পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভূঁইগড়ে ফজলে রাব্বি পরিবারের কান্না যেন থাকছে না। এক সন্তানের জননী স্ত্রী সাবিয়া, মা শাহনাজ বেগম, ছোট বোন শাম্মি আক্তার চোখ দিয়ে এখন আর পানি বের হয় না। শোকে পাথর সাবিয়া দুই বছরের সন্তানকে কীভাবে মানুষ করবেন ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না। বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকান্ডে নিহত হন নারায়ণগঞ্জের ফজলে রাব্বি।
পহেলা এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভূঁইগড়ে নবীনগর ভিলায় গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের আহাজারি আর আর্তনাথ। পরিবারের মূল উপার্জনকারী বড় সন্তানের এই করুণ মৃত্যুকে কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না বৃদ্ধ বাবা জহিরুল হক। কান্নায় একেবারে ভেঙে পড়েছেন তিনি। নিজে ছোটখাটো একটি চাকরি করলেও পুরো সংসার চলতো বড় ছেলে রাব্বির উপার্জনের টাকা দিয়ে। স্ত্রী সাবিয়ার কান্না দেখে কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। গোটা পরিবার যেন শোকে পাথর হয়ে গেছে।
রাব্বির বাবা জহিরুল হক জানান, বনানীর এফ আর টাওয়ারের ১২তলায় ফ্লোগাল লজিস্টিস (ইউরো সার্ভিস) নামের একটি ফ্রেইড ফরোয়ার্ডিং কোম্পানিতে কাস্টমার সার্ভিস অ্যান্ড ডকুমেন্টেশন বিভাগে এক্সিকিউটিভ পদে কাজ করতেন ফজলে রাব্বি। ২০১৮ সালে কাজে যোগদান করেন তিনি। ঘটনার দিন দুপুর ১২টা থেকে কয়েকবার বাড়িতে ফোন করে কথা বলেন রাব্বি। ১টা ৫৩ মিনিটে শেষ কথা হয় ছোট ভাই ও বাবার সঙ্গে। রাব্বি তাদের জানিয়েছিলেন অফিস ফ্লোরে ধোঁয়ায় আটকা পড়ে গেছেন তিনি। বাঁচার জন্য জানালা দিয়ে নিচে লাফিয়ে পড়বেন কি-না সেই সিদ্ধান্ত চেয়েছিলেন ছোট ভাই ও বাবার কাছে। কিন্তু তারা রাব্বিকে বারবার নিষেধ করেছিলেন। এই ছিল পরিবারের সঙ্গে রাব্বির শেষ কথা। কাদতে কাদতে রাব্বির মা শাহনাজ বেগম বলেন, যদি সেদিন ছেলেকে ঝাপ দিয়ে নামতে বলতো তাহলে হয়তো বেঁচে যেন।
মা শাহনাজ বেগম জানান, সকালে নাশতা করে মায়ের কাছে বিদায় নিয়ে অফিসে চলে যান রাব্বি। দুপুর ১২টায় ফোন করে অফিস ভবনে আগুনের কথা জানালে চিন্তিত ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। বারবার ছেলের খবর নিতে তাগাদা দিচ্ছিলেন স্বামী, ছোট ছেলে ও মেয়েকে। রাত ১২টায় জানতে পারেন তার সর্বনাশ হয়ে গেছে। ছেলে আর নেই ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা গেছে।
স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন রাব্বির সাবিয়া। দুই বছরের সন্তানকে কীভাবে মানুষ করবেন ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেন না। বলেন, এতো বড় সর্বনাশ হলো, কিভাবে বাকি জীবন কাটাবো; বাচ্চাটাকে কিভাবে মানুষ করবো?
কথা হচ্ছিল রাব্বির ছোট ভাই রিফাত আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, বড় ভাই রাব্বির রোজগারের টাকায় মাস্টার্স শেষ করেছেন। ছোট বোনটিকেও বিয়ে দিয়েছেন বড় ভাই রাব্বি। পরিবারের আয়ের মূল উৎস ছিলেন বড় সন্তান রাব্বি। কীভাবে এখন সংসার চলবে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।