পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকের শিশুরাই একদিন সোনার বাংলা গড়বে। তারাই একদিন দেশের নেতৃত্ব দেবে। দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে শিশু-কিশোরদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শিশু-কিশোর সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশু আগামী দিনের কর্ণধার। আজকের শিশুদের মধ্যেই কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রী হবে, বড় বড় চাকুরি করবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে ভালোবেসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ে তুলবে। এই বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ একটি দেশ। আমরাই জাতির পিতার এই স্বপ্ন পূরণ করবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৪ বছরের সংগ্রাম এবং ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। দেশের মানুষ উন্নত জীবন পাবে, ক্ষুধা এবং দারিদ্র্য মুক্ত থাকবে এ লক্ষ্য নিয়েই দেশ স্বাধীন হয়েছিল। এটা ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন।
অভিভাবক, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, মাদরাসা শিক্ষক ও ধর্মীয় গুরুদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ ও মাদক সম্পর্কে আপনারা শিশুদের বোঝাবেন। আজকের শিশুরাই আগামী দিনে দেশকে এগিয়ে নেবে। তাদের এগিয়ে যেতে হবে। শিশুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা বাবা-মা ও শিক্ষকদের কথা শুনবে, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবে, শরীরের যত্ম নেবে। তোমাদেরকেই গঠন করতে হবে বলিষ্ঠ জাতি। আমরা ৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখছি সেই বাংলাদেশ তোমরাই পরিচালনা করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, যখনই জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে দেশকে উন্নয়নের পথে ধাবিত করা শুরু করেন দুর্ভাগ্যক্রমে তখনই ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের কালরাতে তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকান্ডের মধ্যদিয়ে বাংলদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয় উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, এই হত্যাকান্ডের মধ্যদিয়েই বাংলাদেশে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র এবং অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। মানুষের বেঁচে থাকার এবং প্রতিরাতে কারফিউ দিয়ে কথা বলার অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেয়া হয়।
তিনি বলেন, এরপর দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ আবার যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে ঠিক তখন থেকেই পুনরায় উন্নয়নের অভিযাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের সন্তানরা যাতে আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষায় দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে তার পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবো, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। আমরা ২০২০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত সময়কে মুজিব বর্ষ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। আমরা এই সময়টাকে এমনভাবে কাজে লাগাতে চাই যেন বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে ওঠে। এর আগে সকাল ৮টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে সমবেত কষ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্টেডিয়ামে উপস্থিত হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান তাকে অভিবাদন জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর প্যারেড কমান্ডার মৌসুমী আক্তার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সালাম জানান। বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে ৪৯তম স্বাধীনতা দিবস ও শিশু-কিশোর সমাবেশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কুচকাওয়াজের পর শিশু-কিশোর সমাবেশে এবারের থিম সং ‘নোঙর তোল তোল’ পরিবেশিত হয়। প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিশু-কিশোরদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ডিসপ্লে উপভোগ করেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী মূল মঞ্চ থেকে নেমে হেঁটে হেঁটে সমাবেশ পরিদর্শন করেন। সমাবেশ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি এবং বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্যবলী দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ঘুরে ঘুরে এসব দেখেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে দেশব্যাপী স্কুল পর্যায়ে অনুষ্ঠিত শুদ্ধ সুরে জাতীয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক এই তিন ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ৯০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। এ সময় মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪৯তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকেট, একটি উদ্বোধনী খাম এবং একটি ডাটা কার্ড আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করেছেন।
গতকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গণভবনে ১০ টাকা মূল্যমানের স্মারক ডাকটিকেট, দশ টাকা মূল্যমানের উদ্বোধনী খাম এবং পাঁচ টাকা মূল্যমানের ডাটা কার্ড আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করেন।
এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাক টিকেট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ডে স্বাক্ষর এবং একটি বিশেষ সিলমোহর ব্যবহার করেন। স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ডসমূহ গতকাল থেকেই ঢাকা জিপিও-এর ফিলাটেলিক ব্যুরোতে বিক্রি করা হচ্ছে।
পরবর্তীতে অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান ডাকঘরসহ দেশের সকল ডাকঘরে এসব টিকিট বিক্রি করা হবে। এছাড়া উদ্বোধনী খামে ব্যবহারের জন্য চারটি জিপিওতে বিশেষ সিলমোহরের ব্যবস্থা রয়েছে।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ জনগণের ক্রমবর্ধমান আর্থিক লেনদেনের চাহিদা মেটাতে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের অংশ হিসেবে বর্তমানে প্রচলিত ‘পোস্টাল ক্যাশ কার্ড’ এবং ‘ইএমটিএস’ সেবার নবরূপায়িত রূপ ’নগদ’ নামে একটি আর্থিক সেবা চালু করেছে।
ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিত জনসাধারণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি- এই মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে ২০১০ সালের ২৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডাক বিভাগের ‘পোস্টাল ক্যাশ কার্ড’ এবং ‘ইএমটিএস’ সেবাটি উদ্বোধন করেছিলেন। অনুষ্ঠানে ‘নগদ’ সেবাটিরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।