পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজ থেকে ৮৩ বছর আগে যাত্রা শুরু। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে বসচেয়ে প্রাচীনতম ক্লাব হিসেবে সবার আগেই যে নামটি উচ্চারিত হয় সেটি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। ঐতিহ্যে, ধারে, ভারে সমৃদ্ধ দলটি বেশ ক’বছর ধরেই ঘুরছে ব্যর্থতার আবর্তে। এক সময় ক্রীড়াঙ্গন দাপিয়ে বেড়ানো ক্লাবটি ফুটবল কিংবা ক্রিকেটে এখন কেমন যেন খোলসবন্দী। কারণটি জানা গেল গতকাল। আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে মোহামেডান!
বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন যে বানিজ্যিক রূপরেখায় চলছে তাতে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। এরই মধ্যে বেশ কিছু ক্লাব তাদের পরিসর বাড়িয়ে খেলাধুলাকে নিয়ে গেছে বিপননের দুয়ারে। এবার সে পথে হাঁটতে যাচ্ছে মোহামেডান। দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির এই স্বপ্ন অবশ্য বেশ ক’বছর আগেই দেখিয়েছিলেন ক্লাবটির ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভুঁইয়া। তবে ২০১১ সালে তার দেখানো সেই পথ হয়ে ওঠে আরো কণ্টকাপূর্ণ। ধীরে ধীরে কেটেছে প্রতিবন্ধকতা। এবার আলোর মুখ দেখার অপেক্ষায়। গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করে মোহামেডানের ঊর্ধ্বতন কমকর্তারা। সেখানে লোটাস কামালের হাপতে তুলে দেয়া হয় ক্লাবটির সম্মাননা ক্রেস্ট। দীর্ঘ ৩০ মিনিট রুদ্ধধার বৈঠক শেষে লোকমান ভূঁইয়া জানালেন, তাদের পরিকল্পনা নিয়ে ভাবছে ক্রীড়াবান্ধব সরকার, ‘আপনারা জানে আমি গত ২০১১ থেকেই আমাদের একটা মহামূল্যবান সম্পদ আছে মতিঝিলে এটিকে ডেভেলপ করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনারা জানেন একটা বড় কিছু করতে গেলে অনেক সময়ের প্রয়োজন। অনেক কিছুর সমন্বয় করা আলো কঠিন। তো আমরা অনেক দিন পরে আমাদের অর্থমন্ত্রীকে এই প্রস্তাবনাটি বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। এই কমপ্লেক্সটি সম্পন্ন করতে পারলে মোহামেডানের আর কোন আর্থিক অনটন কিংবা সঙ্কট থাকবে না। চীরতরে তা দূর হয়ে যাবে। উনি আমাদের কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেটি নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগুতে পারবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আমাদের ক্লাব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী আমাদের অবস্থা শুনে তাৎক্ষণিক ইউনাইটেড গ্রুপকে আমাদের সঙ্গে কাজটি কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা করতে বলেছে। এই মুহূর্তেও তারা আমাদের সঙ্গে আছেন। পাশাপাশি অর্থমন্ত্রীও আাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার ব্যপারে আশ্বাস দিয়েছেন।’
পরিকল্পনার কিছুটা তুলে ধরতে গিয়ে লোকমান ভুঁইয়া বলেন, ‘আপনারা জানেন রাজধানীর মতিঝিলের মতো জায়গায় আমাদের একশ কাঠা একটি প্লট আছে। যেটিকে ব্যবহার করে আমারা মূলত ৫০ তলা বিশিষ্ট একটি বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স করার চিন্তা-ভাবনা করছি। যার আনুমানিক ব্যায় ধরা হয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। আমরা ইতিমধ্যেই রাজউক থেকে ছাড়পত্র নিয়েছি এবং উঁচু বিল্ডিং বানাতে গেলে সিভিল এভিয়েশন থেকে যে অনুমতি লাগে (৫০০ ফিট) সেটিও আমরাই প্রথম নিয়েছি। এখন বাকিটা সময়ের অপেক্ষা।’
মোহামেডানের এই উদ্যোগের ভূয়সীপ্রসংশা করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘উনারা (মোহামেডান) অতীব সুন্দর একটি প্রস্তাবনা নিয়ে এসেছে। উনারা চান যে দেশের প্রতিটি ক্লাব স্বাবলম্বী হোক, টাকা পয়সা আয় করার ব্যবস্থা থাকুক, যাতে করে প্রতিটি ক্লাব স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারে। যে কেন ক্লাব চলকে গেলে টাকা-পয়সার খরচ করতে হবে, এই টাকা-পয়সাগুলো কোত্থেকে আসে? আপনারা কেউ কি টাকা-পয়সা দেন, আমরা পকেট থেকে দেই? যেহেতু এটা একটা ভালো উদ্দ্যোগ, মোহামেডানের নিজস্ব জায়গা আছে, এই জায়গাকে ব্যবহার করে কিভাবে স্পোর্টস একদিকে রান করানো যায়, অন্যদিকে কমার্শিয়ালীও রান করানো যায়, এখান থেকে যা আয় হবে সেটিকে ক্লাব এবং দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আরো বেশি করে অবদান রাখা যায় সে জন্য একটা প্রস্তাবনা নিয়ে এসেছে। এখন আমরা দেখতেছি এই প্রস্তাবনা কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থে মোহামেডানের ফিরে আসাটা কতটুকু জরুরি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থে মোহামেডান সবসময়ই শক্তিশালী, এখনও শক্তিশালী। দেশের ক্রীড়াঙ্গন মোহামেডান ছাড়া কল্পনাও করা যায় না। বর্তমান দিয়েই তো শুধু একটি ক্লাবের সামর্থ্য বিচার করা সম্ভব নয়। কোন এক সময় হলো না, তিন মাসে হলো না ছয় মাস হলো না, এটা কোন বিচারিক প্রক্রিয়া হতে পারে না। একটি ক্লাব কি সারাজীবনই চ্যাম্পিয়ন থাকে নাকি? ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, অ্যাস্টন ভিলা কি সারাজীবন চ্যাম্পিয়ন থাকে নাকি? তাই বলে তাদের ছাড়া ইউরোপিয়ান ফুটবল যেমন, মোহামেডান ছাড়া বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনও তেমনি। খেলাধুলায় কখনও কেউ চ্যাম্পিয়ন হবে কেউ হেরে যাবে, খেলাধুলার সঙ্গে আছে কি না এটাই দেখতে হবে। খেলাধুলায় চ্যাম্পিয়নকে যেমনি দরকার, প্রতিযোগিতার স্বার্থে যে হরে তাকেও সমানভাবে দরকার। আমাদের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স কি প্রতিবারই চ্যাম্পিয়ন হয়? এটা কি সম্ভব? খেলাধুলায় এরকম গ্যারান্টি বলে কিছু নেই।
গত বিশ্বকাপে নিজে দায়িত্ব পালন করেছেন আইসিসির সভাপতি পদে। নির্লজ্জ পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়েল প্রতিবাদ করে ছেড়ে এসেছিলেন সেই লোভনীয় পদটি। আরেকটি বিশ্বকাপ দোরগোড়ায়। বাংলাদেশ দলের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল ছাড়িয়ে গেলেন নিজের স্বপ্নের বার্তা, জানালেন, ‘এবার বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছে।’
তার দেখানো স্বপ্নের পথেই চলুক বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সেই প্রত্যাশা দেশের ষোলো কোটি মানুষের।
এসময় ঢাকা মোহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের কর্মকর্তারে মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান ও উইনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন ডেভলপমেন্টের চেয়ারম্যান জেনারেল (অব.) মো: আব্দুল মুবিন, ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা, দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভুঁইয়া, আইপে উপদেষ্টা মোহাম্মদ নুরুল আমিন, ইউনাইটেড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনউদ্দিন হাসান রশিদ, পরিচালক মালিক তালহা ইসমাইল বারী, স্থপতি ডক্টর নিজামউদ্দিন আহমেদ, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু, র্যাপিড সিকিউরিটিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান হানিফ ভূর্ঁইয়া, দৈনিক ইনকিলাবের ক্রীড়া সম্পাদক রেজাউর রহমান সোহাগ, মডেউল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহফুজ উজ্জামান, ক্লাবের স্থায়ী সদস্য এজি এম সাব্বির ও সারোয়ার হোসেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।