ওয়াশিংটনের সমর্থন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বিগত দিনগুলোতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে, সামনে এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, গত ১৩ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের একাধিক দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর তথ্যবহুল প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাস, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, সংবাদ মাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সরকারি বাধা, পোশাক কর্মীদের ট্রেড ইউনিয়ন করতে না দেওয়া, গুম-খুনসহ একাধিক বিষয় উঠে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার বিষয়ক ওই প্রতিবেদন দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে প্রতিবাদপত্র পাঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার বিষয়ক ওই প্রতিবেদন তারা নিজেরা তদন্ত করে বা মাঠে নেমে করেনি। বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্র ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। অথচ এসব বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের আগে তাদের নিজেদের পক্ষ থেকে তদন্ত বা তথ্য সংগ্রহ করা উচিত ছিল। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি, প্রতিবেদনটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রযোজ্য, আমাদের জন্য নয়। যুক্তেরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশের গণমাধ্যম সরকারের নিয়ন্ত্রণে, যা একেবারেই সত্য নয়। উল্টো যুক্তরাষ্ট্রই তাদের বেসরকারি গণমাধ্যমে সরকারের পক্ষে খবর ছাপাতে বা প্রচারে বাধ্য করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।