Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামের বারৈয়াঢালা জাতীয় উদ্যান

পরিবেশবান্ধব পর্যটন স্পট

আইয়ুব আলী | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড ও মীরসরাইয়ের বারৈয়াঢালা জাতীয় উদ্যান একটি পরিবেশবান্ধব পর্যটন স্পট। ২০১০ সালের ৬ এপ্রিল থেকে এটিকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই বনের আয়তন ২৯৩৩.৬১ হেক্টর। বন ছাগল, বন কুকুর, মেটে কাঠমৌর, কালাপিঠ চেরালেজ, সবুজ তাউরা এই বনের গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী ও পাখি। এছাড়াও এই বনে ২৫০ প্রজাতির গাছ ও ১৫০ প্রজাতির পাখি রয়েছে। এই বনের ও এর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অনেক প্রাকৃতিক ঝর্ণা। চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ ও বারৈয়াঢালা সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি ইউএসএইডের ক্রেল প্রকল্পের সহযোগিতায় স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে অভয়ারণ্যের ভেতরে সৃজন করা হয়েছে।
খৈয়াছড়া ঝর্ণা : এটি চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাইয়ের পাহাড়ে অবস্থিত একটি জলপ্রপাত। এটি ৯ ধাপ বিশিষ্ট একটি বিস্ময়কর ঝর্ণা- যা আকার, আকৃতি ও গঠনশৈলীর দিক দিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঝর্ণাগুলোর একটি। এই ঝর্ণাকে বলা হয় বাংলাদেশের ঝর্ণা রানী। পরিবেশবান্ধব পর্যটনের নিমিত্তে এখানে নির্মাণ করা হয়েছে পিকনিক স্পট, ক্যাম্পিং এবং র‌্যাপ্লিং ও জুমারিয় কার্যক্রম যা বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের বন বিভাগের বারৈয়াঢালা জাতীয় উদ্যান আওতাধীন এবং বারৈয়াঢালা সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত।
কলদহ ঝর্ণা : কমলদহ ঝর্ণার ট্রেইল মোটামুটি অপরিচিত একটা ট্রেইল। অসাধারণ এই ট্রেইলে বড় কমলদহ কয়েকটা ঝর্ণা আছে। বড় কমলদহ ঝর্ণার উপরে আরও ৪-৫টি বড় এবং মাঝারি ঝর্ণা রয়েছে। এই ঝর্ণাতে দুইভাগে কয়েকটা ঝর্ণা আছে। যার মধ্যে একটা ৩ স্টেপ এর বিশাল ঝর্ণা। যার উচ্চতা প্রায় ১২০ থেকে ১৮০ ফুট।
নাপিত্তাছড়া ট্রেইল : চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলার নাপিত্তাছড়া ট্রেইলে রয়েছে পরপর নয়নাভিরাম তিনটি ঝর্ণা-কুপিকাটাকু, মিঠাছড়ি এবং বান্দরকুম ঝর্ণা। বর্ষার সময় এই ঝর্ণাটি খুব সুন্দর দেখায়। মিঠাছড়ি ঝর্ণার পর বেশ কিছুটা উপরে হল বান্দরকুম ঝর্ণা। এই ঝর্ণার ঝিরি পথটাও অনেক সুন্দর।
সোনাইছড়া ঝর্ণা : মীরসরাই-সীতাকুন্ড জোনের সবচেয়ে কঠিন ট্রেইল বলা হয় সোনাইছড়ি ঝর্ণার ট্রেইল। নয়নাভিরাম এই ঝর্ণায় ছোট-বড় মিলে ৫টি ঝর্ণার স্টেপ আছে। সারা বছরই পানি থাকে এই ঝর্ণায়। এখানে বানরসহ বিভিন্ন প্রকার বন্যপ্রাণী দেখা যায়।
সহস্রধারা ঝর্ণা : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ছোট দারোগা হাট নেমে টমটম বা সিএনজি যোগে দীঘির পাড় যেতে হবে। সেখান হতে ২.৫ কিমি পাহাড়ী আঁকাবাঁকা রাস্তা ধরে হাঁটলে দেখা মিলবে সহস্রধারা ঝর্ণার। সহস্রধারা ঝর্ণাটি সীতাকুন্ড ইকোপার্কের অভ্যন্তরে অবস্থিত। এই ঝর্ণায় পৌঁছানোর পথে আশেপাশে প্রচুর গাছ থাকায় ছায়ার মধ্যে সহজে পায়ে হেঁটে যাওয়া যায়।
বাওয়াছড়া ঝর্ণা : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাইয়ের কাছে কমলদহ বাজারে নেমে পূর্বদিকে ২ কিমি গেলেই ছোট কমলদহ গ্রাম। উক্ত গ্রামের পাশ ঘেঁষে ১০ মিনিট পায়ে হেঁটে গেলেই বাওয়াছড়া সেচ প্রকল্পের বাঁধ। এ বাঁধের নিকট হতে প্যাডেল বোটে করে বাওয়াছড়া ঝর্ণার ৮শ মিটার পর্যন্ত যাওয়া যাবে। বাকী পথ পাহাড়ী ঝিরি রাস্তা ধরে ২০ মিনিট হেঁটে যেতে হবে। এই এলাকায় বাওয়াছড়া ঝর্ণা ছাড়াও রয়েছে সীতাকুন্ড ইকোপার্ক, সুপ্তধারা ঝর্ণা, মহামায়া লেক ও ঝর্ণা, মহুরী প্রজেক্ট ও উইন্ড মি।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. বখতিয়ার নূর সিদ্দিকী বলেন, বারৈয়াঢালা ন্যাশনাল পার্কের খৈয়াছড়া ঝর্ণাকে ঘিরে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। তাছাড়া রূপসী ঝর্ণা-১ সহস্রধারা নাপিতের ছড়াসহ প্রায় ৬টি ঝর্ণা এলাকার পর্যটন সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ