Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০১৯, ১২:৩৮ এএম


আগামী বাজেটে ১৭ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা বরাদ্দের আহŸান
মূল্য স্থিতিশীল রাখতে ১৩ লাখ টন স্বল্পমূল্যে বিক্রির উদ্যোগ
নিরাপদ ও পুষ্টিমান সম্পন্ন পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে বেশকিছু নতুন পরিকল্পনা হতে নিয়েছে সরকার। সম্ভাব্য পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বিবেচনায় রেখে দেশের সার্বিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা, নীতি ও কৌশল প্রণয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে এসব প্রকল্প আগামী অর্থবছরে বাস্তবায়ন করতে চায় খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরে উল্লেখযোগ্য কার্যাবলী বা কর্মসূচি সম্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এগুলো হচ্ছে-দেশে স্থিতিশীল খাদ্য নিরাপত্তা গড়ে তোলা। এজন্য আমদানি ও অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ কার্যক্রমের মাধ্যমে ৩০ লাখ ৭১ হাজার টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ মার্চ পর্যন্ত সরকারি গুদামে মোট ১৫ লাখ ৩০ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুত আছে। এর মধ্যে ১৩ লাখ ৬৭ হাজার টন চাল এবং এক লাখ ৬৩ হাজার টন গম। খাদ্যশস্যের মজুত সন্তোষজনক এবং মাসিক চাহিদা ও বিতরণ পরিকল্পনার তুলনায় পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য দেশে মজুত আছে।
খাদ্যশস্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে আগামী অর্থবছরে মোট ১২ লাখ ৯০ হাজার টন খাদ্যশস্য ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। সারাদেশে কৌশলগত স্থানে এক লাখ পাঁচ হাজার টন ধারণক্ষমতার ১৬২টি নতুন খাদ্যগুদাম ও অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের আওতায় সারাদেশে আধুনিক মানের পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ভার্টিক্যাল স্টিল রাইস সাইলো নির্মাণ করা হবে। ডিজিটাল পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম চালুর পাশাপাশি পাঁচ লাখ পারিবারিক সাইলো (ফুড গ্রেডেড ওয়াটার টাইট প্লাস্টিক বিন) বিতরণ করা হবে।
বগুড়ার সান্তাহার সাইলো চত্বরে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ব্যবস্থাসহ রাইস মিল নির্মাণ করা হবে। সারাদেশে পুরাতন খাদ্যগুদাম ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদির মেরামত এবং নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বিল বাঘিয়ায় ধান শুকানো ও সংরক্ষণ ব্যবস্থাসহ একটি আধুনিক রাইস মিল নির্মাণ করা হবে। একই ধরনের রাইস মিল নির্মাণ হবে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার চর গাজীপুর, বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রাকুদিয়া, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বগায়।
খাদ্যশস্যের পুষ্টিমান নিশ্চিতের লক্ষ্যে ঘণ্টায় ২০০ কেজি ক্ষমতাসম্পন্ন প্রিমিক্স কার্নেল মেশিন ও ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের দৃঢ় বুনিয়াদি স্থাপনে দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প এবং খাদ্য পরীক্ষণের জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের রেফারেন্স ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হবে।
এসব কার্যসম্পাদনে আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ১৭ হাজার ১৪৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। যা চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে এক হাজার ১৭৮ কোটি ৯৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুক‚লে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৫ হাজার ৯৬৮ কোটি ৬২ লাখ ১৪ হাজার টাকা।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে এ বরাদ্দ (সংশোধিত) ছিল ১৪ হাজার ৩৪২ কোটি ৪৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ (সংশোধিত) ছিল ১১ হাজার ৯৭৯ কোটি ১৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে খাদ্য সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ বলেন, খাদ্যশস্যের সরকারি ক্রয় ও বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ খাদ্যমূল্যের স্থিতিশীলতা আনায়নসহ সার্বিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও নীতি-কৌশল প্রণয়ন করা হচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ। প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্ভাব্য পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বিবেচনায় রেখে দেশের সার্বিক খাদ্য ব্যবস্থাপনার নীতি-কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকরণসহ বেশকিছু কাজ খাদ্য মন্ত্রণালয় করে থাকে। এগুলো হচ্ছে-খাদ্যশস্যের আমদানি-রফতানি এবং খাদ্যশস্য (চাল-গম) সংগ্রহ, মজুত, বিতরণ ও সরবরাহ ঠিক রাখা। খাদ্যশস্যের সরকারি ক্রয় ও বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ, খাদ্যমূল্যের স্থিতিশীলতা আনয়ন এবং প্রাপ্যতা সহজলভ্যকরণ। খাদ্য খাতের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুত, সংরক্ষণ, খাদ্যের মান পরীক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণ; খাদ্য পরিকল্পনা, গবেষণা ও পরিধারণের আওতায় গৃহীত সব কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে খাদ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে চুক্তি সম্পাদন এবং যোগাযোগ স্থাপন করে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ