Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অটোমেশনে যাচ্ছে বিপিসি

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম | আপডেট : ১২:১০ এএম, ৩১ মার্চ, ২০১৯

জ্বালানি তেল বিপনন কোম্পানির কাছ থেকে দ্রুত টাকা আদায়ে অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। উদ্যেগটিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এটা হলে বিপিসি’র হাজার হাজার কোটি টাকা মাসের পর মাস আর আটকে রাখার সুযোগ থাকবে না বিপনন প্রতিষ্ঠানগুলোর। আর বিপিসিও যথাসময়ে ট্যাক্স-ভ্যাটসহ তাদের বিনিয়োগের টাকা হাতে পাবে। পাশাপাশি যথাসময়ে সঠিক হিসাব জানার পাশাপাশি সরকারও আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
বিপিসি’র পরিচালক (অপারেশন) সৈয়দ মেহেদী হাসান বলেন, মাসের পর মাস বিপিসি’র টাকা বিপনন কোম্পানির কাছে পড়ে থাকতো। এ জন্য অটোমেশনে যাচ্ছে বিপিসি, যাতে জ্বালানি বিক্রির টাকা দ্রুত পাওয়া যায়।
বিপিসি সূত্র জানায়, বিপনন প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, এসএওসিএল এবং এলপিজির কাছে জ্বালানি সরবরাহ করে বিপিসি। কোম্পানিগুলোতে মাসের পর মাস বিপিসি’র হাজার হাজার কোটি টাকা আটকে রাখে। এ জন্য সয়ংক্রিয় পদ্ধতির মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে টাকা আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিপিসি। এটা হলে সয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মাত্র ৮ দিনের মধ্যে বিপনন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে টাকা বিপিসি’র হিসাবে চলে যাবে। আর্থিকভাবে লাভবান হবে প্রতিষ্ঠানটি। গত অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী, সারা দেশে বিপিসি’র প্রায় ৪৯ হাজার কোটি টাকার জ্বালানি বাজারজাত হয়েছে। প্রতিবছরই জ্বালানি চাহিদার হার ৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। হিসাব অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা হিসাব ধরলে মাসে বিভিন্ন বিপনন কোম্পানির কাছে বিপিসি’র পাওনা থাকে প্রায় ৪ হাজার ২শ’ কোটি টাকা। ৬ মাস বা ১ বছর এই টাকা ধরে রেখে বিপনন প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা করে লাভবান হলেও ক্ষতির মুখে পড়ছে সরকার।
সূত্র মতে, মাসের পর মাস বিপিসি’র টাকা আটকে রেখে বিপনন প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা করতো। নিজেদের সময়মতো পরে বিপিসিকে টাকা দিতো। অটোমেশনে গেলে বিপিসি যথাসময়ে টাকা পাবে। সরকার আর্থিকভাবে লাভবান হবে। বিভিন্ন বিপনন কোম্পানি থেকে দ্রুত টাকা আদায়ে এরই ধারাবাহিকতায় বিপিসি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস (সিএনএস) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে যাচ্ছে।
এদিকে দীর্ঘদিন থেকে তেল বিপণন কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা এবং যমুনার আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়েও ছিল প্রশ্ন। এমনকি স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে সরকার আর্থিক পরামর্শকও নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে। তাই অটোমেশনে গেলে বিপনন প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা নিয়ে আর প্রশ্ন থাকবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিপিসি’র এক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা বলেন, বিপিসি’র বিপনন প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা সরকারের আয়ের অন্যতম বড় খাত। এদের টাকা সংগ্রহ করার কোন অটোমেশন নেই। প্রত্যেকটা পেট্রোল পাম্প থেকে কত টাকা সংগ্রহ হচ্ছে যার হিসাব পাওয়া কঠিন। যার ফলে ট্যাক্স, ভ্যাট থেকে এআইটি (এ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স) সবকিছু সরকার সময়মতো পায় না। বিপনন প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন এই টাকা ধরে রেখে ব্যবসা করে ডিপিসিতে পাঠায়। এতে সরকার বড় অঙ্কের অর্থ হারাচ্ছে।
এটা যদি অটোমোশনে যায় তাহলে ডিপিসি সরাসরি দেখতে পারবে প্রতিদিন কত টাকা কালেকশন হচ্ছে। একই সঙ্গে ট্যাক্স, ভ্যাট থেকে এআইটি (এ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স) বাদ দিয়ে প্রত্যেক দিনের টাকা প্রত্যেকের কাছে সয়ংক্রিয়ভাবে চলে যাবে। কেউ কারো মুখাপেক্ষী হবে না। এতে সরকারের বছরে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা মুনাফা হবে। কারণ অটোমেশনে গেলে বিপিসিকে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার কাছ থেকে টাকা পাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ