Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আগুন নেভানোর সরঞ্জাম নেই অথচ চাপাবাজি চলছে

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

সরকার মানুষ হত্যার জন্য ব্যয়বহুল আধুনিক যন্ত্রপাতি কিনছে কিন্তু মানুষ বাঁচানোর জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনায় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে দমন করার জন্য কত আধুনিক মারণাস্ত্র নিয়ে আসা হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। সর্বাধুনিক বিপজ্জনক টিয়ারশেল, স্মোক গ্রেনেড, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট, গোলমরিচ-স্প্রেসহ নানা ধরনের আধুনিক অস্ত্র। কিন্তু মানুষ বাঁচানোর আধুনিক যন্ত্রপাতির কোনো খবর নেই। গতকাল (শনিবার) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য, মানুষ হত্যার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে ৩০ হাজার আধুনিক মরণঘাতী ১২ বোর শর্টগান। শর্টগানের জন্য ৩০ লাখ কার্তুজ আমদানি করা হয় হাজার কোটি টাকা দিয়ে। স্বীকারোক্তি আদায় বা নির্যাতনের জন্য আনা হয়েছে ইলেকট্রিক চেয়ার ও শক দেয়ার ডিভাইস। বিরোধী দলের ফোনে আড়িপাতার জন্য বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত ৎযন্ত্রপাতি নিয়ে আসা হয়েছে। গোপনে অডিও-ভিডিও করার উন্নতমানের ডিভাইস নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি বলেন, যে সরকার দাবি করে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠিয়ে মহাকাশ জয় করেছে, অথচ মানুষ বাঁচানোর জন্য সেই সরকারের কোনো আগ্রহ নেই। দেশের জনগণ মনে করে এই আগুনে পুড়ে মানুষগুলো মরার দায় শেখ হাসিনা সরকারের। বিশ্বের মধ্যে দূষিত শহর, ধুলাবালির শহর, ধোঁয়ার শহর, বসবাসের অযোগ্য শহর ঢাকা। যারা মধ্যরাতে ভোট করে তারা গণবিরোধীই হয়। সে জন্য মানুষ বাঁচাতে তারা কোনো দায়বোধ করে না।
জবাবদিহিবিহীন সরকার থাকার কারণেই মৃত্যুর মিছিল অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সরকার বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সঠিক সংখ্যাটিও প্রকাশ করে না। এরা ক্ষমতার মোহে এতটাই পাগল যে, মানুষের নিরাপত্তা দেয়ার কথা বেমালুম ভুলে যায়। সুশাসন থাকলে এই অব্যবস্থাপনা চলত না। বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা হয়নি, উঁচু তলার ভবনগুলোর কোনো নির্গমন পথ নেই, অগ্নিপ্রতিরোধক ব্যবস্থা নেই- সেটা তদারকির দায়িত্ব সরকারের। শুধু লোভ ও লাভের জন্যই বেআইনিভাবে এই ভবনগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। আর এ কারণেই আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বিশ্বে বসবাসের অযোগ্যের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য নেতা-মন্ত্রীদের মুখে উন্নয়নের মহাসড়কের বুলি শুনতে শুনতে সাধারণ মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। ২২ তলা ভবনে আগুন নেভানোর সরঞ্জাম নেই অথচ দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে বলে চাপাবাজি চলছে সপ্তকণ্ঠে তারস্বরে। আসলে দুর্নীতির মহাসড়কেই এই সরকার হাঁটছে বলেই সাধারণ মানুষের এত লাশের স্ত‚প।
অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতির অভাবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এফ আর টাওয়ারে অগ্নিনির্বাপণ ও হতাহতদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসসহ উদ্ধারকর্মীরা প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়েছেন, তাদের আমরা আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আগুন নেভাতে ও মানুষ উদ্ধারে সরকার আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার কোনো লেটেস্ট ডিভাইস নেই। দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মীদের দ্রুত পৌঁছানোর জন্য কোনো উন্নতমানের বিকল্প ব্যবস্থা নেই। আগুন নেভাতে উন্নত ও স্বয়ংক্রিয় মই পর্যন্ত নেই। সবই সেকেলে ও মান্ধাতার আমলের। হেলিকপ্টারের সাথে ঝোলানো বালতিতে হাতিরঝিল থেকে পানি নিয়ে বিল্ডিংয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে সেই বালতির সমস্ত পানি ফুটো তলানী দিয়ে ঝরে গেছে। অথচ উন্নত দেশে আগুন নেভাতে ও মানুষ উদ্ধারে কত আধুনিক সরঞ্জাম ও ব্যবস্থাপনা দেখতে পাওয়া যায়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এর আগে আগুনে অসংখ্য মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর পরেও বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ফায়ার সার্ভিসকে আধুনিক যন্ত্রপাতিতে উন্নত করেনি। যদি করত তাহলে এত মানুষের আগুনে পুড়ে প্রাণ যেত না।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাহিদা রফিক, কেন্দ্রীয় নেতা মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ